রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের বিকল্প নেই: তারেক রহমান জমিয়তের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হলেন শায়খ মাওলানা আবদুর রহীম ইসলামাবাদী কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ইসলামী মহাসম্মেলন আগামীকাল মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরীর ইন্তেকালে চরমোনাই পীরের শোক প্রকাশ জমিয়ত সভাপতি মাওলানা মনসুরুল হাসান রায়পুরী রহ.-এর বর্ণাঢ্য জীবন কওমি সনদকে কার্যকরী করতে ছাত্রদল ভূমিকা রাখবে: নাছির বড় ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্টে যাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা আইফোনে ‘টাইপ টু সিরি’ ফিচার যেভাবে ব্যবহার করবেন  স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা জাতীয়করণের দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক: ধর্ম উপদেষ্টা আল্লাহকে পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ অপরিহার্য: কবি রুহুল আমিন খান

‘রিসালায়ে নুরের শিক্ষা সমাজে ছড়িয়ে দেয়া গেলে হতাশা ও অশান্তি দূর হবে’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ ও তুরস্কের ইস্তাম্বুল সায়েন্স এন্ড কালচার ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে আগামী সোম ও মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১ম আন্তর্জাতিক নুরসি সম্মেলন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন ও আরসি মজুমদার অডিটোরিয়ামে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

‘লিবিং ইন পিচ এন্ড হারমোনি : দ্য রিসালায়ে নুর পার্সপেক্টিভ’ শীর্ষক সম্মেলনের আহ্বায়ক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগের প্রধান ড. মোহাম্মদ ইউসুফ।

ঢাকায় এ ধরনের উদ্যোগ কেন এবং কী ম্যাসেজ দিতে চায় এ সম্মেলন সেসব বিষয়ে ড. মোহাম্মদ ইউসুফের সঙ্গে কথা বলেছেন আওয়ার ইসলামের ঢাবি প্রতিনিধি ওয়ালি খান রাজু 

আওয়ার ইসলাম : আরবি বিভাগের উদ্যোগে প্রথম বারের মতো দেশে আধুনিক তুরস্কের রূপকার বদিউজ্জামান সাঈদ নুরসি স্মরণে আন্তর্জাতিক সম্মেলন হচ্ছে, এখানে মূল আলোচ্য বিষয় কী?

ড.মোহাম্মাদ ইউসুফ: আপনি জেনে থাকবেন বদিউজ্জামান সাঈদ নুরসি ছিলেন তুরস্কের
এক মহানায়ক, তিনি একাধারে ছিলেন মুফাসসির, বুদ্ধিজীবী ও সুফী-সাধক। যিনি ছিলেন একজন অরাজনৈতিক ইসলামি ব্যক্তিত্ব,তার প্রণীত রিসালায়ে নুর ছিল মুসলিম জাহানসহ সমগ্র মানবজাতির জন্য অমূল্য এক সম্পদ।

তিনি তার রিসালায়ে নুরে মানুষের আধ্যাত্মিক, নৈতিক উন্নয়নের প্রতি জোর দিয়েছেন। মানুষের ঈমানের তাহকিকি উন্নয়নের প্রতি তিনি জোর দিয়েছেন।

তার যেই থিম তুরস্ক থেকে সারা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়েছে তা যাতে বাংলাদেশেও প্রসারিত হয়,
রিসালায়ে নুরের শিক্ষা যাতে এদেশেও ছড়িয়ে পড়ে সেটিই আমাদের এ সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয়।

আওয়ার ইসলাম: এ সম্মেলনে কয়টি দেশ এখানে অংশ নেবে এবং কোন ধরনের ব্যক্তিরা অংশ নেবেন?

ড. মোহাম্মাদ ইউসুফ : বাংলাদেশ, সৌদি আরব, ভারত, ইথিওপিয়া, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এ সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন।

নুরসি সম্মেলন এর আগে বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও অনুষ্ঠিত হয়েছে, এর ধারাবাহিকতায় এ বছর বাংলাদেশেও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, মূলত নুরসি চিন্তক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং ইসলামি স্কলাররা এ সম্মেলনে অংশ নিবেন।

আওয়ার ইসলাম : আলাদাভাবে আরবি বিভাগ এ সম্মেলনের ব্যবস্থাপনা করতে যাচ্ছে, এর কারণ কী? ঢাবির অন্যন্য বিভাগের কোন প্রকার সহায়তা আছে কী?

ড. মোহাম্মাদ ইউসুফ : না, এটা আরবি বিভাগের একান্তই নিজস্ব কার্যক্রম। আমরা তুরস্কের ইস্তাম্বুল ফাউন্ডেশনের কাছে অনলাইনে আমি আরবি বিভাগের হয়ে এ সম্মেলনের ব্যবস্থাপনা করতে আবেদন করি, ইস্তাম্বুল ফাউন্ডেশন আমাদের এ আবেদনে সাড়া দেয়, আরবি বিভাগ এ ধরনের শিক্ষা ও গবেষণামূলক কার্যক্রমকে বরাবরই স্বাগত জানায়।

আওয়ার ইসলাম: তুরস্কের অন্যতম মুসলিম বুদ্ধিজীবী বদিউজ্জামান সাইদ নুরসির প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হবে সম্মেলনে, তো বিশেষভাবে সাইদ নুরসিকে স্মরণ করার কী কারণ?

ড.মোহাম্মাদ ইউসুফ : এ সম্মেলনের শিরোনাম হল রিসালায়ে নুরের আলোকে শান্তি ও সম্প্রীতি সম্মেলন, আর রিসালায়ে নুরের প্রণেতা হলেন সাঈদ নুরসি, যিনি তার তাফসিরের মাধ্যমে মানুষের যেই আধ্যাত্মিক, নৈতিক উন্নয়নের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছেন আমরা মনে করি বাংলাদেশেও উনার এই বার্তার প্রচার ও প্রসারের প্রয়োজন, আমাদের তরুণ প্রজন্মের কাছে এ বার্তা ছড়িয়ে দেয়ার প্রয়াসেই এই সম্মেলন।

আর তাই সাইদ নুরসিকে স্মরণ করা হচ্ছে, তবে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তির কর্মই এখানে মুখ্য।

আওয়ার ইসলাম:  এ সম্মেলন থেকে দেশ ও সমাজকে কোন ধরনের ম্যাসেজ দেয়া হবে?

ড. মোহাম্মাদ ইউসুফ : প্রথমেই বলতে চাই সাইদ নুরসি ছিলেন অরাজনৈতিক, আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তার অরাজনৈতিক আর আধ্যাত্মিক শিক্ষার ম্যাসেজই সম্মেলনে প্রদান করা হবে বলে আমি মনে করি।

আওয়ার ইসলাম : রিসালায়ে নুর বাংলাদেশের সমাজ জীবনে কতটুকু প্রভাব ফেলতে পারবে?

ড. মোহাম্মাদ ইউসুফ: আমি মনে করি, রিসালায়ে নুর এর শিক্ষা যদি আমরা আমাদের তরুণ সমাজসহ দেশব্যাপী বিভিন্নধর্মী মানুষের কাছে প্রচার করতে পারি তাহলে আমি বিশ্বাস করি তা আমাদের সমাজ জীবনে পজেটিভ প্রভাব বিস্তার করতে পারবে।

সাঈদ নুরসী তার রিসালায়ে নুরে যুবক, হতাশাগ্রস্থ, বৃদ্ধ, রোগীদের জন্য আলাদাভাবে বিশেষ বার্তা প্রদান করেছেন।

তিনি মৃত্যু বলতে সকল প্রকার দুনিয়াবী ঝামেলা থেকে মুক্তি বুঝিয়েছেন, এ ধরনের আধ্যাত্মিক শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি তিনি নৈতিক ও মানসিক উন্নয়নের শিক্ষাও প্রদান করেছেন, আর তা অবশ্যই সমাজ জীবনে প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম হবে।

আওয়ার ইসলাম: রিসালায়ে নুরের শিক্ষা আমরা কিভাবে প্রয়োগ করতে পারি?

ড. মোহাম্মাদ ইউসুফ: এ কথা সত্য, রিসালায়ে নুর ছিল বিংশ শতাব্দীর আলোকে মহাগ্রন্থ আল কুরানের ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ। সাঈদ নুরসি বিজ্ঞানের সাথে দীনে ইসলামের দ্বন্দ্বকে অস্বীকার করেছেন, তিনি বুঝিয়েছেন বিজ্ঞান আর দ্বীনে ইসলাম আলাদা নয়।

তিনি দীন শিক্ষার পাশাপাশি বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতিও জোরদান করেছেন। আমরা যদি আধুনিক বিজ্ঞান আর দীনি শিক্ষার সমন্বয় সাধন করতে পারি তাহলে হয়ত আমাদের জীবনে তার শিক্ষা প্রয়োগ করতে পারব।

আওয়ার ইসলাম: তুরস্ক বাংলাদেশ সমন্বয়ে সামনে আরো কোনো কার্যক্রমের উদ্যোগ কি নেয়া হতে পারে?

ড. মোহাম্মাদ ইউসুফ : আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের শিক্ষা ও গবেষণামূলক কার্যক্রম সামনেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। আরবি বিভাগ চেষ্টা করবে এ ধরনের কার্যক্রম দেশব্যাপী আরো উপহার দিতে।

আধুনিক তুরস্কের রূপকার সাঈদ নুরসিকে আমরা কতটুকু চিনি?


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ