আওয়ার ইসলাম : আন্তর্জাতিক চাপের মুখে মিয়ানমার সরকার জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছে। এজন্য একটি কমিটি গঠন করেছে মিয়ানমার।
প্রেসিডেন্টের অফিসের এক বিবৃতিতে কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়েছে। খবর এপির
রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তদন্তে গত বছর জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করা হয়। অং সান সু চি কফি আনানকে ওই কমিশনের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন এবং তাদের সুপারিশ বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন।
এপির রিপোর্টে বলা হচ্ছে, মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে মঙ্গলবার একটি বিবৃতি দেয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, ‘ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটি অব রাখাইন এডভাইজরি কমিটি’ নামে ১৫ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি ‘রোহিঙ্গা এলাকাগুলোতে এই কমিটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রোহিঙ্গা অধ্যূষিত অঞ্চলে সামাজিক সম্পর্কের বিষয়ে কাজ করবে। পাশাপশি তারা জাতিগত সংখ্যালঘু বসবাসকারীদের গ্রাম এবং উচ্ছেদ হওয়া মানুষদের শিবিরে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার কাজ করবে।’
মিয়ানমার আনান কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে পুরনো নাগরিকত্ব আইনকেই উপজীব্য করার কথা জানিয়েছে। প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দেশটির নাগরিকত্ব আইনকে উপজীব্য করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর মানুষদের বাছাইয়ের কাজ শুরু হবে যেন তাদের নাগরিকতার সুযোগ তৈরি হয়।
১৯৮২ সালের বিতর্কিত বর্ণবাদী নাগরিকত্ব আইনে মিয়ানমারের প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার নাগরিকত্ব অস্বীকার করা হয়। এতে মিয়ানমারে বসবাসকারীদের Citizen, Associate এবং Naturalized পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এমনকি দেশটির সরকার তাদের প্রাচীন নৃগোষ্ঠী হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়নি। ১৮২৩ সালের পরে আগতদের Associate আর ১৯৮২ সালে নতুনভাবে দরখাস্তকারীদের Naturalized বলে আখ্যা দেওয়া হয়। ওই আইনের ৪ নম্বর প্রভিশনে আরও শর্ত দেওয়া হয়, কোনও জাতিগোষ্ঠী রাষ্ট্রের নাগরিক কি না, তা আইন-আদালত নয়; নির্ধারণ করবে সরকারের নীতি-নির্ধারণী সংস্থা ‘কাউন্সিল অব স্টেট’। এ আইনের কারণে রোহিঙ্গারা ভাসমান জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হয়।