আতাউর রহমান খসরু
বার্তা সম্পাদ
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। বাংলাদেশের ইসলামি রাজনীতিতে উলামায়ে কেরমা ও গণমানুষের প্রতিনিধিত্বকারী একটি সংগঠন। ৮ ডিসেম্বর ১৯৮৯ সালে যাত্রা শুরু করার পর এ পর্যন্ত বেশ চড়াই-উৎড়াই পেরিয়েছে দলটি। ভাঙ্গণ ও কেন্দ্রীয় নেতাদের দলত্যাগের মতো বিব্রতকর পরিস্থিতিরও মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে।
অতীতের এসব কালিমা মুছে ফেলে নতুনভাবে এগুনোর চেষ্টা করছে শায়খুল আল্লামা আজিজুল হক রহ. এর প্রতিষ্ঠিত খেলাফত মজলিস। স্বপ্ন দেখছে খেলাফতের নতুন জাগরণের।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে এখন চলছে দাওয়াতি মাস (অক্টোবর)। এবারের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় খেলাফত কর্মীদের জাগিয়ে তোলো। যারা বিভিন্ন সময়ে খেলাফত মজলিসের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের জাগিয়ে তোলা ও দলে সক্রীয় করাই এ দাওয়াতি মাসের মূল্য লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘আমরা চাই খেলাফতের কোনো কর্মী যেনো নিষ্ক্রীয় না থাকেন। যারা বিভিন্ন সময়ে খেলাফত মজলিস বা ছাত্র মজলিসের দায়িত্ব পালন করেছেন তাদের আমরা সক্রীয় করার উদ্যোগ নিয়েছি।’
বিগত কয়েক সেশনের ধারাবাহিকতা ও দেশব্যাপী কর্মতৎপরতায় খেলাফত কর্মীদের মাঝে আশার আলো জেগেছে। ফলে তারা আবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হচ্ছেন-দাবি মাওলানা আতাউল্লাহর।
কিন্তু পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থায় এবং দেশের সামাজিক বাস্তবতায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ কতোটুকু?
মাওলানা আতাউল্লাহর মনে করেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ঘুরে দাড়ানোর সুযোগ অনেক বেশি। কারণ বিগত প্রায় ৩০ বছরে খেলাফত মজলিস সারা দেশে অসংখ্য কর্মী তৈরি করেছে। সেসব কর্মীরা এখন সংঘবদ্ধ হতে প্রস্তুত।
তিনি বলেন, সারা দেশে দাওয়াতি সফর করে আমাদের এ উপলব্ধি হয়েছে, হজরত শায়খুল হাদিসের কর্মীরা তার আদর্শের জন্য সংগ্রাম করতে মুখিয়ে আছে। তারা আস্থা ফিরে পেয়েছে। এজন্য সারা দেশের অসংখ্য কর্মী ও দায়িত্বশীল যারা অন্য কোথাও চলে গিয়েছিলেন বা নিষ্ক্রীয় ছিলেন তারা নতুনভাবে বাংলাদেশে খেলাফত মজলিসে যোগদান করছেন।
নতুন করে যোগদানকারীদের মধ্যে রয়েছেন মুফতি সাঈদ নুর, মুফতি শারাফাত, মুফতি হাবিবুর রহমান কাসেমি প্রমুখ। এদের সঙ্গে আরও জেলা পর্যায়ের অনেক নেতাও যোগদান করবেন বলে তিনি জানান।
আগামী রোববার ৩ নভেম্বর দলের কেন্দ্রীয় কাযালয়ে যোগদানকারী নেতৃবৃন্দকে বরণ করে নেয়া হবে। এ সময় ‘খেলাফত মজলিসে’র হবিগঞ্জ জেলার একজন সহ-সভাপতিও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসে যোগদান করবেন বলে জানা গেছে।
নতুন দিনে নতুনভাবে পথচলার চিন্তা করছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। তাদের ইচ্ছে সারা দেশে দলীয় কার্যক্রম শক্তিশালী করা এবং দ্রুত সময়ে তা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
সামনের জাতীয় নির্বাচন কেন্দ্র করেই তারা তা করার চেষ্টা করবেন। মাওলানা আতাউল্লাহ আমিনীর ভাষ্যে ‘আমরা চেষ্টা করছি, ইসলামি দলগুলো নিয়ে ঐক্যবদ্ধ নির্বাচনী প্লাটফর্ম তৈরি করতে। সে ক্ষেত্রে আমাদের দলীয় প্রার্থীর সংখ্যা কিছুটা কম হবে।
জোট করা সম্ভব না হলে একক নির্বাচন করবে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। সে ক্ষেত্রে অধিকাংশ আসনে আমরা প্রার্থী দেয়ার চিন্তা করছি।
তার যুক্তিতে আসন জিততে না পারলেও প্রার্থী দেয়া নিরর্থক নয়। কেননা এতে মানুষকে ইসলামের কথা বলার সুযোগ হয়, নেতা-কর্মীরা সংগঠিত হয় এবং উজ্জীবিত হওয়ার সুযোগ পায়।
নিজে নির্বাচন করবেন কিনা জানতে চাইলে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘দলের মনোয়ন পেলে কিশোরগঞ্জ-৬ আসন থেকে নির্বাচন করবো।’
তিনি ইতিমধ্যে এলাকাবাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করছেন এবং গণসংযোগমূলক কাজ করছেন বলে জানান।
আসছে রবিউল আওয়াল, জীবনের শ্রেষ্ঠ চিঠিটা নবীজিকেই লিখুন