রোকন রাইয়ান
ডেস্ক
দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নারীদের আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতায় এবার বাংলাদেশ থেকে প্রতিনিধিত্ব করবে কুমিল্লার মেয়ে খাদিজা আহসান। সে রাজধানীর ওয়ারীতে অবস্থিত সাউদা বিনতে জামআহ রা. আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসার শিক্ষার্থী।
গত ২০ আগস্ট ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ আয়োজিত দুবাই (বালিকা) আন্তর্জাতিক হিফজুল কুরআন প্রতিযোগিতার বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সব প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ১ম স্থান অধিকার করে খাদিজা।
‘শাইখা ফাতেমা বিনতে মুবারক ইন্টারন্যাশনাল হলি কুরআন কম্পিটিশন’ নামের এ প্রতিযোগিতা শুরু হবে আগামী ৬ নভেম্বর। চলবে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত। ১৮ নভেম্বর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন দেশটির শীর্ষস্থানীয় আলেমও ও ব্যক্তিবর্গ।
প্রতি বছর ৬০ থেকে ৭০ টি দেশ এ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে থাকে। প্রতিযোগিতার বিচারকসহ সম্পূর্ণ কাজ নারী হাফেজরাই করে থাকেন।
রাজধানীর বালিকা হিফজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাউদা বিনতে জামআহ রা. আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসা (১৯/১ শহিদ নজরুল ইসলাম সড়ক ফকির বানু ভবন ওয়ারী ঢাকা ) নারীদের হিফজের ক্ষেত্রে বরাবরই সাফল্য দেখিয়ে আসছে। এর আগেও দেশে বিদেশের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিয়ে বিজয়ী হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে মাদরাসার বালিকারা।
এর আগে লিবিয়ায় নারীদের এক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৯৬ টি দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন হাফেজ সাজেদা খাতুন। ২০০৭ সালে এ ঘটনা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপর ২০০৯ সালে জর্দানে অনুষ্ঠিত কুরআন প্রতিযোগিতায় তিনি ২য় স্থান অর্জন করেন।
গতবছরে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত নারীদের কুরআন প্রতিযোগিতা
মাদরাসটির পরিচালক হাফেজ ইসমাঈল হাসান। মাদরাসাটির ধারাবাহিক সাফল্য সম্পর্কে তিনি আওয়ার ইসলামকে বলেন, বালিকা মাদরাসার হিফজ খানার জন্য সাধারণ হাফেজা শিক্ষিকা পাওয়া যায় না। কিন্তু আমাদের সে সঙ্কট নেই।
তিনি বলেন, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সম্মিলিত মেহনত, আমল আখলাক এবং সময়ের পড়া সময়ে আদায়ের কারণেই আমরা সবার থেকে এগিয়ে আছি। এছাড়াও অন্যদের চেয়ে আমরা একটু ভিন্ন আঙ্গিকে বাড়তি মেহনত করে থাকি যা আমাদের সাফল্য এনে দিয়েছে।
হাফেজ খাদিজার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার চান্দিনায়। বাবা খন্দকার আহসান উল্লাহ গ্রামের একটি ক্যাডট মাদরাসার শিক্ষক। মেয়ের এমন সাফল্যে বাবাসহ পরিবারের সবাই উচ্ছ্বসিত।
বাবা খন্দকার আহসান উল্লাহ বলেন, আমার মেয়ে কুরআন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দেশের বাইরে যাচ্ছে এটি অনেক আনন্দের। আমরা সবার কাছে দোয়া চাই যেন আমার মেয়ে প্রতিযোগিতায় সাফল্য অর্জন করে বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনতে পারে।
নারীদের কুরআন প্রতিযোগিতায় কোন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেয়া হয় এমন প্রশ্নের জবাবে হাফেজ ইসমাঈল হাসান বলেন, প্রথমত হিফজকেই প্রাধান্য দেয়া হয়। একটা মেয়ের মুখস্ত শক্তি কতদূর সেটাই আগে লক্ষণীয়। এরপর তাজবিদ এবং তৃতীয়তে আছে তারতীলের সঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত।
তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেন সুরের কারণেই মনে হয় শীর্ষস্থান নির্ণয় করা হয়, এটা ভুল। আসলে হিফজশক্তি ও তাজবিদ জ্ঞান কেমন এটাই কুরআন প্রতিযোগিতার মূখ্য। তবে পড়ার লেহান কেমন এটাও বড় আকারে বিবেচনায় থাকে।
সাউদা বিনতে জামআহ রা. আন্তর্জাতিক বালিকা মাদরাসার বিশেষত্ব সম্পর্কে জানতে চাইলে মাওলানা ইসমাঈল হাসান বলেন, আমরা প্রতিদিনের সবক প্রতিদিন আদায় করি। এ ক্ষেত্রে কোনো গাফলতি হতে দেই না। আর যার যার মেধা বুঝে শ্রম দেয়া হয়। এ কারণে কোনো ছাত্রী এখানে দুর্বল থাকে না।
আগামী ১৮ নভেম্বর দুবাইয়ে প্রতিযোগিতার ফাইনাল রাউন্ড ও পুরস্কার পর্বে যেন হাফেজা খাদিজা আহসান সফলভাবে উত্তীর্ণ হতে পারে সে জন্য সবার কাছে বিশেষভাবে দোয়া চেয়েছেন ইসমাঈল হাসান।
কওমি স্বীকৃতি বিষয়ক মঞ্জুরী কমিশনের কমিটিতে যুক্ত হচ্ছেন ৫ আলেম