আওয়ার ইসলাম : পুলিশের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বরিশালে ১২৮ জন মাদক সেবনকারী ও ব্যবসায়ী মাদক ছেড়ে আলোর পথে ফিরে আসার অঙ্গীকার করেছেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা পুলিশ লাইনে আত্মসমর্পণ করে আলোর পথে আসার অঙ্গীকার করেন তারা।
মাদকের ভয়াবহ পথ ছেড়ে আলোর পথে আসার কথা বলেন আত্মসমর্পণকারীরা। আর মাদকের বিস্তাররোধসহ চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ীদের ভালো হওয়ার সুযোগ দেওয়ার জন্যই এমন আয়োজন বলে জানালেন জেলা পুলিশ সুপার।
এ সময় জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেঞ্জ ডিআইজি মো. শফিকুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিআইজি বলেন, মাদকের চাহিদা ও সরবরাহ কমিয়ে আনতে পারলে ব্যবহারও কমে যাবে, যা নিয়ে পুলিশ কাজ করছে। তবে এখন মাদকের অন্ধকার থেকে আলোর জগতে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
ডিআইজি বলেন, যে সব মাদকসেবী ও ব্যবসায়ী এ সুযোগ কাজে লাগাতে পারবে তাদের পুর্নবাসনসহ সমাজের স্বাভাবিক ধারায় ফিরে আসতে সহায়তা করা হবে। তবে যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদের আইনী লড়াই করতে হবে, এজন্য আদালতের ব্যয় কমাতে সহায়তা করা হবে। কিন্তু বিগত দিনের অপরাধের কারণে আইনের চোখে যে সাজা হবে তা মেনে নিতে হবে।
তিনি বলেন, সাজার পরে অন্ধকার জগতে ফিরে না হয় সেজন্য আমরা সহায়তা করতে পারি। এজন্য আপনাদের অন্ধকার জগতে ফিরে যাবেন না প্রতিজ্ঞা করতে হবে। এ সুযোগ যারা কাজে লাগাতে চাচ্ছেন না, তাদের বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ অনুষ্ঠান বুঝিয়ে দিয়েছে সমাজের সব স্তরের মানুষ মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার রয়েছে।
গেস্ট অব ওনার জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন বলেন, পুলিশের এ উদ্যোগ অবশ্যই ভালো। তবে পুলিশ একা উদ্যোগী হলে হবে না, সমাজের সব স্তরের মানুষকে এ উদ্যোগের পাশে দাড়াতে হবে।
মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীরা বলেন, কেউ বন্ধুদের কবলে পড়ে বা হতাশা থেকে মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে পড়েন। এতে করে তাদের পরিবারের সঙ্গে বিরোধ ও সমাজের মানুষ ঘৃণার চোখে দেখেন। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে থানা পুলিশের সহায়তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা আত্মসমর্পণ করেছি। এখন থেকে অন্যকেও মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবহিত করব।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান। এছাড়া জেলার বিভিন্ন উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
পরে আত্মসমর্পণকারী মাদক ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে তাদের আর্থিক সহায়তাসহ রিকশা, ভ্যান এবং সেলাই মেশিন উপহার দেয়া হয়।
আরএম