আওয়ার ইসলাম: রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্যাতন বন্ধ ও মানবিক সংকট নিরসনে মিয়ানমারকে সহযোগিতা করার প্রস্তাব দিয়েছে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ। মঙ্গলবার রোহিঙ্গা ইস্যুতে এক বৈঠকে এ প্রস্তাব দিয়েছে পরিষদ। একই বৈঠকে চলমান রোহিঙ্গা সঙ্কটের সমাধান ও বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে নিরাপত্তা পরিষদে পাঁচ দফা সুপারিশ দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।
ঢাকায় প্রাপ্ত খবরে জানা যায়, গত ৬ নভেম্বর নিরাপত্তা পরিষদ মিয়ানমার পরিস্থিতির উপর সর্বসম্মতিক্রমে প্রেসিডেন্সিয়াল স্টেটমেন্ট গ্রহণ করে যেখানে জাতিসংঘ মহাসচিবকে স্টেটমেন্ট গ্রহণের ৩০ দিন পর নিরাপত্তা পরিষদে বিবৃতি প্রদানের অনুরোধ জানানো হয়। সে অনুযায়ী মঙ্গলবার জাতিসংঘ মহাসচিবের পক্ষে আন্ডার সেক্রেটারি জেফ্রি ফেল্টম্যান মিয়ানমার পরিস্থিতির উপর নিরাপত্তা পরিষদে বিবৃতি প্রদান করেন।
তিনি মিয়ানমার সঙ্কটের সমাধানে পাঁচটি সুপারিশ তুলে ধরেন। এগুলো হলো- রাখাইন রাজ্যের অ্যাডভাইজরি কমিশনের (আনান) সুপারিশমালাকে ভিত্তি ধরে শান্তিপূর্ণ ও স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুতদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে, প্রত্যাবাসন হতে হবে উচ্ছেদকৃতদের মূল ভূমিতে বা পছন্দনীয় কাছাকাছি কোনো স্থানে, অবাধ চলাফেরার স্বাধীনতা থাকতে হবে যাতে তারা জীবন ধারণের মৌলিক প্রয়োজনগুলো সংস্থান করতে পারে, প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে যোগ্যতার মানদণ্ড উদারভিত্তিক হতে হবে এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদের চলতি ডিসেম্বর মাসের সভাপতি জাপানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় পরিষদটির সদস্য দেশসমূহের বাইরে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারকেও বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়।
বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন। তিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ৪০০ জন বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে। এতে প্রতীয়মান হয় যে, রাখাইন প্রদেশের উত্তরাঞ্চলে পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি।
নিরপত্তা পরিষদের সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা এ সভায় বক্তব্য রাখেন। তারা রোহিঙ্গাদের অব্যাহতভাবে মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বরাবরের মতো বিশ্ব সম্প্রদায়কে মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধিগণ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সম্পাদিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির সাফল্য কামনা করেন। সুত্র: ইত্তেফাক।
এসএস/