রোকন রাইয়ান
নির্বাহী সম্পাদক
ভারতের দিল্লির তাবলীগের জামাতের মারকাজ নিজামুদ্দীনের কয়েকজন প্রতিনিধি কাকরাইলের শূরার আলেম উপদেষ্টা মহিউস সুন্নাহ আল্লামা মাহমূদুল হাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার জামিয়া দারুল উলুম মাদানিয়ায় (যাত্রাবাড়ী মাদরাসায়) নিজামুদ্দীনের প্রতিনিধিরা সাক্ষাৎ করেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন, দিল্লি মারকাজের মুরব্বি জনাব আজমত মিয়াজীর ছেলে মাওলানা ফারুক ও ভাই মুশতাক আহমদ প্রমুখ।
প্রতিনিধিরা আল্লামা মাহমূদুল হাসানকে বলেন, দীর্ঘ বছরের ধারাবাহিকতায় আমরা পাঁচদিনের টঙ্গীর জোড়ে অংশ নিতে দিল্লির মারকাজ থেকে জামাতবন্দি হয়ে এসেছিলাম। কিন্তু কোনো কারণে আমরা জোড়ে অংশ নিতে পারিনি। কাকরাইলের পরিস্থিতিও সন্তোষজনক নয়। পুলিশ প্রশাসনসহ পুরো পরিবেশ আতঙ্কজনিত।
তারা বলেন, জোড়ে অংশ নিতে না পারাটা আমাদের জন্য কষ্টের। তবে বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম তাবলীগ জামাতকে দিল থেকে মহব্বত করেন এটা আমাদের বারবার অনুভূত হয়েছে।
প্রতিনিধি দলের মুখপাত্র ভাই মুশতাক আহমদ বলেন, সম্প্রতি কাকরাইলের শূরার পৃষ্টপোষকতা এবং পরামর্শের জন্য প্রতিনিধিত্বশীল পাঁচজন আলেমকে উপদেষ্টা করা হয়েছে। আমরা উপদেষ্টা পরিষদকে মোবারকবাদ জানাই।
তিনি আল্লামা মাহমূদুল হাসানকে বলেন, আমরা আপনার মাধ্যমে সবার প্রতি অনুরোধ করবো আগামী ইজতেমা শান্ত সুষ্ঠ ও সুশৃঙ্খলভাবে হওয়ার জন্য আপনারা সার্বিক পরামর্শ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
নিজামুদ্দীনের প্রতিনিধিদের সাক্ষাতের বিষয়ে কাকরাইলের শূরার আলেম উপদেষ্টা যাত্রাবাড়ী মাদরাসার মুহতামিম ও দাওয়াতুল হকের আমির আল্লামা মাহমূদুল হাসান আওয়ার ইসলামকে বলেন, কাকরাইলে পক্ষ থেকে দিল্লির নিজামুদ্দীনের সাথীরা আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে আমি উপদেষ্টা পরিষদের পাঁচ সদস্যের সঙ্গে জরুরি টেলিফোনে আলাপ করি। সবাইকে সঙ্গে নিয়েই কথা বললে ভালো হতো। সময়ের অভাবে সেটা হয়ে উঠেনি।
তিনি জানান, উপদেষ্টা সদস্যদের পক্ষ থেকে আমি তাদের বক্তব্য শুনেছি। তাদের বলেছি, বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম তাবলীগের কাজকে নিজের কাজ মনে করেন। তাবলীগের সংকট ও সমস্যায় তারা ব্যথিত হন। দেশের তাবলীগ ও আলেমদের মধ্যে সাময়িক দূরত্ব থাকলেও ইনশাল্লাহ উপদেষ্টা পরিষদ ও কাকরাইল শূরার সম্মিলিত মেহনতের কারণে এগুলো দূর হয়ে যাবে।
আল্লামা মাহমূদুল হাসান প্রতিনিধি দলকে আশ্বস্ত করে বলেন, কাকরাইলের সামান্য অস্থিরতা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে দেখার কারণ নেই। বরং বাংলাদেশ সরকার তাবলীগ জামাতের এ মেহনতের প্রতি খুবই আন্তরিক।
তিনি বলেন, স্পর্শকাতর এ বিষয়ে কাকরাইল এবং ইজতেমার জোড়ের মাঠে যেন কোনো রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্যই আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সহযোগিতার জন্য নিযুক্ত করা হয়েছে। সরকারের আন্তরিকতার কারণেই উলামায়ে কেরামের পরিষদ এবং কাকরাইলের শূরার সদস্যরা সম্মিলিতভাবে কাজ করতে পারছেন।
আগামী ইজতেমার বিষয়টি বরাবরই শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। সারা দেশের উলামায়ে কেরাম ছাত্র শিক্ষক তাবলীগের শূরার সদস্য সাথী সমর্থক সবাই ইজতেমা সুষ্ঠভাবে হওয়ার জন্য আন্তরিকভাবে মেহনত করছেন বলেও জানান।
আল্লামা মাহমূদুল হাসান ৫ সদস্যের উলামা পরিষদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিদের বলেন, আমাদের সবার উচিত সবরের সঙ্গে কাজ করে যাওয়া। সুন্নতে রাসূলের অনুসরণ করা। তাহলেই শন্তিপূর্ণভাবে এ দাওয়াতি মেহনত এগিয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
‘তাবলিগের কাজটা আলেমদের; তাই সংকট তৈরি হলে মাথা ব্যথাটাও আমাদের বেশি’