আওয়ার ইসলাম: জামালপুরের মেলান্দহের বীরমুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন তাঁর বীর খেতাব এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন বর্জন করেছেন।
কারণ হিসেবে ১২ ডিসেম্বর আবুল হোসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেছেন-মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান-মর্যাদাকে যথাযথভাবে রক্ষা করা যাচ্ছে না। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার তালিকা প্রস্তুতের জন্য সরকার প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। কোনভাবেই যেন অমুক্তিযোদ্ধা-মুক্তিযোদ্ধা হতে না পারে।
কিন্তু দু:খের বিষয় হচ্ছে, রাজনৈতিক প্রভাবসহ এক শ্রেণির প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা অর্থের বিনিময়ে অবৈধপথে চুক্তিভিত্তিক সাক্ষ্য-প্রমাণ দিয়ে অমুক্তিযোদ্ধাদের-মুক্তিযোদ্ধা বানাচ্ছেন। এতে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা, মুক্তিযোদ্ধাদের গর্বিত উপাধি বীরের প্রতি অশ্রদ্ধা প্রদর্শন, অপব্যবহার এবং মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় মর্যাদার ভাগীদার করা হচ্ছে ভূয়ামুক্তিযোদ্ধাদের। যা তিনি সহ্য করতে পারছেন না।
এতেই শেষ নয়; প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার কোটা-সন্তান-নাতি-পুতির কোটাও দখল করে চলেছে ভুয়াদের লোকেরা। অনেকেই আবার আহত না হয়েও যুদ্ধাহত ভাতা গ্রহণের মাধ্যমে পুরো মুক্তিযোদ্ধার সমাজ-মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে কলঙ্কিত করা হচ্ছে।
জামুকা এবং মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়েও অসৎ উপায়ে ভূয়ামুক্তিযোদ্ধার পাল্লা ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। সারাদেশ থেকে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতেও ভুয়ামুক্তিযোদ্ধা বানানোর পথ ঠেকানো যাচ্ছে না। প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা-মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরাও এখন ভূয়ামুক্তিযোদ্ধাদের শাসন-শোষণের শিকার হচ্ছেন।
অবশেষে মৃত্যুর পরও এই ভূয়ামুক্তিযোদ্ধারা গার্ড অব অনারে ভাগীদার হতে যাচ্ছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মাঝে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্পর্কে নানা সমালোচনা চলছে।
অপ্রিয় হলেও সত্য, বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধার নাম শুনলেই চুক্তিযোদ্ধা বলেও উপহাস করছেন। যা একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেকের তাড়নায় স্বেচ্ছায়-স্বপ্রণোদিত হয়ে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে তিনি বীর উপাধি এবং মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার বর্জনের সিদ্ধান্ত নেন।
এ ব্যাপারে ইউএনও তামীম আল ইয়ামিন জানান-এই ধরণের এক আবেদন পেয়েছি। মুক্তিযোদ্ধারা এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। আবুল সাহেবের মনে হয়ত কোন অভিমান বা ক্ষোভে একাজটি করেছেন। কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।