আওয়ার ইসলাম
শিক্ষককে চড় মেরেই শান্ত হয়নি ছাত্রনেতা। বললেন, ‘হাতে মদের বোতল ধরিয়ে ছবি তুলে মিডিয়ায় পাঠিয়ে দেব’। কলকাতার রাজাবাজার সায়েন্স কলেজের কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ভাস্কর দাসকে এভাবেই নির্যাতন করেন ওই কলেজের ক্ষমতাসীন দলের এক ছাত্রনেতা। খবর এবেলাডটইনের।
খবরে বলা হয়েছে, ওই ছাত্রনেতা হাতে ‘মদের বোতল’ ধরিয়ে মিডিয়ায় ছবি ছাপিয়ে দেওয়া এবং ‘ড্রাগ কেসে’ ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বুধবার ‘এবেলা’কে এসব কথা জানান ওই শিক্ষক। গত মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ফেল করা কয়েকজন ছাত্রকে পাস করিয়ে দেয়ার দাবিতে ক্যাম্পাসে ওই অধ্যাপকের কক্ষে চড়াও হয়েছিলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) নেতা গৌরব দত্ত মুস্তাফি ও তার এক সতীর্থ।
ভাস্করের কথায়, ‘‘প্রথমেই আমাকে শাসাতে শুরু করে। বলে, ‘আপনাকে দেখে নেব’। তারপর টেবিল চাপড়ে, কম্পিউটারের কিবোর্ড চাপড়ে তা নষ্ট করে। তারপর সপাটে আমার গালে এক চড় মারে।’’ এখানেই শেষ নয়। তারপর অকথ্য গালিগালাজ করতে করতে বলে, ‘তুমি বাগড়া দিচ্ছ’। বলে আবার চড় মারে।
ভাস্কর বলেন, আমাকে শাসাতে থাকে, বলে ‘তোমাকে মদ কেসে ফাঁসিয়ে দেব’। কিছু ছেলেকে মদের বোতল নিয়ে আসার জন্য বলে গৌরব দত্ত মুস্তাফি। বলে, ‘হাতে মদের বোতল ধরিয়ে ছবি তুলে মিডিয়ায় পাঠিয়ে দেব’। ড্রাগ কেসেও ফাঁসিয়ে দেবে বলে। আমি চুপচাপ বসেছিলাম।
ভাস্করের দাবি, তিনি যখন নিগৃহীত হচ্ছেন, তখন তার কক্ষে গিয়েছিলেন আরেকজন অধ্যাপক। ওই অধ্যাপকের সামনেও তার গালে চড় মারা হয়। ভাস্করের কথায়, উনি (ওই অধ্যাপক) আমাকে বললেন, ছেড়ে দাও ছেড়ে দাও। আমি বুঝতে পারছি, উনি অসহায়।
তবে অভিযুক্ত গৌরবের দাবি, ভাস্করের সঙ্গে তার উত্তপ্ত কথাবার্তা হলেও চড় মারা বা গালিগালাজ দেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি বলেন, স্যারের সঙ্গে কথা বলার সময় আমার একটু মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। তার জন্য আমি অনুতপ্ত। আমি ক্ষমা প্রার্থনাও করেছি। কিন্তু বাকি অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
ভাস্কর জানিয়েছেন, তিনি পড়ুয়াদের ক্ষতি করছেন বলে অভিযোগ করছেন ওই ছাত্রনেতা। তিনি বলেন, ওই ঘটনা যখন ঘটছে, তখন কেমিক্যাল টেকনোলজির কয়েকজন ফ্যাকাল্টি আসেন। তারা জানার চেষ্টা করেন কী হয়েছে। তাদের সামনেও আমার গালে সপাটে চড় মারে। আমাকে জোর করে লিখে দিতে বলে, ভবিষ্যতে ছেলেদের কোনও ক্ষতি হবে না এবং ভবিষ্যতে ছেলেদের কোনও হুমকি দেব না। আমি বলি, হুমকি দেয়ার কথা তো আমি বলিনি, কেন ওই প্রশ্ন উঠছে। আমি লিখতে চাইনি। আমাকে দিয়ে জোর করে লিখিয়ে নিতে চায়।
সূত্র: এবেলা ডটনেট/এটি