আলী আবদুল মুনতাকিম
অতিথি লেখক, আওয়ার ইসলাম
রাজধানীতে রাস্তায় ইদানিং প্রচুর নতুন গাড়ি নামতে দেখা যাচ্ছে। কোন নীতিমালা না থাকায় বা যা আছে তার প্রয়োগ না থাকায় যে কেউ গাড়ি নামিয়ে ফেলছে। নতুন ৩৯ সিরিয়ালের প্রীমিও, এক্সিও বা হারিয়র ব্রান্ডের গাড়ির যেমন ছড়াছড়ি তেমনি BMW, মার্সিডিস গাড়িও দিনকে দিন বেড়েই চলছে।
এছাড়াও স্পোট্স কারসহ নানাহ ব্রান্ডের ৭০/৮০ লাখ টাকা দামের গাড়ি প্রতিদিনই নামছে। ট্রাফিক কোন গাড়িকে সিগনাল দিয়ে থামালে কালো গ্লাস নামিয়ে দুটো ধমক দিয়ে চলে যায়। বলে যায়- আমি দলের অমুক ওয়ার্ডের কমিটি সদস্য। যেটি আদৌ পরিচয় দেবার মত কোন পদ নয়।
দায়িত্ব পালনকারী ট্রাফিক জোড় করে কাগজ দেখতে চাইলে নিজে দেখাবার যোগ্যতা নাই। ড্রাইভারকে বলে, ‘এ ড্রাইভার দেখতো কী চায়’। পথে পথে যার তার সাথে দুর্ব্যবহার তো আছেই। কোন রিকসার সাথে ছোঁয়া লাগলে তো কথাই নেই। হাত-পা ধরেও রিকসার চালক রেহাই পায় না।
আসলে এরকমই হওয়ার কথা। কারণ গাড়ি কেনা হয়েছে মাস্তানির টাকায়। লেখা-পড়ায় বকলম, কিন্তু দলীয় পদ পদবীর জোড়ে ধরাকে সরা ভেবে দোকান, হাট-বাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাস টার্মিনাল, ঘাট সবখান থেকেই বান্ডেল আসে নেতার দলীয় দপ্তরের ড্রয়ারে। ভাগাভাগি হয় সেই টাকা।
খবরের কাগজের তথ্য অনুযায়ী, কিছু টাকা বাইরের ক্যাসিনোতেও যায়, সেই ড্রয়ারের টাকায় গাড়িও কেনা হয়। অবশ্য দলীয় সব অফিস খারাপ নয়। আজকাল এসব গাড়ির সংখা এত বেড়ে গেছে যে, যানজট সংক্রান্ত সরকারের অনেক মহতি উদ্যেগ ভেস্তে যেতে বসেছে।
ট্রাফিক বিভাগ যেমন হিমশিম খাচ্ছে বিঅারটিএও প্রতিনিয়ত সমালোচনা সহ্য করে যাচ্ছে। যদিও বিআরটিএ একটি আইন কড়াকড়ি করতে পারে যে একই পরিবারে ১টি গাড়ি থাকলে আর একটি অনুমিত দেয়া হবে না।গাড়ি কেনার সময় টাকার উৎস জানাতে হবে।
তাহলে হয়তো মাস্তানির টাকায় গাড়ি কেনা কমতে থাকবে। একই পরিবারে ৪/৫ টি গাড়ি থাকবে না। সবচেয়ে বড় বিষয় মাস্তানির টাকায় বাবুগিরি কমবে। নিয়মনীতির জয় হবে। তখন বিষয়টি উল্টিয়ে লিখব নিয়মনীতি জিন্দাবাদ মাস্তানতন্ত্র মুরদাবাদ। আজকের বিষয়টি গাড়িতেই সীমাবদ্ধ থাকল।
লেখক; প্রকৌশলী ও গবেষক
লেখককের আরও দুটি কলাম
লিবিয়ায় হলে মিয়ানমারে কেন জাতিসংঘের নেতৃতে বোমা বর্ষণ নয়?
বার্মার বর্বরতার চূড়ান্ত বাড়াবাড়ি