আওয়ার ইসলাম, ডেস্ক: আগামীকাল বৃহস্পতিবার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া ্রফানেজ ট্রাস্ট দূর্নীতি মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা।
বিশেষ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মরত সব সংস্থার সদস্যদের ছুটি আজ থেকে (বুধবার) বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত তা বলবৎ থাকবে। রাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে
ওই গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রের দাবি, রায় পরবর্তী সহিংসতা হতে পারে এমনটি বিবেচনায় রেখে সম্ভাব্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যেসব জায়গায় সহিংসতা হতে পারে সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি কারা এগুলো ঘটাতে পারে তাদেরও একটি সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। ওই তালিকা আইন প্রয়োগকারী প্রতিটি সংস্থার কাছে পাঠানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, নাশকতা হতে পারে এমন সম্ভাব্য স্পটগুলোতে আগে থেকেই পোশাকে ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। তারা গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে
বিগত কয়েকদিনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য সিনিয়র নেতাকর্মীদের বক্তব্যে রায়কে ঘিরে বিএনপির কোনও ধরনের সহিংস কর্মসূচির আভাস পাওয়া যায়নি। তবু রায়ের পর তাৎক্ষণিক যেকো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় এই তিনদিনকে বিশেষ ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে, বলে জানায় গোয়েন্দা সূত্রটি। এ কারণেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সবগুলো রাষ্ট্র্রীয় সংস্থাকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রাখা হযেছে। রাজধানী ঘিরে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
এরইমধ্যে মঙ্গলবার রাত থেকে রাজধানীর প্রতিটি প্রবেশমুখে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। যানবাহনে চালানো হচ্ছে তল্লাশি। মেট্রোপলিটন এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। সেখানেও রয়েছে কড়াকড়ি। নগরীতে বাড়তি নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
এছাড়া চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি টহলও জোরদার করেছে র্যাব। সারা শহরে সার্বক্ষণিক টহলের ব্যবস্থা করেছে সংস্থাটি। সচিবালয়ের চারপাশের পর্যবেক্ষণ টাওয়ারগুলোকেও আধুনিক করা হয়েছে। গত ২/৩ দিন ধরে সেখানে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।
এদিকে, ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়ের দিন ঢাকার রাস্তায় দাঁড়িয়ে বা বসে কোনও ধরনের মিছিল করা যাবে না বলে ৬ ফেব্রয়ারি ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া। রাজধানীতে সব ধরনের লাঠি, ছুরি, চাকু বা ধারালো অস্ত্র, বিস্ফোরক দ্রব্য ও দাহ্য পদার্থ বহন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
ডিএমপি কমিশনারের দেওয়া ওই ঘোষণায় বলা হয়, ‘বিচারাধীন একটি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরীতে কোনও ব্যক্তি বা গোষ্ঠী অরাজকতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির মাধ্যমে জন নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপপ্রয়াস চালাতে পারে মর্মে বিভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য, ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও সোশ্যাল মিডিয়ার সূত্রে জানা যায়। তাই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স (অর্ডিন্যান্স নং- III/৭৬) এর ২৮ ও ২৯ ধারায় অর্পিত ক্ষমতাবলে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ (বৃহস্পতিবার) সকাল চারটা (ভোর রাত) থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।’
পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেকোনও মূল্যে নিয়ন্ত্রণে রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। মঙ্গলবার (৬ জানুয়ারি) বিকাল ৪টায় পুলিশ সদর দফতর থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের সব রেঞ্জ ডিআইজি ও কমিশনারদের এ নির্দেশ দেন তিনি।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সহেলী ফেরদৌস বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য রেঞ্জ ডিআইজি ও কমিশনারদের সঙ্গে আইজিপির একটি ভিডিও কনফারেন্স হয়েছে। সারাদেশে পুলিশের কী প্রস্তুতি রয়েছে, আরও কী পদক্ষেপ নিতে হবে, সেসব বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এসএস/