জামিল আহমদ : গতকাল মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) প্রকাশ পেয়েছে দাওরায়ে হাদিস (মাস্টার্স) এর ফলাফল। এতে মহিলা বিভাগে ঈর্ষণীয় ফলাফল করে শীর্ষে রয়েছে ঢাকার রামপুরা জাতীয় মহিলা মাদরাসা।
মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে সেরা ১০ এ স্থান পেয়েছেন ৩ জন। তালিকায় মাদরাসার শিক্ষার্থীরা যথাক্রমে ১ম, ৩য়, ও ৬ষ্ঠ স্থানে রয়েছেন।
চলতি বছর রামপুরা জাতীয় মহিলা মাদরাসা থেকে ৩২ জন শিক্ষার্থী দাওরায়ে হাদিসের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৪ জন মুমতাজ, ৬ জন জায়্যিদ জিদ্দান, ১৫ জন জায়্যিদ, ৭ জন মকবুল মার্ক পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন।
১৯৯২ সালে সৈয়দ ফজলুুল করীম পীর সাহে চরমোনাই রহ. তার কিছু খলীফা কে নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন এ মাদরাসা, আর নাম রাখেন রামপুরা জাতীয় মহিলা মাদরাসা।
প্রতিষ্ঠাকালিন শায়েখের চিন্তা ছিল বাংলাদেশে তো বড় কোন মহিলা মাদরাসা নেই, যদি মহিলা মাদরাসা ঢাকায় প্রতিষ্ঠা করতে পারি তাহলে ঢাকার কিছু মা বোনও আল্লাহ ওয়ালা হতে পারবে। শুধু ইলমি যোগ্যতাই নয় প্রতিটি ছাত্রীকে আল্লাহওয়ালা করে তোলাই প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ। ঠিক এ উদ্দেশ্য সামনে রেখেই এগুচ্ছে মাদরাসাটি এবং প্রতিবছর মেধার স্বাক্ষর রেখে যাচ্ছে।
সৈয়দ ফজলুুল করীম পীর সাহেব চরমোনাই রহ. মাদরাসা প্রতিষ্ঠা পর মাদরাসার মূল দায়িত্ব ছিল শায়খের হুজুরের হাতেই। তিনিই ছিলেন এর প্রথম মুহতামিম। পরবর্তীতে বার্ধক্যজনিত কারণে অবসরে গেলে দায়িত্ব দেয়া হয় সোনার গাঁও‘র মাওলানা সানাউল্লাহ রহ. এর নিকট। তিনি কয়েক বছর পর্যন্ত এর দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৯৮ সাল থেকে সৈয়দ ফজলুুল করীম পীর সাহে চরমোনাই রহ. এর অত্যন্ত স্নেহভাজন ও সুযোগ্য খলিফা মাওলানা সৈয়দ ইসহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের মাদরাসা পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
পরবর্তীতে ২০০৯ সালে থেকে সৈয়দ ফজলুুল করীম পীর সাহে চরমোনাই রহ বড় সাহেবজাদা সৈয়দ মুমতাজুল করীম মুশতাক আজ অবধি মুহতামিমের দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
২০০২ সালে এসে মাওলানা সৈয়দ ইসহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের সর্বপ্রথম মাদরাসাকে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সাথে যুক্ত করে বেফাকের সিলেবাস অনুযায়ী তালিমের ধারা চালু করেন।১৯৯৫ দাওরায়ে হাদিসের দরস চালু হয়। প্রথম শায়খুল হাদিস হিসেবে ছিলেন সোনারগাঁ‘র মাওলানা সানাউল্লাহ রহ. এবং বর্তমান শায়খুল হাদিস হিসেবে আছেন জামিয়া শারইয়্যাহ মালিবাগের শায়খুল হাদিস আল্লামা জাফর আহমদ ।
প্রতিষ্ঠানটির ধারাবাহিক সাফল্যের কারণ জানতে যোগাযোগ করা হলে মাদরাসার মুহাদ্দিস ও শিক্ষা সচিব মুফতি হোসাইন আহমদ বলেন, আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানী যে মাদরাসাটি ধারাবাহিকভাবে সফলতা অর্জন করে আসছে। আর এর পেছনে পীর সাহেব চরমোনাই রহ.সহ আল্লাহওয়ালাদের নেক নজর বিশেষভাবে প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করি।
এছাড়া মাদরাসার সুযোগ্য মুহতামিম সৈয়দ মুহাম্মদ মুমতাজুল করীম মুশতাক সাহেবের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা এ মাদরাসাকে এগিয়ে নিয়েছে। এর সঙ্গে আছে মাদরাসার সকল শিক্ষক-শিক্ষিকার অক্লান্ত পরিশ্রম।
প্রতিষ্ঠানটি প্রিন্সিপাল সৈয়দ মুহাম্মদ মুমতাজুল করীম মুশতাক আওয়ার ইসলামকে বলেন, সফলতা আল্লাহ পাকের রহমত ও বরকতেই সম্ভব। এছাড়া শিক্ষক শিক্ষিকাদের অক্লান্ত মেহনত ও ছাত্রীদের প্রচেষ্টাই তো রয়েছেই।
তিনি বলেন, আমরা এ উদ্দেশ্য সামনে রেখে ছাত্রীদের পেছনে মেহনত করি যেন এখানকার প্রত্যেক ছাত্রী ভালো শিক্ষিকা ও আল্লাহওয়ালা মা হতে পারে। কারও যেন ইলম ও আমলে দুর্বলতা না থাকে।
যে কারণে মেধা তালিকায় বরাবরই শীর্ষে বাইতুল উলুম ঢালকানগর