আওয়ার ইসলাম: বাগেরহাটে এক কেজি মোটা চালের দামে এক মণ পাকা টমেটো পাওয়া যাচ্ছে। প্রকৃত দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ক্ষেত থেকে টমেটো তুলছেন না। এ কারণে হাজার হাজার মণ টমেটো ক্ষেতেই নষ্ট হচ্ছে।
বাগেরহাটের প্রায় সবক’টি উপজেলায় এমন চিত্র দেখা গেলেও সদর, ফকিরহাট, চিতলমারী, মোল্লাহাট ও কচুয়া উপজেলায় ফলন বেশি হওয়ায় এখানকার চাষিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। কৃষকদের দাবি, কৃষিপণ্য সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় তারা এ ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়ছেন তারা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি টমেটো চাষ এবং বাম্পার ফলন হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর ও চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাগেরহাটে মৎস্যঘেরের বেড়িবাঁধে শীতকালীন সবজির পাশাপাশি লাভলি, হাইটপ ও বিজলি নামে তিন জাতের টমেটো চাষ করেছেন কৃষকরা। এসব টমেটো স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে। প্রথম দিকে টমেটোর বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটলেও মৌসুমের শেষের দিকে এসে চাষিরা হতাশ।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চিতলমারী, কচুয়া ও মোল্লাহাট উপজেলার মৎস্যঘেরের বেড়িবাঁধের ওপর এবার ১২০০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ করা হয়েছে। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৫৪ হেক্টর জমি।
কচুয়া উপজেলার গজালিয়া গ্রামের চাষি আ. রহমান পাইক জানান, স্থানীয় বাজারে এক মণ টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। অথচ এক থেকে দুই মণ টমেটো ক্ষেত থেকে বাজারে পর্যন্ত নিতে সব মিলেয়ে খরচ হয় ৭০-৮০ টাকা।
কচুয়ার গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য উজ্জল শিকদার জানান, আমাদের এলাকায় হাজার হাজার মণ টমেটো ক্ষেতেই পচে যাচ্ছে। দাম কম হওয়ার কারণে এ অবস্থা হয়েছে।
বাগেরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আফতাব উদ্দিন জানান, কৃষি বিভাগের আধুনিক প্রযুক্তিতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও কঠোর নজরদারিতে এ বছর টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। তবে মৌসুমের শুরুর দিকে কৃষকরা টমেটোর ভালো দাম পেলেও এখন বাজারে কম দামে বিক্রি হচ্ছে।
বাগেরহাটের জেলা বাজার কর্মকর্তা মো. সুজাত হোসেন খান বলেন, ‘চাষিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সঙ্গে সঙ্গে উৎপাদনের গতি অব্যাহত রাখা আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এর সঙ্গে ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ করা আরও জটিল ও গুরুদায়িত্ব। এই ত্রিবিধ কার্যক্রমের সমন্বয় করাটা অত্যন্ত জটিল। চাষিদের অপরিকল্পিত উৎপাদন ব্যবস্থার কারণে এ অবস্থা হয়েছে।
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন/ টিএ