দাওয়াত ও তাবলীগের চলমান সংকট নিয়ে আজ যাত্রবাড়ী মাদরাসায় শীর্ষ আলেম ও তাবলীগের শূরার সদস্যদের বৈঠকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। এছাড়াও শীর্ষ পাঁচ আলেম তাবলীগের উপদেষ্টা মনোনীত হয়েছেন।
আজকের এ বৈঠক ও গৃহিত সিদ্ধান্তগুলিকে যুগান্তকারী বলে ব্যাখ্যা করেছেন আলেমগণ। সাথে সাথে সিদ্ধান্তগুলো তাবলীগের কাজকে বেগমান করতে সহায়তা করবে বলেও জানান তারা। বিষয়গুলো নিয়ে চার আলেমের মতামত নিয়েছেন রোকন রাইয়ান।
মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ
পরিচালক, শাইখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার
আমি আল্লাহ তায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি। আজকের যাত্রাবাড়ীর বৈঠকে আল্লাহ তায়ালার রহমত ও বরকত ছিল। উলমায়ে কেরামের দীর্ঘ দিনের মেহনত কাকরাইলের শুরার সাথে দফায় দফায় বৈঠক, এই অধমের ব্যক্তিগত কিছু প্রচেষ্ঠার সফলতা আজ যাত্রবাড়ীর বৈঠকে বাস্তবায়ন হলো।
কাকরাইলের শুরাকে মোবারকবাদ জানাচ্ছি, তারা সারা দেশের উলামায়ে কেরামের প্রতিনিধিত্বকারী শীর্ষস্থানীয় পাঁচজন আলেমকে মুরুব্বী হিসাবে মেনে নিয়েছেন। শূরার সদস্যরা যদি নিয়মিত আলেমদের সময় দেন, আসা যাওয়া থাকে তাহলে কোনো সমস্যা ভবিষ্যতে হবে না আশা করি।
পাশাপাশি মুহিউস্সুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসানসহ শীর্ষস্থানীয় পাঁচ আলেমের শুকরিয়া আদায় করছি।
তাবলীগের যেকোন সংকট ও বিতর্কিত বিষয় যাত্রাবাড়ীতে অনুষ্ঠিত আজকের মিটিংয়ের সিদ্ধান্ত অনুপাতে সমাধান হবে বলে দৃঢ় প্রত্যাশা রাখি। আর কোন বিবাদ নয় এখন থেকে পূর্বের ন্যায় তালীম ও তাবলীগ, মুবাল্লিগ ও উলামা একাকার হয়ে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজকে বেগবান করবে, ইনশাআল্লাহ।
মুফতি ফয়জুল্লাহ
মহাসচিব, ইসলামী ঐক্যজোট
মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, আজ ঢাকার যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় তাবলীগ বিষয়ে উলামায়ে কেরাম যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ঐতিহাসিক ও সময় উপযোগী। সারা বিশ্বে চলমান তাবলীগ জামাতের অস্থিরতা নিরসনে এ বৈঠক খুবই গুরুত্ব বহন করে। তিনি বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয় সারা বিশ্বে তাবলিগ জামাতের কাজকে আরও গতিশীল ও শক্তিশাল করবে এ বৈঠকের সিদ্ধান্ত।
তিনি আজকের বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোকে এলহামি উল্লেখ করে বলেন, সর্বস্তরের উলামায়ে কেরামের কাছে মান্য গ্রহণযোগ্য ও সমাদৃত এ পাঁচ আলেমকে শূরার উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়েছে তা তাবলীগ জামাতের জন্য খুবই উকারী হবে।
তিনি চলমান সংকট নিরসনে উলামায়ে কেরামের আন্তরিক এবং সোহার্দ্যপূর্ণ আচরণকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এবং কাকরাইলের শূরার সদস্যদেরও তিনি কৃতজ্ঞা জানিয়েছেন।
গাজী আতাউর রহমান
সহকারী মহাসচিব, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ
আলেমদের স্বীকৃতি একটি কাঠামো তাবলীগের শূরা কমিটি মেনে নিয়েছেন এটা পজেটিভ দিক। একে সাধুবাদ জানাই। তাবলীগ জামাত দিনের মৌলিক কাজ। এ কাজগুলোতে সংকট থাকলে সামগ্রিকভাবে দীনের ক্ষতি হবে। তাই এখানে কোনো সংকট না থাকুক এটা আমাদের প্রত্যাশা।
তাবলীগের চলামান যে সংকট সেটা তৈরি হয়েছিল আলেমদের মশওয়ারা না শোনায়। আজকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে আশা করি ভবিষ্যতে এ সঙ্কট তৈরি হবে না।
যারা উপদেষ্টা মনোনীতি হয়েছেন সবাই গ্রহণযোগ্য আলেম, তারা সময় দিলে, তাবলীগ জামাত তাদের পরামর্শ সামনে রেখে কাজ করলে এবং কমিটি যদি শুধুমাত্র নামকাওয়াস্তে না হয় তাহলে আশা করি দীনের জন্য উপকার হবে।
মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী
যুগ্ম মহাসচিব, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম
এ সিদ্ধান্তকে আমি আপাতত স্বাগত জানাচ্ছি, ভবিষ্যতে উদ্ভুত পরিস্থি সৃষ্টি হলে সমাধানের জন্য যে পাঁচ আলেমকে উপদেষ্টা মনোনীত করা হয়েছে তা ইতিবাচক দিক।
আজকের বৈঠকে যারা উপস্থিত ছিলেন প্রত্যেককে মোবারকবাদ জানাই। আমি আশা করবো শিগগির তাবলীগ বিষয়ে উলামায়ে কেরামের উত্থাপিত দাবিগুলো তারা সমাধান করবেন।
যাত্রাবাড়ী মাদরাসায় তাবলীগ বিষয়ে শুরা ও আলেমদের বৈঠকে ৫ সিদ্ধান্ত
কাকরাইল শুরার উপদেষ্টা মনোনীত হলেন ৫ আলেম