হাসান হাফিজ: সদলবলে এসে গ্রামের দু’পাশে লাল পতাকা টানিয়েছে প্রশাসনের লোকজন। তারপর গ্রামটির বাসিন্দাদের বলা হচ্ছে, দু’দিনের মধ্যে গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে। এমন দৃশ্য প্রায় সময় সিনেমাতে দেখা গেলেও, বাস্তবে দেখা মেলা ভার। তবে বার্মার আরাকান অঞ্চলে এরকম ঘটনা প্রায় সময় ঘটে থাকে ।
কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ না দিয়ে অধিগ্রহণের নামে আরাকানের রোহিঙ্গার লাখ লাখ একর পৈতৃক সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে সরকার। এখনও ক্ষমতার অপব্যবহার বন্ধ হয়নি সেখানে। চলছে দখল ও লুটপাট।
গত মঙ্গলবার বুথিদং উপজেলার আলিয়ং এলাকায় লাল পতাকা টানিয়ে দিয়ে জোরপুর্বক রোহিঙ্গাদের পূর্ব পুরুষ হতে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত প্রায় ৩৩৫ একর জমি দখল করে নিয়েছে পুলিশ প্রশাসন। ওই এলাকার রোহিঙ্গাদের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে নির্দেশনাও দেয়া হয়। নির্দেশনা অমান্য করলে প্রাণ নাশের হুমকিও দেয় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
জানা গেছে, দখলকৃত রোহিঙ্গার ভূমিতে পুলিশ ক্যাম্প নির্মাণ করবে সরকারি দখলবাজরা। গ্রামের ভোক্তভূগি প্রায় পাঁচশো রোহিঙ্গা পরিবার এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। কোথায় যাবে, কোথায় থাকবে তা অনিশ্চিত তাদের। জমি দখলের বিনিময়ে কোন প্রকার ক্ষতিপূরণ দেয়া হবেনা বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে রোহিঙ্গাদের জানানো হয়েছে।
গ্রামটির রোহিঙ্গারা আরাকান টিভিকে জানান, যুগ যুগ ধরে তাদের দাদা–পরদাদা আরাকানে বসবাস করে আসছে । তারা উত্তরাধিকার সূত্রে ভুমির মালিক হয়েছে। কিন্তু সরকারি বাহিনী তা কেড়ে নিচ্ছে। এখন অন্ধকার ভবিষ্যতের মুখোমুখি তারা।
রোহিঙ্গারা আরো জানান, আগস্টের শেষ সপ্তাহে সেনা তান্ডব শুরু হলেও মাতৃভুমি ছেড়ে যায়নি তারা। জীবন বাজি রেখে আরাকানে থেকে যায় তারা। কিন্তু এখন ভিটেমাটি কেড়ে নিয়ে বাস্তুহীন করা হচ্ছে তাদের।
গ্রামটির রফিক নামের একজন দশম শ্রেণী পড়ুয়া ছাত্র বলেন, সরকারের প্রয়োজনে ভূমি অধিগ্রহণ করলে, ভূমির মালিককে ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধি-বিধান রয়েছে । কিন্তু আমরা রোহিঙ্গা বলে আমাদের কোন ক্ষতিপূরণ দিচ্ছেনা সরকার।
সূত্র: আরাকান টিভি