সন্দেহ করে কাউকে শাস্তি দেওয়া কিংবা অপরাধী সাব্যস্ত করা এটা ইসলাম কখনই সমর্থন করে না। এটা আমরা সবাই জানি। তবে ইসলাম এর চেয়েও একধাপ এগিয়ে।
ইসলাম আমাদেরকে যে জীবনবিধান দিয়েছে, সেখানে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে কাউকে নিজে নিজে শাস্তি দেওয়া তো দূরে থাক, সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ব্যতীত কারো ব্যাপারে সন্দেহ করাই দন্ডনীয় অপরাধ।
এই পৃথিবীতে সন্দেহ থেকে বহু অন্যায়ের জন্ম। গণপিটুনি, দাঙ্গা, মারামারি, পারিবারিক কলহ ও নির্যাতন অপবাদের মতো অনেক অপরাধের মূলে থাকে সন্দেহ। কিন্তু সন্দেহের কারণে কাউকে শাস্তি দেয়ার বিধান পৃথিবীর কোনো আদালতের নেই। অথচ ইসলাম চৌদ্দশত বছর আগে সন্দেহকে অন্যায় সাব্যস্ত করে সন্দেহ থেকে সৃষ্ট সকল অন্যায়ের পথকে রুদ্ধ করে দিয়েছে।
মহান আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক আন্তাজ থেকে দূরে থাক; কারণ অনুমান কোন কোন ক্ষেত্রে পাপ। (সূরা হুজরাত আয়াত ১২)
পুরুষের মনোজগতে কোনো নারী ধর্ষিত হলে সেটাকে অপরাধ বলার ক্ষমতা কোনো আদালতের নেই। কারণ সেটা সাব্যস্ত করা সম্ভব নয়। অথচ একজন নারীর জন্য এরচেয়ে বেদনার, লাঞ্ছনার, গ্লানির কোনো বিষয় আছে বলে মনে হয় না। কোন সমাজও সেটাকে অপরাধ সাব্যস্ত করে না।
কিন্তু ইসলাম এটাকে ভয়ংকর অপরাধ বলেছে। ইসলামে শারীরিক ধর্ষণ যেমন অপরাধ, কল্পনার জগতে ধর্ষণও অপরাধ। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গায়রে মাহরাম নারীর প্রতি চোখের কুদৃষ্টি এবং মনের মন্দ কল্পনাকে ব্যভিচার হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। (বুখারী-মুসলিম)
সাধারণ সমাজ একজন নারীর শুধু শারীরিক নিরাপত্তার কথা বললেও ইসলাম তার মনোজগতে ধর্ষণ থেকে নিরাপত্তার কথাও বলে।
আল্লাহর আইন আর মানবসৃষ্ট আইনের মৌলিক পার্থক্য এখানেই। এটাই ইসলামী শরিয়াহর সৌন্দর্য। মানব সৃষ্ট আইনে মানুষের যেসব অধিকার সংরক্ষণ করতে পারেনি, ইসলামে সেসবও সংরক্ষণ করেছে। এ থেকে বুঝা যায়, আপনি আপডেটেড হতে পারেন, তবে ইসলামের চেয়ে বেশি নয়।
সুতরাং দিনশেষে আল্লাহর দেওয়া শরিয়াতেই আছে মানবজাতির সামগ্রিক কল্যাণ। বিষয়টি আমরা যত দ্রুত উপলব্ধি করতে পারব ততই আমাদের জন্য মঙ্গল হবে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ
এমএন/