মুফতি মুহাম্মাদ রাশিদুল হক
লেখক ও মাদরাসা শিক্ষক
মিয়ানমারে আরাকান রাজ্যের রোহিঙ্গা মুসলিম গণহত্যা বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত একটি বিষয়। নির্যাতনের শিকার হয়ে লাখ লাখ শরণার্থী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তাদের মধ্যে নারী এবং শিশুর সংখ্যাই বেশি।
সূত্র মতে প্রায় ৮০ হাজার গর্ভবতী নারী রয়েছে। সত্যপ্রসূত নবজাতক শিশুর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চল এখন শরণার্থী ভারে নুব্জ। সেখানকার মানবিক বিপর্যয় অবর্ণনীয়।
এই বিপুল জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদা পূরণ কোনো সহজ ব্যাপার নয়। বিশ্বের বিভিন্নদেশ থেকে সাহায্য আসছে। বাংলাদেশের মানুষ সার্বিক সহায়তা করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে সবাই সাধারণ খাত থেকে অর্থ ব্যয় করছেন। একটু খেয়াল করলে আমরা দানের খাতকে আরো ব্যাপক করতে পারি।
বাংলাদেশে আগত রোহিঙ্গাদের ত্রাণ প্রদানের লক্ষে আমরা যাকাতের অর্থ ব্যয় করতে পারি। অগ্রিম যাকাত প্রদান করেও এধরনের মানবিক সংকটাপন্ন লোকদের পাশে দাঁড়াতে পারি। তাদের যাকাত প্রদানকারী একদিকে যেমন যাকাত প্রদানের সাওয়াব পাবেন, অন্যদিকে মানবিক সহায়তা দানের সাওয়াবও পেয়ে যাবেন।
তবে এখাতে যাকাতের অর্থ প্রদানের ক্ষেত্রে লক্ষ রাখার মতো কিছু বিষয় রয়েছে। চলমান বছরের যাকাত বা আগত বছরের অগ্রিম যাকাত যেন সঠিকঅর্থে আদায় হয় সে বিষয়টিও বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
সতর্কতা এক. প্রদত্ত জিনিসে গ্রহিতার একক মালিকানা প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। যেমন, খাদ্য-পানীয়, পোশাকাদী, কাঁথা-কম্বল, থালা-বাসন, হাড়ি-পাতিল, ওষুধ-পত্র ইত্যাদি ক্রয় করে তাদের মালিক বানিয়ে দিতে হবে।
সতর্কতা দুই. টয়লেট, তাবু, রাস্তা, মসজিদ ইত্যাদি গণস্বার্থমূলক খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করলে যাকাত আদায় হয় না। তাই এসকল খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করতে চাইলে, এক্ষেত্রে যাকাত সহীহ হওয়ার জন্য শরীয়তসম্মত উপযুক্ত উপায় অবলম্বন করতে অভিজ্ঞ উলামায়ে কেরামের সাথে পরামর্শ করা যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: -সূরা বাকারা, আয়াত ১৬৭; সূরা মায়েদা, আয়াত ১৯৫; সূরা তাওবা, আয়াত ৬১; বুখারী শরীফ, হাদীস:১৪৭৯; মুসলিম শরীফ, হাদীস: ১০৪৯; বাদায়েউস সানায়ে ২/১৫০; ফাতাওয়ায়ে তাতারখানিয়া৩/১৮৪; ফাতওয়া আলওল ওলীজীয়া ১/১৭৯; আলবাহরুর রায়েক ২/৪৩৫; রদ্দুল মুহতার ৩/২৯১
ফতোয়া বিন্যাস: জামে‘আ ইসলামিয়া দারুল উলুম ঢাকা-এর ফতোয়া গবেষকবৃন্দ।