আওয়ার ইসলাম
শান্তিপূর্ণভাবে যেকোনো বিপদ মোকাবিলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপির কোনো ভয় নেই। বিএনপির সঙ্গে প্রশাসন আছে, পুলিশ আছে, সশস্ত্র বাহিনী আছে। এ দেশের জনগণ আছে। দেশের বাইরে যারা আছেন, তারা আছেন। কাজেই বিএনপির কোনো ভয় নেই, ভয়টা আওয়ামী লীগের। তিনি বলেন, আসুন আমরা সবাই মিলে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জনগণের জান-মাল রক্ষায় জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলি। দেশ রক্ষায়, গুম খুন নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলি।
আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবি করে তিনি ৬ শর্ত জুড়ে দেন। তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে হবে, জনগণ যাতে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে সেজন্যে সেনা মোতায়েন করতে হবে, ইভিএম-ডিভিএমের ব্যবহার চলবে না। : গতকাল শনিবার বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব আহবান জানান। রাজধানীর খিলক্ষেতে পাঁচতারা হোটেল ‘লা মেরিডিয়ান’-এর গ্র্যান্ড বলরুমে সকাল ১১টায় দলের জাতীয় নির্বাহী কমিটির এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নানা গ্রেফতার ও হয়রানির মধ্যে সকাল থেকে নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠান স্থলে আসতে শুরু করেন। নির্বাহী কমিটির ৫০২ সদস্য ছাড়াও, স্থায়ী কমিটির সদস্য, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, ৭৮ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা সভায় যোগ দেন। প্রথম পর্ব ছিলো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। দ্বিতীয় পর্ব কর্ম অধিবেশন।
পবিত্র কোরআন তেলোয়াতের মাধ্যমে উদ্বোধনী পর্বে শুরুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন। এর পর ১১টা ৩৮ মিনিটে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ধারণকৃত একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভায় মরহুম নেতাদের পাশাপাশি শিক্ষাবিদ-শিল্পী-সাহিত্যিকসহ বিশিষ্টজনদের স্মরণ করে দেয়া শোক প্রস্তাবটি গৃহীত হয়। এরপর দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রিপোর্ট পেশ করেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সংখ্যা ৫০২ জন। বৈঠকে শুরু হলে উপস্থিত সদস্য সংখ্যা হয়েছে পাঁচ শতাধিক। : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অনুষ্ঠানস্থলে আসার চেষ্টা করে ব্যাপক সাদা পোশাকে পুলিশের উপস্থিতির কারণে ফিরে যান বলে দলের কয়েকজন নেতা জানান। নির্বাহী কমিটির সদস্যদের বাইরে এই বৈঠকে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের পর ৫০২ সদস্যের জাতীয় নির্বাহী কমিটি ঘোষণা করেন বেগম খালেদা জিয়া।
৬ষ্ঠ কাউন্সেলের পর এটাই বিএনপির নির্বাহী কমিটির প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হলো। : নির্বাহী কমিটির সভার মূল মঞ্চে সভাপতি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাথে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বসেন। জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা পরিচালনা করেন দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। : সোয়া এক ঘন্টার বক্তৃতায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দেশের বর্তমান পরিস্থিতি, দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, মামলা দ্রব্যমূল, শিক্ষা ব্যবস্থা, প্রশাসন দলীয়করণ, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কথা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরেন। : বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আমি শুধু বলতে চাই, আমি যেখানেই থাকি না কেন আমি আপনাদের সঙ্গে আছি, আমি আপনাদের সাথে থাকবো ইনশাল্লাহ। আসুন- বিপদ আসলে সবাই একসাথে মোকাবিলা করবো, সুদিন আসলেও আমরা সবাই এক সাথে দেশের জন্য কাজ করবো। সকলকে আমাদের সাহস সঞ্চয় করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে, প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
/এটি