রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে মিয়ানমার’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ইসলামী ঐক্যজোট চট্টগ্রাম মহানগরীর উদ্যোগে ঐতিহাসিক লালদীঘি ময়দানে আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী বলেছেন, আমাদের সীমান্তবর্তী, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারের আরাকানে ঘটছে সাম্প্রতিককালের ভয়াবহ গণহত্য ও মানবতাবিরোধী অপরাধ। মিয়ানমারের সরকার ও সেনাবাহিনীর বর্বরতার বিরুদ্ধে বিশ্বনেতৃবৃন্দকে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কেও মানবতার পক্ষে জোরালো ভূমিকা পালন করতে হবে। মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নৃশংস গণহত্যা পরিচালনার দায়ে এবং মানবতার বিরোধী অপরাধের কারণে থেইন সেইন সরকার ও অন সান সূচিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি একটি মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আহবান জানান, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তথা সর্বস্তরের মুসলমানদের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মায়ানমার সরকারের গণহত্যা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে রোহিঙ্গাদের সে দেশে ফেরৎ পাঠাতে আন্তর্জাতিকভাবে মায়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করুন।

কেন্দ্রীয় মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, আরকানের স্বাধীনতা ছাড়া রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা বন্ধ হবে না। তিনি বলেন, মিয়ানমারে মুসলমানদের উপর সরকারি বাহিনী ও মগদস্যুদের চলমান নৃশংস হামলা ও গণহত্যা পৃথিবীর সকল বর্বরতাকে হার মানিয়েছে।

অন্যদিকে মিয়ানমার সরকার বার বার বাংলাদেশের আকাশ সীমালঙ্ঘন করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে। এমন অবস্থায় আমাদের বসে থাকলে চলবে না, আমাদে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে মিয়ানমার সরকারকে উচিৎ জবাব দিতে হবে এবং আরকানের মুসলমানদের বাচাঁতে আরাকানকে স্বাধীন করতে হবে।

কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বলেন, মিয়ানমারের সরকার ও বৌদ্ধদের কাছে মানবিকতা বলতে কিছুই নেই। তারা রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর বর্বতম হত্যাকান্ড চালিয়ে মানবাধিকার ভুলুণ্ঠিত করেছে। মানবতার শত্রু মিয়ানমারের জালেম সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। বার্মার সকল পণ্য বর্জন করতে হবে। তাদের সাথে সকল কুটনৈতিক সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে।

কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনুদ্দীন রুহী বলেন, বর্বরোচিত জঘন্যতম এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা আরকানে করছে না। আরাকানে আজ মানবতা স্তব্ধ, মানবধিকার ভুলন্ঠিত হলেও বিশ্বনেতারা কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এমন অবস্থা চলতে দেয়া যায় না। এর বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে এবং রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

তিনি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমান গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহের হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব প্রদান, মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষা করতে আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমারের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। আরাকানে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের জন্য নিরাপত্তা জোন তৈরী করে বাংলাদেশ থেকে তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার সরকারকে বাধ্য করতে হবে।

মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমানদের উপর সে দেশের সরকারের অব্যাহতভাবে পরিচালিত গণহত্যায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, অবিলম্বে তা বন্ধ করার লক্ষ্যে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে জরুরী ভিত্তিতে রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি মাওলান মাঈনুদ্দীন রূহীর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক আ ন ম আহমদ উল্লাহর পরিচালনায় আজ বিকাল ৩টায় অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মাওলানা ফয়জুল্লাহ।

সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, ইসলামী ঐক্যজোটের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা জোবাইর আহমদ, আল্লামা ইসহাক নূর, সৌদী আরব মক্কা উম্মুল কোরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ও রাবেতা আল ইসরামিয়ার দক্ষিণ এশিয়ার দায়ী শেখ আবু ওমর আবদুল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব মাওলানা মুফতি তৈয়ব হোসাইন, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াসেল, মাওলানা আলতাফ হোসাইন, হাটহাজারী মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস আল্লামা ফোরকান আহমেদ, মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা হাজি মোজাম্মেল হক, মহানগর সহ-সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ আলী, মাওলানা ইমাম শরীফ, মাওলানা আলমগীর, মাওলানা ফয়সাল তাজ, মাওলানা জয়নাল আবেদীন কুতুবী, মাওলানা ওসমান শাহনগরী, মাওলানা আলমগীর মাসুদ, মাওলানা নুরুল হক সুজিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর মাওলানা মুফতি আবদুল আজিজ, নেজামে ইসলাম পার্টি মহানগর সহ সভাপতি মাওলানা ক্বারী ফজলুল করীম জিহাদী, ক্বারী মাওলানা মুবিরুল হক, মাওলানা অধ্যক্ষ মুহাম্মদ ইউনুছ, মাওলানা জোনাঈদ জওহার, মাওলানা আবু তাহের, মাওলানা মুহাম্মদ হানিফ, মাওলানা আশরাফ বিন ইয়াকুব, মাওলানা রফিকুল ইসলাম বোয়ালী, মাওলানা মুহাম্মদ ইউছুফ, মাওলানা, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, , মাওলানা নুর উদ্দীন, মাওলানা ওসমান কাসেমী, মাওলানা জমিরুদ্দীন, মাওলানা আতীক মুহাম্মদ প্রমুখ।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ