আওয়ার ইসলাম
কৃষককে ‘ডিজিটাল সেবায়’ নিয়ে আসতে এবার নতুন একটি প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কৃষি নিয়ে সমস্যায় পরামর্শের জন্য কৃষককে আর কৃষি কর্মকর্তার দুয়ারে ছুটতে হবে না। একটি নম্বরে ডায়াল করেই তার সমস্যার সমাধান জানতে পারবে তারা।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেবাটির উদ্বোধন করেছেন, যার নাম রাখা হয়েছে ‘কৃষকবান্ধব ফোন সেবা।’
গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে করা একই অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করা হয় কৃষকদের জন্য তথ্য সেবা কৃষি বাতায়ন এবং স্মার্টফোন অ্যাপ সাথি।
সেবাটি তৈরিতে কাজ করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এটু আই এবং কৃষি সম্পৃসারণ অধিদপ্তর।
এতদিন দেশের ২০টি উপজেলায় পরীক্ষামূলকভাবে চলছিল কৃষি বাতায়ন। আজকের এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সারা দেশের কৃষকই এই সুবিধা পাবে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, ৩৩৩১ নম্বরে ফোন করে কৃষক তার সমস্যার সমাধান সম্পর্কে জানতে পারবে। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, কৃষি কর্মকর্তা সে ফোনটি ধরতে না পারলে সেটি চলে যাবে তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে। আর সেটি সংরক্ষিত থাকবে কৃষি বাতায়নে।
সাথি অ্যাপে শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীকে স্মার্টফোন ব্যবহারের উপযোগী করে গড়ে তোলার চেষ্টা হয়েছে। এই ফোনে ছবি ও শব্দ শৈলীর ব্যবহারের মাধ্যমে পরিচিত নম্বরকে সংরক্ষণ করা যাবে। এখানে বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে স্মার্টফোনকে সরলভাবে ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। ছবি ও শব্দের ব্যবহারের মাধ্যমে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করার সুযোগ রাখা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রায় তিন কোটি কৃষককে ১৫ হাজার কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে সেবা দেয়া ছিল কঠিন। এই ফোন ও সেবা দুই পক্ষে সম্পর্ক স্থাপনে হাতিয়ার হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল করেছি, এর সুফল শুধু শিক্ষিত জনগোষ্ঠী পাবে, তা নয়, বা সম্পদশালীরা পাবে তা নয়. এই সেবাটা আমরা তৃণমূলের মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডিজিটাল পদ্ধতিতে কৃষকরা যাদে উপকৃত হতে পারে তার যেন সুযোগ সুবিধা পায় এবং উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কী কী করণীয়, সে পরামর্শ যেন তারা পেতে পারে, সমস্যা যদি দেখা দেয়, তার সমাধানের উপায় কী, সেটা যেন জানতে পারে, সে জন্যই এই ব্যবস্থাটা নেয়া হয়েছে।’
কৃষকবান্ধব ফোনে পদ্ধতিগত কিছু পরিবর্তন আনারও পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘যে প্রশ্নগুলো আসবে, সেগুলো সংগ্রহ করতে হবে। কিছু প্রশ্ন আছে যেগুলো প্রতিনিয়ত আসতে থাকবে। তার প্রশ্নটা যদি রেকর্ড করে রাখা যায়, তাহলে অফিসারকে বারবার উত্তর বলতে হবে না, তাহলে রেকর্ড থেকেই কৃষকরা সঙ্গে সঙ্গে তথ্যটা পেয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি বাতায়ন থেকে কেবল কৃষির তথ্য না, বাজারদরের তথ্যও জানতে পারবে কৃষক। এখন আর কেউ কৃষকদের ঠকাতে পারবে না।
শিক্ষা গ্রহণ করে কৃষি থেকে দূরে চলে যাওয়ার মনোভাব যেন না থাকে, সেই অনুরোধও করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমি মনে করি এটা পবিত্র কাজ। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা দেয়া, পেটের ক্ষুধা মেটানোর জন্য খাদ্য উৎপাদন করা-এর চেয়ে মহৎ কাজ আর কিছু হতে পারে না।’
হাওর এলাকায় কৃষির পাশাপাশি হাঁস চাষ এবং ভাসমান সবজি চাষের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, সরকার অন্যান্য খাতের মতো কৃষিতেও ডিজিটালাইজেশনের সুবিধা পৌঁছে দিতে কাজ করছে। এর অংশ হিসেবেই চালু করা হয়েছে এই তিনটি সেবা।