মুফতি জহির ইবনে মুসলিম : মুফতি মুতীউর রহমানের সঙ্গে আমার পরিচয় প্রায় আশির দশকের শেষভাবে। আমি তখন মালিবাগ জামিয়ার ছাত্র। তিনি পড়েন সিলেটের কাজির বাজার মাদরাসায়। লাজনাতুব তলাবার প্রোগ্রামে ঢাকায় আসতেন। তখন আমাদের মাঝে কথা হতো। মতবিনিময় হতো। বয়সে তিনি ছিলেন বড় কিন্তু সম্পর্ক ছিলো বন্ধুসুলভ। চিন্তার দিক থেকে আমরা ছিলাম একাত্মা। আমি যতোদিন বেঁচে থাকবো তার চিন্তা ও আদর্শকে ধারণ করে রাখবো।
এরপর তিনি ও আমি যেখানেই থাকতাম না কেনো আমাদের মাঝে যোগাযোগ অব্যাহত ছিলো। বিভিন্ন জাতীয় সংকটে তার সঙ্গে আমাদের মধ্যে মতবিনিময় হতো। জাতির সামনে কোনো নতুন প্রশ্ন আসলে তিনি কলম হাতে তুলে নিতেন। আধুনিক ফিকহের এমন অনেক বিষয় রয়েছে যে ব্যাপারে মুফতি মুতীউর রহমানের আগে কেউ কলম ধরেন নি। যেমন ডিএনএ টেস্ট ও পুলিশের রিমান্ড।
তাঁর চলে যাওয়ার ক্ষতি পূরণযোগ্য নয়
মুফতি মুতীউর রহমান ছিলেন বিশাল চিন্তা-চেতনার অধিকারী। বয়সের তুলনায় তার চিন্তা চেতনা অনেক বেশি অগ্রসর ছিলো। লেখক, শিক্ষক ও প্রতিশ্রুতিশীল প্রথাবিরোধী আলেম ছিলেন তিনি। মুফতি মুতীউর রহমানের আগে কোনো আলেম জাতীয় বাজেট নিয়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণ করেছেন বলে আমি জানি না।
তিনি একজন চিন্তাশীল আলেম ছিলেন। তিনি তার লেখনি, দরস ও বয়ানের মাধ্যমে নিজের চিন্তা চেতনা ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন।
দুর্ভাগ্যের বিষয় তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ হয়ে কষ্ট করেছেন। কিন্তু তার পাশে যেভাবে আমাদের থাকা প্রয়োজন ছিলো আমরা সেভাবে থাকতে পারি নি। এ ব্যর্থতা আমার ও আমাদের সবার।
আমি মহান আল্লাহর দরবারের তার আত্মার মাগফিরাত ও জান্নাতে উচ্চ মর্যাদা কামনা করি। আল্লাহ তার পরিবারকে ধৈর্য্য ধারণের তাওফিক দিন। আমিন।