এম ওমর ফারুক আজাদ: ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের ‘নগর সম্মেলন ২০১৮’ নগর সভাপতি মু নিজাম উদ্দীন এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল বশর আজীজির সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে গতকাল বিকেলে অনুষ্টিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম ও প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রিয় কমিটির সহ সভাপতি শেখ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে শাসন ক্ষমতায় জনমতের প্রতিফলন হওয়া দরকার। বাংলাদেশের ইতিহাস দুর্ভাগ্যের ইতিহাস।
ক্ষমতাসীনরা বারবারই ক্ষমতার মসনদ আকড়ে রাখতে জনমত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। জনগণের ভোটার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকারও এই কলঙ্কময় ধারা অব্যাহত রেখেছে।
৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনগুলোতেও তার পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় নিশ্চিত পরাজয় জেনেই নানা নাটকীয়তার মাধ্যমে গত ১৭ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচন বানচাল করেছে। সরকারের এই আচরণে দেশের সাধারণ মানুষ আগামীর জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংকিত।
তিনি আরো বলেন, বেকারত্ব সমস্যা বাংলাদেশের জন্য অভিশাপে পরিণত হয়েছে। লক্ষ লক্ষ বেকার চাকরির জন্য হন্য হয়ে ঘুরছে। সরকারের দায়িত্ব ছিল তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা কিন্তু তা না করে সরকারি চাকুরিগুলোতে দলীয় ক্যাডার বাহিনী নিয়োগ দিতে প্রশ্নফাঁসসহ নানা রকম জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে শিক্ষিত যুবকদের স্বপ্ন ভঙ্গ করছে।
প্রধান বক্তা ছাত্রনেতা শেখ মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে সুষ্টু রাজনীতির পরিবর্তে এখন মাদকের রাজনীতি শুরু করেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের লিস্টে ৩৮জন ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাকর্মীর নাম তালিকাভুক্ত আছে তার মধ্যে ২০জন ছাত্রলীগের। তাদের মধ্যে ১০জন কেন্দ্রীয় কমিটির। এর থেকে বুঝা যায় তারা ছাত্রদের উজ্বল ভবিষ্যৎকে কোন ভয়ঙ্কর গর্তে ঠেলে দিচ্ছে।
ছাত্রদের নৈতিক অবক্ষয় রোধে ও চারিত্রিক উন্নতির জন্য ইশা ছাত্র আন্দোলনের বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, রাজনীতি এখন দুবৃত্তদের পেশায় পরিণত হয়েছে। এখন যারা রাজনীতি করছে তারা যুগের ঘুর্ণিপাকে ভবিষ্যতে থাকবে না, দেশ ও জাতির নতুন নেতৃত্বের ভার আজকের ছাত্র জনতাকেই কাঁধে নিতে হবে।
আর এমন গুরুভার যারা কাঁধে নেবে তাদের কখনো কোন মাদক ব্যবসায় জড়িত ছাত্র সংগঠন থেকে আশা করা যায় না। মাদকের সাথে জড়িত ছাত্র নেতৃত্ব আগামীর কর্ণধার হতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তাই নীতি-নৈতকতা ও সুখী সমৃদ্ধি দেশ গড়ার জন্য ইশা ছাত্র আন্দোলনের প্রতিটি কর্মীকে সকল ক্যাম্পাসে আদর্শ ও ইসলামী ছাত্র রাজনীতির দাওয়াত পৌছে দিতে হবে। আপনারা যত অবহেলা করবেন তাগুতি ছাত্র সংগঠনগুলো ছাত্রদের চারিত্রিক অবনতি তত দ্রুত করার সুযোগ নেবে।
শেখ সাইফুল ইসলাম বলেন, বলেন, সম্প্রতি সময় প্রশ্নফাঁস অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করছে। এভাবে একের পর এক প্রশ্নফাঁস হলে জাতি মেধাশূন্য হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি, হাইকোর্টের নির্দেশনার পরও ডাকসুসহ দেশের ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলি বন্ধ রাখা হয়েছে। মেধাবী নেতৃত্ব সৃষ্টি করার জন্য অনতিবিলম্বে ডাকসুসহ ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেয়ারও দাবি জানান তিনি।
সম্মেলন শেষে কেন্দ্রিয় সহ সভাপতি ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর-এর চলমান কমিটি বিলুপ্ত করে ২০১৮ সেশনের জন্য নতুন কমিটি ঘোষণা করেন।
[caption id="" align="alignnone" width="720"] নতুন কমিটির দায়িত্বশীলদের শপথ পড়াচ্ছেন শেখ সাইফুল ইসলাম[/caption]
নবগঠিত কমিটির সভাপতি মুহা. নুরুল বশর আজিজি, সহ-সভাপতি মুহা. রিদওয়ানুল হক শামসী এবং সাধারন সম্পাদক মুহা. শাহীন হাওলাদার-এর নাম ঘোষণা করা হয়।
নগর সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের সম্মানিত সভাপতি আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম। ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি ওয়ায়েজ হোসেন ভূঁইয়া।
এছাড়াও, মাদরাসা দারুল মারিফ এর সহকারি পরিচালক ড. জসীম উদ্দীন নদভী ও ড. বেলাল নূর আজিজি, ইসলামী যুব আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি মুজাহিদ সগীর আহমদ চৌধুরীসহ নগর ও থানা নেতৃবৃন্দ।
এসএস/