এম ওমর ফারুক আজাদ
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
নির্জন পুকুরপাড়ে একটি পাকা কবর। ভেতরে রয়েছে কাথা বালিশ। বৃষ্টি বাদলা থেকে রক্ষা পেতে উপরে টিনের ছাউনি দেওয়া হয়েছে। কবরের সামনের অংশে আরবিতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম লেখার পর বাংলা অক্ষরে লেখা হয়েছে রমজান অা: জিহাদী হক ভান্ডারী।
এ দৃশ্যটি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার লেলাং ইউনিয়নের দমদমা গ্রামের অালী অংশের বাড়ির।
মাইজভাণ্ডার পাঠানপাড়া থেকে বাবুনগর বোর্ডস্কুল হয়ে নাজিরহাট যাত্রা পথে যে কারো চোখে পড়বে এ কবর।
সম্প্রতি সরেজমিনে সেখানে গেলে দেখা হয় রমজান অালীর সাথে। প্রায় সত্তরের কাছাকাছি বয়স্ক লোকটির পাকা দালান থাকলেও তিনি নিজ ঘর থেকে তিনশ ফুট দূরে পুকুর পাড়ে তৈরি করেন এ কবর। এখানেই তিনি রাত দিন কাটান।
ঘর থেকে খাবারও নিয়ে আসা হয় এখানে। তবে, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাধ্য হয়ে ঘরে চলে যেতে হয় তাকে।
তার দু' স্ত্রী ৬ সন্তান রয়েছে। তার ছেলেরা প্রবাসে বেশ ভালো অবস্থানেও রয়েছেন বলে স্থানীয়রা জানালেন।
জানা যায়, বিগত দশ বছর আগ থেকে এ কবরে বসবাস করে আসছেন রমজান অালী। তিনি নিজ হাতেই এ কবর তৈরি করেন।
নিজ পাকা ঘর রেখে এখানে কেন বসবাস এমন প্রশ্নে রমজান অালী বলেন, 'আমাকে তো মরতে হবে, মারা যাওয়ার পর তো এখানেই থাকতে হবে, তাই আগে থেকে প্রস্তুতি নিচ্ছি। মৃত্যুর পর আমাকে এ কবরে দাফন করা হবে।'
তবে এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা তার ব্যাপারে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানান। বহুবার রাতের অন্ধকারে কবরটিকে ভেঙ্গে দেওয়া হলেও তিনি পুনরায় সেটি তৈরি করে সেখানে বসবাস করতে থাকে।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, রমজান অালী মূলত মাইজভান্ডারসহ বিভিন্ন মাজার ভক্ত। নিজেকে ফকিরও দাবি করেন। এমনকি কয়েকবার সেখানে ওরশেরও অায়োজন করেন। এলাকাবাসীর বাধায় সেটি এখন বন্ধ আছে।