মাহমুদুল হাসান, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
মিয়ানমারের আরাকান প্রদেশে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের উপর গণহত্যা ও পৈশাচিক নির্যাতনের প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জে আল্লামা আনোয়াশাহ’র নেতৃত্বে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সকাল ১০ টা থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদ চত্বর থেকে বের হয়ে কালীবাড়ি মোড় ও আখড়া বাজার হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিন করে শহীদী মসজিদ চত্বরে জমায়েত হয়ে বক্তব্য ও দুআর মাধ্যমে শেষ হয়।
আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার মুহাদ্দিস মুফতি আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কিশোরগঞ্জ আলেম উলামা পরিষদের সভাপতি ও ঐতিহাসিক শহীদি মসজিদের খতিব আল্লামা আনোয়ার শাহ।
তিনি বলেন, যারা মানুষের প্রতি দয়া করে না আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করবেন না। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান করে বলেন, আপনি যথাসাধ্য রোহিঙ্গাদের সাহায্য করবেন, আল্লাহ আপনার সহায় হবেন।
তিনি তৌহিদী জনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের সরকার ও প্রশাসন রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অবস্থান করতে দিয়েছে। রোহিঙ্গাদের আজ ঘর নেই, খাবার নেই, পরার মত পোশাক নেই। তারা আমাদের ভাই, তাই আসুন সবাই যথাসাধ্য রোহিঙ্গাদের সাহায্যে এগিয়ে আসি।
তিনি বলেন, আমাদের কিশোরগঞ্জ আলেম উলামা পরিষদের উদ্যোগে ত্রাণ কালেকশান হচ্ছে, আপনারা যথাসাধ্য অর্থ দিয়ে তাদের সহযোগিতা করবেন।
বিক্ষোভ মিছিলে শহরের তৌহিদী জনতা, মাদরাসার ছাত্রসহ মানবতাপ্রেমী মানুষ যোগ দেন।
আরাকানের মংডুতে লাশের নদীর সন্ধান!
হাসান হাফিজ: বার্মা-বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা মংডুর শাহাব বাজারে একটি লাশের নদীর সন্ধান পেয়েছে রোহিঙ্গারা ।
গতকাল বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের একটি দল গোপনীয়ভাবে তাদের গ্রামে খাদ্যদ্রব্য নিতে আসলে পথ হারিয়ে ফেলে। দূর্গম পাহাড়ি পথ মাড়িয়ে সম্মুখে যেতে যেতে একটি নদীর পাড়ে গিয়ে থামে তারা। বাতাসে দূর্গন্ধ ভেসে আসায় নদীর পাড় ধরে এগিয়ে যায় রোহিঙ্গারা। এসময় নদীর হাটুজলে লাশের পর লাশ ভাসতে দেখে ভড়কে যায় দলটি।
প্রত্যক্ষদর্শী রোহিঙ্গা দলটির ভাষ্য, নারী, শিশু ও পুরুষের অগণিত লাশ পড়ে আছে ওই নদীতে। লাশের বিদ্ঘুটে পঁচা গন্ধ বাতাসে ছড়িয়ে পড়েছে। শেয়াল-কুকুরের খাওয়া লাশের হাড়গোড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিলের ধারে ও নদীর পাড়ে। সব লাশই রোহিঙ্গার বলে জানান তারা। তাদের ধারণা পাঁচশো’র চেয়ে কম হবে না লাশের সংখ্যা।
প্রত্যক্ষদর্শী দলটি আরো জানান, নদীটি টেকনাফের নাফ নদীর কোন শাখা নদী হতে পারে। শাহাব বাজারের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদিটির সাতকাইন্না পাড়া এলাকায় লাশগুলো ফেলা হয়েছে বলে আন্দাজ করছে তারা।
উল্লেখ্য, ২৪ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া চলমান সেনাবাহিনীর গণহত্যায় হাজার হাজার রোহিঙ্গা হত্যার শিকার হয়েছে। এদের অনেকের লাশ গণকবর দিয়েছে সৈন্যরা। আবার অনেক লাশ জঙ্গলে ও লোকালয় থেকে বিচ্ছিন্ন নদীতে ফেলে দেয়। এ লাশগুলোও সৈন্যরা হত্যা পরবর্তী ফেলে দিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সূত্র: আরাকান টিভি