আওয়ার ইসলাম: সুদের টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে মানিকগঞ্জে বাচ্চু কাজী নামে ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার ঘিওর উপজেলার নালি ইউনিয়নের হেলাচিয়া গ্রামে একটি নির্জন স্থানে গাছের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।
বাচ্চু কাজির স্ত্রী শান্তি বেগম জানান, বছর-খানেক আগে তার স্বামী বাঠুইমুরি গ্রামের আলমগীরের কাছ থেকে সুদের ওপর ৬ হাজার টাকা নেন। প্রতি মাসে ১০ টাকা হারে সুদ দেয়ার কথাছিল।
শান্তি বেগম জানান, এ পর্যন্ত সুদের ছয় হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু গত বুধবার বিকালে আলমগীর হোসেন বাড়িতে এসে সুদসহ ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন।
আগামী শুক্রবারের মধ্যে পুরো টাকা পরিশোধের আল্টিমেটামও দেন। না দিলে তার স্বামী বাচ্চু কাজিসহ ছেলেদের তুলে নিয়ে বিচার বসিয়ে অপমান করার হুমকি দেন আলমগীর।
বাচ্চু কাজির নাতনি রুমি বেগম জানান, তার নানা এলাকায় মাতবর হিসেবে সবার কাছে পরিচিত ছিলেন। এলাকার লোকজনও তাকে মান্য করতেন। কিন্তু আলমগীরের হুমকির পর তার নানা মনমরা হয়ে পড়েন।
রুমি আরও জানান, সন্ধ্যার দিকে তার নানা বাচ্চু কাজি বাড়ি থেকে বের হন। রাত ১০টায় বাড়িতে না ফিরলে গ্রামের বিভিন্ন স্থানে তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি। তিনি বাড়িতেও ফিরে আসেননি। ভোরে গ্রামের লোকজন নির্জন স্থানে একটি গাছে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে খবর দেয়।
স্থানীয়রা জানান, আলমগীর ও তার ভাই জাহাঙ্গির বাঠুইমুরি বাজারে ফ্লেক্সি লোডের ব্যবসার পাশাপাশি সুদের ওপর টাকা খাটান। বাজারে ভাই ভাই টেলিকম নামে একটি দোকান আছে তাদের। সুদের ব্যবসা করেই তাদের অবস্থা এখন রমরমা।
বাচ্চু কাজির বাড়িতে উপস্থিত স্থানীয় চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরও আলমগীরদের সুদের ব্যবসার কথা স্বীকার করেন।
তিনি জানান, সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বাচ্চু কাজি আত্মহত্যা করেছেন বলে তিনি স্থানীয়দের কাছে শুনেছেন। তবে আসল ঘটনা সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
প্রতিবেশীরা জানান, আলমগীরের বাবা কুদরত সরকার মূলত সুদের ব্যবসা করেন। সহযোগিতা করেন তার দুই ছেলে আলমগীর ও জাহাঙ্গির।
এইচজে