সুমাইয়া তানজিম
ফিচার রাইটার
অ্যাসিডিটি এমন একটি সমস্যা যা একটু অসাবধানতায় যেকোনো সময় যেকোনো স্থানেই শুরু হয়ে যেতে পারে। অ্যাসিডিটির সমস্যায় প্রচণ্ড বুক ও পেট জ্বালাপোড়া করতে থাকে যা অনেক বেশি যন্ত্রণাদায়ক আমাদের পাকস্থলিতে অতিরিক্ত বা ভারসাম্যহীন অ্যাসিড উৎপন্ন হওয়ার ফলে পেট ব্যথা, গ্যাস, বমি-বমি ভাব, মুখে দুর্গন্ধ বা অন্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এই অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তির জন্য অনেকেই অনেক ওষুধ খান৷ কিন্তু ওষুধ ছাড়াও ঘরোয়া পদ্ধটিতেও এর থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে যতোটা সম্ভব প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করাই ভালো। চলুন জেনে নেওয়া যাকিএমন ২৩টি খাবারের নাম, যা যন্ত্রণাদায়ক অ্যাসিডিটি দূর করতে সাহায্য করবে।
১. তুলসি চা
তুলসি পাতার ব্যবহার অ্যাসিডিটি নিরাময়ে অনেক জনপ্রিয়। যখনই অ্যাসিডিটির সমস্যা দেখা দেবে তখন চট করে বানিয়ে নিন তুলসি চা। ২ কাপ পানিতে ৫/৬ টি তুলসি পাতা ফুটতে দিন। পানি ফুটে ১ কাপ পরিমাণ হয়ে এলে তা নামিয়ে গরম গরম পান করুন যন্ত্রণার উপশম হবে। চাইলে তুলসি পাতা চিবিয়েও খেয়ে নিতে পারেন, এতেও ফল পাবেন।
২. লবঙ্গ
লবঙ্গ পাকস্থলীর অ্যাসিডিটি ও গ্যাস দূর করতে পারে এর বায়ু নিরোধক ক্ষমতার জন্য। ২/৩ টি লবঙ্গ মুখে নিয়ে চুষলে বা সমপরিমান এলাচ ও লবঙ্গ গুঁড়ো খেলে অ্যাসিডিটির জ্বালা এবং মুখের দুর্গন্ধ দূর হয়।
৩. রসুন
কাঁচা রসুন খেলে পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক এসিডের মাত্রা বেড়ে যায়। যার ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা খুব দ্রুত এবং সহজে দূর হয়ে যায়।
৪. কলা
কলার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা পাকস্থলীর গা থেকে মিউকাস নিঃসরণ করতে সহায়তা করে। এই মিউকাস অ্যাসিডিটির সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে দূর করতে বেশ কার্যকরী।
৫. ঠাণ্ডা দুধ
অ্যাসিডিটির সমস্যা তাৎক্ষণিকভাবে দূর করতে ঠাণ্ডা দুধের জুড়ি নেই। দুধের ক্যালসিয়াম পাকস্থলীতে পৌঁছে বাড়তি অ্যাসিড যা অ্যাসিডিটি তৈরি করে তা শোষণ করে নেয়। এবং বুক ও পেটের যন্ত্রণাদায়ক জ্বালা থেকে মুক্তি দেয়।
৬. পুদিনা
পুদিনা পাতা পাকস্থলীর বাড়তি অ্যাসিডের সমস্যা থেকে খুব দ্রুত মুক্তি দিতে পারে এবং পরিপাকে সহায়তা করে অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি দেয়। তুলসি পাতার মতোই পুদিনা পাতার চা তৈরি করে কিংবা পুদিনা পাতা চিবিয়ে খেলেও অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে দ্রুত রেহাই পাওয়া যায়।
৭. দারুচিনি
হজমের জন্য খুবই ভাল, এটি প্রাকৃতিক অ্যান্টাসিড যা পেটের গ্যাস দূর করে। এক কাপ পানিতে আধা চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া দিয়ে ফুটিয়ে নিয়ে দিনে ২/৩ বার এটা খেতে পারেন। এছাড়া চাইলে সুপ/সালাদে দিয়েও খেতে পারেন।
৮. আদা
হজমে সমস্যা এবং অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে আদা অনেক প্রাচীনআমল থেকেই ব্যবহার হয়ে আসছে। আদা পাকস্থলীর গায়ে একধরণের প্রতিরক্ষা পর্দা তৈরি করে যার ফলে বাড়তি অ্যাসিডের কারণে অ্যাসিডিটির সমস্যা দ্রুত দূর হয়ে যায়।
৯. গরম পানি
সাধারণত কুসুম গরম পানি রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকালে ঘুম থেকে উঠে খেলে অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
১০. জিরা
এটি হজমক্রিয়ায় চমৎকার কাজ করে। দেড়কাপ জলে এক চা চামচ করে জিরে, ধনে ও মৌরী গুঁড়া এবং সামান্য চিনি মিশিয়ে খালি পেটে খেতে পারেন অথবা এক গ্লাস পানিতে সামান্য জিরার গুঁড়া মিশিয়ে বা ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে প্রতিবেলা খাবার পর খেতে পারেন।
১১. আপেল সাইডার ভিনেগার
এর ক্ষারধর্মী প্রভাব পাকস্থলীর অ্যাসিডিটির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ১-২ চা চামচ অশোধিত ভিনেগার এক কাপ পানিতে মিশিয়ে খাবার আগে বা দিনে এক বা দুবার খেতে পারেন।
১২. মাঠা
সারাদিনে কয়েকবার শুধু মাঠা খেলে বা সাথে সামান্য গোলমরিচ গুঁড়ো অথবা এক চা চামচ ধনেপাতার রস মিশিয়ে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায় অথবা আধা থেকে এক চা চামচ মেথি সামান্য পানিতে পেস্ট করে এক গ্লাস মাঠার সাথে মিশিয়ে খেলে অ্যাসিডিটির পেট ব্যথা দূর হয়।