এইচ এম মাহমুদ হাসান সিরাজী
অতিথি লেখক
আব্দুল্লাহ আল মামুন। একজন প্রতিভাবান। একাই বিশ্বের ৭৩ টি রাষ্ট্রের সাথে লড়াই করেছে। ৭৩ টি রাষ্ট্রের প্রতিযোগীকে ধরাশায়ী করে এ দেশের পতাকাকে বিশ্বদরবারে আবারো উজ্জ্বল করে তুলেছে।
কুমিল্লা মুরাদনগর থানার হিরারকান্দা গ্রামের সৌদি প্রবাসী আবুল বাশারের ছেলে আবারো প্রমাণ করল, এটি পবিত্র কুরআন চর্চার দেশ। এটি মুসলমানদের দেশ। এটি কুরআন প্রেমীদের দেশ। এ দেশে কুরআন চর্চা হয়।
এ দেশে সরকারিভাবে কুরআনি শিক্ষার পৃষ্ঠপোকতা না হলেও এ দেশের জনগণ কুরআনের পৃষ্ঠপোষকতা করে থাকে। এ দেশের জনগন কুরআনকে বুকে আগলে রাখে। কুরআন বহনকারীদের কাছে টেনে রাখে।
তাইতো এ দেশের এমন একটি গ্রাম দেখানো অসম্ভব হয়ে যাবে যে গ্রামে অন্তত একজন হাফেজে কুরআন নাই। এ দেশে এমন একটি ইউনিয়ন দেখানো যাবে না যে ইউনিয়নে অন্তত একটি কুরআনি মাদরাসা নেই।
এ দেশের মানুষ যখন অসচ্ছল ছিল তখন নিজেদের মুষ্টিচাল কর্মসূচির মাধ্যমে কুরআনি এ মাদরাসাগুলোকে টিকিয়ে রেখেছিল। আজ যখন সমাজের অনেকেই সচ্ছ্বল তখন কোনো না কোনো উপায়ে এ মাদরাসাগুলোর সাথে নিজেরা সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে।
তাই আমি মনে করি, কুরআনের একের পর এক বিশ্বজয় এটা এ দেশের জনগণের বিজয়। এটা এ দেশের কুরআন প্রেমীদের বিজয়। এটা এ দেশের কুরআন বহনকারীদের বিজয়।
স্বাধিনতার ৪৭ বসর পর কুরআনি শিক্ষা দেশকে যতটা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা অন্যান্য ক্ষেত্রে বিড়ল।
আজ জনগণের পৃষ্ঠপোষকতায় কুরআনের এ বিজয় অর্জন, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা থাকলে কুরআন এ দেশকে আরো উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারত।
অথচ দুঃখ ও আফসোসের সাথে বলতে হয়, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা বা অনুমোদনে অনেকগুলো এনজিও পরিচালিত হয় যেগুলোর প্রথম ও প্রধান টার্গেট হল কুরআনি শিক্ষাকে স্তব্ধ করে দেওয়া। এ এনজিওগুলো স্বাধীনতা উত্তর ৪৭ বসরে এ দেশকে কী কী দিয়েছে? জনগণকে কতটুকু দিতে পেরেছে?
আজ রোহিঙ্গা ইস্যুতেও দেখেছি, এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষগুলো যখন নিজোদের ক্ষুদ্র আয় থেকে রোহিঙ্গাদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছে, কুরআনের পৃষ্ঠপোষকতা করতে মসজিদ মাদরাসা নির্মাণ করতে যাচ্ছে, তখনো সরকারি অনুমোদনপ্রাপ্ত এ এনজিওগুলোর কুরআনবিরোধী প্ররোচণায় সরকার কুরআনি এ প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর বিধি নিষেধ জারি দিতে যাচ্ছে। এনজিওগুলো নির্বিঘ্নে কাজ করতে পারলেও কুরআনপ্রেমীরা কেন পারবে না স্বাধীনভাবে কাজ করতে।
অথচ বেশ কয়েক বছর ধরে হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুনরা দেশকে যা দিয়েছে ঐ সব এনজিওগুলো এর সিকিভাগও পারে নি।
আবদুল্লাহ আল মামুন আমার শশুরালয় এলাকার সন্তান। সে সুবাদে এদের বাড়ি ঘরও চেনা জানা। ঐ এলাকার ঘরে ঘরে এমন আবদুল্লাহ আল মামুন অনেক রয়েছে। কাতারপ্রবাসী খ্যাতিমান ব্যক্তি হাফেজ হেমায়েতুল্লাহও ঐ এলাকার সন্তান। মুরাদনগর মুজাফফরুল উলূম মাদরাসার প্রচেষ্টায় ঐ এলাকাটাকে কুরআন নগরী বললেও ভুল হবে না।
সৌদিতে ৭৩ দেশকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশি হাফেজের ১ম স্থান অর্জন
কখনো ছুটি ছাটার সময় গেলে দেখা যায় মসজিদের ইমাম সাহেবরা ছুটিতে চলে যান। আর কাতারে কাতারে হাফেজ আলেমরা থাকেন। নামাজ পড়ানো ইমাম সাহেবের অভাব থাকে না।
কুরআনি শিক্ষায় জনগণের পাশাপাশি সরকার আরেকটু এগিয়ে এলে এ দেশের ঘরে ঘরে এমন আবদুল্লাহ আল মামুনদের জন্ম হবে। এ দেশ আরো উজ্জ্বল হবে। এ দেশের পতাকা বিশ্বদরবারে পত পত করে উড়তে থাকবে। সুনাম শুধু আবদুল্লাহ আল মামুনদের হবে না, সুনাম হবে এ দেশের। সুনাম হবে এ দেশের জনগণের।
সবশেষে অভিনন্দন হাফেজ আবদুল্লাহ আল মামুনকে। ধন্যবাদ হাফেজগড়ার কারিগড় হামেলে কোরআন, খাদেমে ফোরকান কারী নাজমুল হাসান ভাইকে।
লেখক: প্রিন্সিপাল, জামিয়া ওসমান ইবনে আফফান রা.