শাহনূর শাহীন: সরকার কর্তৃক কোচিং সেন্টার বন্ধ ঘোষণার প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে ‘কোচিং এসোসিয়েশন বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন।
সম্মেলনের এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোঃ ইমাদুল হক (ই.হক.স্যার) কোচিং সেন্টারের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ্য করে বলেন, কোচিং সেন্টারে প্রতি মাসে স্বল্প বেতন নিয়ে সব বিষয়ে পাঠদান করানো হয়।
সবগুলো বিষয় বাসায় কোন শিক্ষকের কাছে সেবা নিতে চাইলে সংশ্লিষ্ট অভিভাবককে মাসে অনেক টাকা খরচের চিন্তা করতে হয় যা একজন সাধারণ পরিবারের পক্ষে সাধ থাকা সত্তেও সাধ্যে আসে না। ফলে তার সন্তান সঠিকভাবে শিক্ষাসেবা না পেয়ে চূড়ান্ত কোন পরীক্ষায় কাঙ্খিত ফলাফল অর্জন করতে ব্যর্থ হয়।
তাই কোচিং সেন্টার হল দুর্বল শিক্ষার্থীদের মধ্যে সঠিকভাবে সকল বিষয়ে সুন্দর করে বুঝিয়ে দিয়ে ক্লাসের মধ্যে মেধাবী ও নৈতিক, চরিত্রবান শিক্ষার্থী হিসেবে গড়ে তোলার অধ্যায়।
এ অবস্থায় কোচিং সেন্টারের বিরুদ্ধে প্রশ্ন ফাঁসের ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে তা বন্ধ করা অবিবেচনাপ্রসুত সিদ্ধান্ত। এই অবস্থায় লক্ষাধিক শিক্ষিত যুবক চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে। আমরা এই উৎকণ্ঠা থেকে মুক্তি চাচ্ছি।
ই হক স্যার বলেন, বর্তমানে এ পেশায় সঠিক জরিপ এখন এ পর্যন্ত না পেলেও সারাদেশে প্রায় লক্ষাধিক কোচিং সেন্টার বা সহায়ক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর এ লক্ষাধিক কোচিং সেন্টারে ১০/১৫ জন করে শিক্ষক থাকলেও প্রায় ১০/১৫ লক্ষের মতো শিক্ষিত যুবক সম্প্রদায় তাদের অন্ন সংস্থানের জন্য কর্ম করে থাকেন এবং দেশের দরিদ্র পিতা-মাতার শিক্ষিত সন্তানেরা যারা নিজেদের লেখা-পড়ার ব্যয় ভার বহন করা সহ পরিবারের ভরণ-পোষণ করে থাকেন।
এ সমস্ত কোচিং সেন্টারে পাঠদান করে বেকার সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি ১৫% ভ্যাট দিয়ে রাজস্বখাতে অবদান রাখছে এসব প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন-মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষা শেষে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছিলেন, প্রশ্ন ফাঁস হয়নি। অথচ কোচিং সেন্টারকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের আখড়া ঘোষণা দিয়ে কোচিং সেন্টারগুলোকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কোচিং বন্ধের বিষয়টি শুধু আমাদেরকে নয় বরং সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবক মহলকে চিন্তিত ও উৎকণ্ঠিত করেছে।
সংশ্লিষ্ট খবর....এসএসসি পরীক্ষা : আজ থেকেই কোচিং বন্ধের নির্দেশ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের
সংবাদ সম্মেলন থেকে এসময় চার দফা দাবি পেশ করা হয়। ১. অবিলম্বে কোচিং বন্ধ ঘোষণা প্রত্যাহার করতে হবে, ২. কোচিংয়ের স্বীকৃতি ও বৈধ নীতিমালা দিতে হবে, ৩. কোচিংয়ের ভ্যাট ১৫% থেকে কমিয়ে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো ৪.৫% করতে হবে, ৪. কোচিং পরিচালিত ভাড়া করা বাসা বা বাড়ীর উপর অর্পিত ভ্যাট প্রদান বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কোচিং এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ এর যুগ্ম আহ্বায়ক পলাশ সরকার, আবু রায়হান, মাহবুব আরেফিন, মো. আকমল হোসেন, ওমর ইকবাল নাদিম, মোঃ নুরুল আমিন।
সংবাদ সম্মেলন থেকে আগামীকাল ৩১ জানুয়ারী সকাল ১১.৩০ মিনিট হতে ১২.৩০ মিনিট পর্যন্ত ঢাকাসহ সকল জেলা ও উপজেলা প্রেসক্লাবের সামনে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়।
এসএস/