আওয়ার ইসলাম: সামনে ঈদুল আজহা। সামর্থ্যবানরা নিশ্চয়ই কুরবানির পশু (গরু, মহিষ, ছাগল ইত্যাদি) কেনার কথা ভাবছেন। সবার মনে একটা বিষয়ই উঁকিঝুঁকি মারে, সুস্থ সবল পশু কীভাবে চিনব?
বর্তমানে অনেকেই স্টেরয়েড ব্যবহার করে কোরবানির পশুকে অসদুপায়ে মোটাতাজা করে বিক্রি করে। এতে প্রতারিত হন ক্রেতারা। ক্রেতারা যাতে প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য বিশেষজ্ঞরা কিছু পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
কিছু বৈশিষ্ট্যের দিকে নজর দিলে সহজেই চেনা যাবে সুস্থ-সবল কুরবানির পশু। যেমন- পশুর চোখ উজ্জ্বল ও তুলনামূলক বড় আকৃতির হবে। অবসরে জাবর কাটবে (পান চিবানোর মত)। কান নাড়াবে, লেজ দিয়ে মাছি তাড়াবে। বিরক্ত করলে প্রতিক্রিয়া দেখাবে, সহজেই রেগে যাবে। গোবর স্বাভাবিক থাকবে, পাতলা পায়খানার মতো হবে না। দেখতে প্রাণবন্ত, চামড়া ঝকঝকে দেখাবে। নাকের ওপরটা ভেজা ভেজা মনে হবে, সামনে খাবার এগিয়ে ধরলে জিহ্বা দিয়ে দ্রুত টেনে নিতে চাইবে।
অন্যদিকে অসুস্থ পশু ভালোমতো খেতে চাইবে না।দূর-দূরান্ত থেকে যানবাহনের মাধ্যমে বা হাঁটিয়ে পশু বিক্রি করতে নিয়ে আসা হয়। এই দীর্ঘ যাত্রার কারণে পশুকে বেশ ধকল সহ্য করতে হয়। পশু বেশ ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই অনেক সময় শুয়ে পরে এবং সহজে উঠতে চায় না। তার মানে এই নয় যে, প্রাণীটা খুবই অসুস্থ।
এ ব্যাপারে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মোফাজ্জল হোসাইন বলেন, এ সময় পশুকে বিরক্ত না করে পর্যাপ্ত (প্রায় ৮-১০ ঘণ্টা) বিশ্রামের সুযোগ দেয়া উচিত এবং তার খাবারের সুব্যবস্থা করতে হবে। সামনে ঘাস জাতীয় খাবার ও পানি রাখা যেতে পারে, প্রয়োজনে সে গ্রহণ করবে।
তিনি আরও অভিমত প্রকাশ করেন, যেসব পশুকে স্টেরয়েড বা মোটাতাজাকরণের ওষুধ প্রয়োগ করে বিক্রি করা হয়, সেগুলোর শরীরে পানি জমে ফুলে ওঠে। পানির প্রতি আকর্ষণ বেশি থাকে। লেজ দিয়ে মাছিও খুব একটা তাড়াতে দেখা যায় না। খাবারও তুলনামূলকভাবে কম খায়। আঙ্গুল দিয়ে শরীরের মাংসালো অংশে চাপ দিলে আঙ্গুল পশুর শরীরে দেবে যাবে এবং সহজের পর্যাপ্ত পানির উপস্থিতি টের পাওয়া যাবে।
নির্ধারণ হলো কুরবানির পশুর চামড়ার দাম
কুরবানির জন্য দেশে গরু, মহিষ, ছাগল প্রভৃতি পশু বা প্রাণীর চাহিদা ব্যাপক। পূর্বে প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকেও অনেক গশু আমদানি করা হত।
প্রাণীসম্পদ অধিদফতরের তথ্য মতে, কুরবানির চাহিদা মোতাবেক দেশে এখন পর্যাপ্ত সংখ্যক পশু রয়েছে। পশু ক্রয় থেকে শুরু করে মাংস ভক্ষণ পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে গুরুত্ব দিতে হবে সর্বক্ষেত্রে। রোগব্যাধির প্রকোপ বেশি হলে প্রাণী চিকিৎসকদের পরামর্শ নেয়াই উত্তম।