আওয়ার ইসলাম
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ব্যবসায়ীদেরকে দুর্নীতির তথ্য দেওয়ার আহবান জানিয়ে বলেছেন, ‘আপনাদের কাছে কেউ ঘুষ চাইলে আমাদেরকে জানাবেন। সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের তথ্য থাকলে জানাবেন।
এতে আপনাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে না। তথ্য জানানোর পর আপনারা যেন স্বাভাবিকভাবে ব্যবসা করতে পারেন-সেই নিশ্চিয়তা দিচ্ছি।’
বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের জন্য দুর্নীতিমুক্ত সরকারি সেবা’ বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও দুদক যৌথভাবে এই সভার আয়োজন করে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী আমিনুল ইসলাম,বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (ডিসিসিআই) পরিচালক সেলিম আকতার খান, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র (বিএমসিসিআই) সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের (এমসিসিআই) মহাসচিব ফারুক আহমেদ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ব্যবসায়ীদের মত আমরাও চাই-ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করে ব্যবসায় পরিবেশ নির্বিঘœ করতে। এ জন্য ব্যবসায়ীদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। কেউ আপনাদের কাছে ঘুষ চাইলে-সেসব তথ্য সুনির্দিষ্টভাবে জানালে আমাদের কাজ সহজ হয়।
অনুষ্ঠানে বিএমসিসিআই সভাপতি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন অভিযোগ করেন ঘুষ-দুর্নীতির তথ্য জানালে সেই ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হন। তিনি আরো বাঁধার সম্মুখীন হন। জবাবে দুদক চেয়ারম্যান তাকে অভয় দিয়ে বলেন, ‘আপনারা যদি ভয় পান যে, এভাবে যদি ঘুষখোরকে ধরিয়ে দেই,তাহলে আমার কাজ চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু আমি বলছি,আপনার কাজ চিরদিনের জন্য স্বাভাবিক হয়ে যাবে।আপনাদের নিশ্চয়তা দিতে চাই,আপনারা স্বচ্ছ মনে ব্যবসা করবেন।
তিনি ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা একমত নই যে ব্যবসায়ীরা দুর্নীতিগ্রস্ত। ব্যাক টু ব্যাক এলসি, ওভার ইন ভয়েস ও আন্ডার ইন ভয়েসের মাধ্যমে যে দুর্নীতি হয় সে বিষয়ে আমাদের উদ্বেগ। আমরা চাই আপনারা স্বচ্ছভাবে ব্যবসা করেন। ঋণ নেবেন সেটা আমাদের বিষয় নয়। আমরাও চাই ব্যবসার প্রয়োজনে ঋণ নেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে অনেক সময় ঋণ ক্ষেত্রে ভুয়া কাগজপত্র দেওয়া হয়। তাই আমরা বলতে চাই, যথাযথ কাগজপত্র দিয়ে ঋণ নেবেন। আপনারা যখন গ্যারান্টি দেবেন তা যেন সত্যিকারের গ্যারান্টি হয়।’
অনুষ্ঠানে কাজী আমিনুল ইসলাম বলেন, বিশ্বব্যাপী দুর্নীতি আছে। বিনিয়োগের জন্য দুর্নীতিকে আমরা সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে চাই। এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে অনেকদূর যেতে হবে। কারণ প্রতিযোগিতায় আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। তবে দুর্নীতি বিরুদ্ধে অভিষ্ট লক্ষ্যে বাংলাদেশ দ্রুত পৌঁছাতে পারবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদী বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, আমরা এমনভাবে ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করতে চাই-যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি হয়। নৈতিক এবং স্বচ্ছভাবে নিয়মনীতি মেনে যে কেউ ব্যবসা করতে পারেন।কেউ যেন বাঁধাগ্রস্ত না হন।
এফবিসিসিআই পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সূত্র: বাসস/এটি