সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


চট্রগ্রাম ইজতেমা ময়দানে মুনাজাতে জনসমুদ্র

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: বিশ্ববাসীর শান্তি ও মুসলিম জাতির কল্যাণ কামনায় মুনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হল মুসলমানদের বৃহৎ দাওয়াতে তাবলীগের তিনদিন ব্যাপী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক বিশ্ব (আংশিক) ইজতেমা।

রবিবার সকালে আল্লাহ আকবর ধ্বনিতে মুখরিত ছিল পুরো ইজতেমা ময়দান। আগত মুসল্লিদের পাশাপাশি বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ সহ সাধারন মুসল্লিগন ছুটে আসছেন মুনাজাতে শরিক হতে। ভোর থেকেই কানায় কানায় পূর্ণ হতে দেখা গেছে ইজতেমা মাঠ। যে যেখানেই জায়গা পেয়েছে সেখানেই বসে যেতে দেখা গেছে।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দলে দলে ইজতেমা মাঠে সমবেত হন। ইজতেমা ময়দান ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ, চাদর ও পলিথিন বিছিয়ে,গাড়ীতে বসে মুসল্লিরা মোনাজাতে অংশ নেন।

মুসলমানদের বৃহৎ এই দাওয়াতে তাবলীগের জমায়েতে মুসল্লিরা দু'হাত তোলে চোখের জ্বল ফেলে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে নিজের পাপ মুচন, পরিবার, দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করেছেন। জনসমুদ্রে পরিণত হয়েছিলো চারিয়া এলাকা। আল্লাহর সন্তুষ্ঠি অর্জন ছিলো সকলের প্রত্যাশা। তিল ধারণের ঠাঁই ছিলনা ইজতেমা ময়দানসহ পার্শবর্তী এলাকাজুড়ে।

মুনাজাতের পর থেকে প্রায় ৪ ঘন্টা চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি মহাসড়ক ছিল লোকে লোকারণ্য। উপচে পড়া ভিড়ে পায়ে হেটে গন্তব্যস্থানে পৌঁছেছে ইজতেমায় আগত মুসল্লিরা। পাশাপাশি নির্বিঘ্নে মুসল্লিদের যাতায়াতে প্রশাসনের ভূমিকা ছিল প্রশংসনীয়।

আজ আখেরী মোনাজাতের পূর্বে সকাল ৮টায় মুসল্লিদের উদ্যেশ্যে হেদায়াতি বয়ান করেন ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সিরাজ ঢাকা ও কাকরাইল মসজিদের খতিব মারকাজ প্রধান হাফেজ মাওলানা জুবায়ের আহমদ।

এদিকে ইজতেমার ২য় দিনে বাদে ফজর বয়ান করেন, মাওলানা আবদুল বারী ঢাকা, বাদে জোহর নসিহতের বয়ান আরবিতে পেশ করেন, সৌদি আরবের মদিনা থেকে আগত মেহমান ও বাংলায় অনুবাদ করেন, লাভলেইন মারকাজের মুরুব্বি মাওলানা মহিউদ্দিন। বাদে আসর হেদায়াতি বয়ান করেন, মুফতি জসিম উদ্দিন ও বাদে মাগরিব মুসল্লিদের উদ্যেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ নসিহত পেশ করেন, কাকরাইল মসজিদের খতিব ও তাবলীগ মারকাজের প্রধান হাফেজ জোবাইর সাহেব।

তিন দিনের এই বিশাল জামায়েত থেকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছেন প্রায় ৪ শত সত্তরটি জামাত হয়ে লক্ষাধীক মুসল্লি। তারা ১চিল্লা,৩চিল্লা ও এক সালের জন্য সময় দিবেন। নিজের জীবনের আত্মশুদ্ধি ও পরকালের নাজাতের জন্যই এই আত্মত্যাগ আগত সকল মুসল্লিদের।

বিশাল এই তিনদিনের জমায়েতে মির্জাপুর ইউনিয়নস্থ চারিয়া এলাকা ছিল মুসলমানদের মিলনমেলা।চট্টগ্রামের ১৪টি উপজেলা ও মহানগর এলাকার বিশ লক্ষাধীক মুসল্লি অংশ নেন বলে ইজতেমা দায়িত্বশীল সুত্রে জানা গেছে। দেশব্যাপী দাওয়াতি মেহনত বাড়াতে ও সাধারন মানুষকে দ্বীনের দাওয়াত পৌছে দিতেই বিশাল এই মজমা।

২৮শে জানুয়ারী রবিবার দুপুর সাড়ে ১০ দশটায় মুনাজাতে লাখ লাখ মুসল্লি অংশগ্রহণ করেন। ২০ মিটিটের মোনাজাতে পুরো ময়দান সহ আশপাশ অশ্রুশিক্ত নয়নে ভারী হয়ে উঠেছে। একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও নিজের জীবনকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে পরিচালনা করার উদ্যেশ্যেয় সকল মুসল্লিগন অংশগ্রহন করেন।

সকাল ১০টা ২৫মি. আখেরি মোনাজাত শুরু হয়ে ১০ টা ৪৭ মি. সমাপ্ত হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের খতিব ও শূরা প্রধান হাফেজ জুবাইর আহমদ।

উল্লেখ্য,শুক্রবার জুমার নামাজের মধ্য দিয়ে শুরু হয়ে রবিবার মুনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় বিশ্ব (আংশিক) আঞ্চলিক এ ইজতেমা। এবার এ ইজতেমায় সৌদি আরব, ওমান, চীন, সুইডেন, ইন্দোনেশিয়া, জর্ডান, মিসর, আলজেরিয়া, দুবাই, কাতারসহ বিভিন্ন দেশের মোট ১৭০ জন বিদেশি মেহমান এসেছেন। লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির পদচারণায় মুখরিত ছিল বারো আউলিয়ার খ্যাত চট্টগ্রামের হাটহাজারী চারিয়া এলাকা।

আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে সকাল থেকেই ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা দলে দলে ইজতেমা মাঠে সমবেত হন। ইজতেমা ময়দান ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে পাটি, চটের বস্তা, খবরের কাগজ, চাদর ও পলিথিন বিছিয়ে,গাড়ীতে বসে মুসল্লিরা মোনাজাতে অংশ নেন।

এবারের ইজতেমায় ঠান্ডা জনিত কারনে কুতুবদিয়া ও সাতকানিয়া উপজেলার আগত ২ মুসল্লির মৃত্যু হয়।

মডেল থানার ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, ইজতেমা উপলক্ষ্যে প্রশাসন ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছেন। ইজতেমা শেষে যানবাহন কিছুক্ষন বন্ধ ছিল। মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড়ের কারনে যানযটে কিছুটা ভোগান্তি হয়েছে আগত মেহমানদের। তবে প্রশাসনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় কয়েক ঘন্টার মধ্যে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়ে যায়।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ