গাইবান্ধায় বন্যার পানি কমতে থাকলেও বাড়ছে বন্যার্ত মানুষের দুর্ভোগ। দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে দুমুঠো খাবারের জন্য লাইন দিয়ে অপেক্ষা করেছেন দুর্গত মানুষগুলো। মানবিক সাহায্যার্থে কে কখন খাবার বিতরণ করবেন এনিয়ে অপেক্ষার শেষ নেই তাদের।
জেলার সাদুল্যাপুর মডেল সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয় নেয়া বানভাসিরা খাবারের আশায় চাতক পাখির মতো অপেক্ষায় রয়েছেন। শুরু হয়েছে হাহাকার। প্রয়োজনের তুলনায় ত্রাণসামগ্রী কম থাকায় দুর্ভোগ উঠেছে চরমে।
এদিকে, জেলায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও গো-খাদ্যের অভাব। গৃহপালিত গরু, ছাগল ও হাঁস-মুরগি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন বন্যার্ত মানুষগুলো। নিজেদের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করতেই ত্রাহি অবস্থা, সেখানে এগুলো নিয়ে কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। অনেকে তাই পানির দরে বিক্রি করে দিচ্ছেন গবাদিপশু।
নানা রোগের প্রাদুর্ভাবও দেখা দিয়েছে। কয়েক জায়গায় সরকারিভাবে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল।
বুধবার সকাল পর্যন্ত সময়ে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর তীব্র স্রোতে বেশ কয়েকটি বাঁধে ধস দেখা গেছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা বলেছেন, আপাতত এই ধসে আশঙ্কার কিছু না থাকলেও নদীতে আরও পানি কমলে হুমকির মুখে পড়তে পারে বাঁধগুলো।
গাইবান্ধা পাউবো কার্যালয় থেকে জানা গেছে, সকাল ৬টায় ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার নিচে, ঘাঘট নদীর পানি ১৫ সেন্টিমিটার নিচে ও করতোয়া নদীর পানি বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান বলেন, “নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধির আর কোনও সম্ভাবনা নেই। ব্যাপকহারে কমছে ঘাঘট ও করতোয়ার পানি। বিভিন্ন স্থানে ভাঙন রোধে নানা পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।”
জেলা প্রশাসক গৌতম চন্দ্র পাল জানান, বন্যাকবলিত প্রতিটি উপজেলায় বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ চলছে। আগামী ২৪ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাইবান্ধা আসছেন বলে তিনি জানান।