আওয়ার ইসলাম: যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় দুই স্কুল ছাত্রকে ছুরিকাঘাত করে খুনের ঘটনায় ২৫ জনেরও বেশি যুবক অংশ নিয়েছিলো বলে এলাকাবাসী সূত্রে এমন তথ্যই জানতে পেরেছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা ।
তার মধ্যে এ পর্যন্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেও এমন তথ্য পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
শুক্রবার সকালে এ ঘটনায় শুভ, শামীম, সুজনসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে চারজনকে যাত্রাবাড়ী ও একজনকে ঝিনাইদাহ থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত সবার বয়স ১৬ থেকে ২২ বছরের মধ্যে।
প্রসঙ্গ, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি, সন্ধ্যার দিকে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় রাকিবুল ও তার সহপাঠী ইমরান হোসেন মুন্না (১৫) ছুরিকাঘাতে আহত হয়। এর পরদিন ১ মার্চ ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাকিবুল মারা যান। তার বন্ধু ইমরান এখনো ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তারা দুজনই যাত্রাবাড়ী মাতুয়াইল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র। রাকিবুল যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলের পশ্চিমপাড়ার সুলতানের ছেলে। অন্যদিকে মুন্না একই এলাকার মির্জাবাড়ির আব্দুল মান্নানের ছেলে। এ ঘটনায় গতকাল বৃহস্পতিবার রাকিবুলের মা ময়না বেগম বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে নিহত রাকিবুলের মা ময়না বেগম বলেন, আমার ছেলের সাথে কারো কোনো ধরনের শত্রুতা ছিল না। সে কারও সঙ্গে কোনোদিন মারামারিও করেনি। আমার চাকরি নিয়ে ব্যস্ত থাকায় কিছু বলতে পারবো না।
এ ঘটনায় তারা তার কোনো বন্ধুকে সন্দেহ করেন না। আর যারা এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদেরও তারা চিনেন না বা তাদের কোনোদিন নামও শুনেননি বলে জানান তিনি।
এ খুনে অংশ নিয়েছিল প্রায় ২৫ জনের বেশি যুবক। এদের মধ্যে একজন পরদিন ঢাকা ছেড়ে ঝিনাইদাহ চলে যায়। চারজনকে আটকের পর তাদের তথ্য মতে, শুক্রবার ঝিনাইদাহের শৈলকুপা থেকে শামীমকে আটক করা হয় বলে জানায় সূত্রটি। বাকিদের নাম ও তথ্য হাতে পায়নি পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই কবির হোসেন বলেন, আমরা এই ঘটনা প্রেমঘটিত কারণেই ঘটেছে বলে মনে করছি। তবে এখন পর্যন্ত তেমন ভাল তথ্য পাওয়া যায়নি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ হত্যা অনেক যুবক অংশ নিয়েছিল। বাকিদের ধরার চেষ্টা চলছে।
ওয়ারী বিভাগের (ডেমরা জোন) সিনিয়র এসি ইফতেখার ইসলাম বলেন, এ বিষয়টি নিয়ে এখন কোনো কিছু বলা যাবে না। আগামীকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে। এছাড়াও বাকি আসামিদের ধরতে আমরা রাতে চেষ্টা চালাবো। প্রাথমিকভাবে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা প্রকাশ করলে বাকিদের ধরা খুব কঠিন হবে।
যাত্রাবাড়ী থানার ওসি আনিসুর রহমান জানান, এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ঘটনার দিন আহত মুন্না জানিয়েছিল, ওই এলাকায় তারা বেড়াতে গেলে ১০-১২ জন যুবক তাদের ওপর চড়াও হয়। এসময় একজন তাদের ছুরিকাঘাত করে এবং রাকিবুলের কাছে থাকা দুই হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে চলে যায়। তবে তাদের কাউকে তিনি চিনতে পারেননি।
এসএস/