আতাউর রহমান খসরু : চিকিৎসা মানব জীবনের মৌলিক চাহিদার একটি। আমাদের দেশে এখনো সাধারণ মানুষের নাগালে বাইরে চিকিৎসা সেবা।বিশেষত আবাসিক ও অনাবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। দেশের কয়েকটি পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে আবাসিক চিকিৎসক থাকলেও অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীগণ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত।
আর মাদরাসাগুলোতে এর ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। দেশের অন্যতম দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী ছাত্র-শিক্ষকের এ মৌলিক চাহিদা পূরণের উদ্যোগ নিয়েছে।
দেশের প্রথম দীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে হাটহাজারী মাদরাসা নিজস্ব হাসপাতাল নির্মাণ করছে। চলতি বছরের শুরুতে মাদরাসার নিজস্ব অর্থায়নে ‘আল-মঈন’ নামে এ হাসপাতালের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এগিয়ে চলছে দ্রুত গতিতে।
জানা যায়, ৬ তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবনের দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হয়েছে। কিছু দিনের মধ্যেই হবে তৃতীয় তলার ছাদ ঢালাই। জামিয়ার পশ্চিম পাশে আবাসিক এরিয়ার খালি জায়গায় গড়ে উঠছে সাড়ে চার হাজার বর্গফুট আয়তনের বিশাল এই হাসপাতাল।
হাসপাতাল নির্মাণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লামা আহমদ শফীর প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ আওয়ার ইসলামকে বলেন, ‘নির্মাণাধীন হাসপাতাল আল্লামা আহমদ শফীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন। তিনি চান মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক-সাধারণ মানুষ যেনো চিকিৎসার অভাবে কষ্ট না পায়।’
‘ছয় তলা বিশিষ্ট একটি আধুনিক মানের হাসপাতাল নির্মাণ আমাদের লক্ষ্য। তবে আপাতত তিনতলা করা হবে। হাসপাতালের মান হবে সরকারি উপজেলা হাসপাতাল পর্যায়ের।’ বলে জানান তিনি।
হাসপাতালে মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের আউটডোর চিকিৎসা গ্রহণের সুযোগ থাকবে। সেখানে ছাত্র-শিক্ষক ও বিত্তহীন সাধারণ মানুষের ফ্রি বা নামমাত্র মূল্যে স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করা হবে।
হাসপাতালের চিকিৎসার মান নিশ্চিত করতে অভিজ্ঞ ও দীনদার চিকিৎসকদের সমন্বয়ে একটি উচ্চতর পরিষদ গঠন করা হবে এবং বিত্তহীন ও অসহায় মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করতে গঠন করা হবে একটি কল্যাণ ফান্ড। এ ফান্ডের মাধ্যমে অসহায় রোগীদের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
মিডিয়া নিয়ে আমাদের আক্ষেপ ও কিছু বাস্তবতা
হাসপাতালের প্রস্তুতি হিসেবে গত বছর থেকে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক প্রতিদিন মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান করছেন বলেনও জানান মাওলানা মুনির আহমদ।
তিনি বলেন, ‘আপাতত তিনি মাদরাসার একটি কক্ষে রোগী দেখছেন। মূল হাসপাতাল ভবনের নিচ তলায় রুম তৈরি হচ্ছে। সেখানে চেম্বার প্রস্তুত হলে তিনি সেখানেই রোগী দেখবেন।’
কবে নাগাদ হাসপাতালের কাজ শেষ হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘অনেক বড় কাজ। এ পর্যন্ত ৬৫ লক্ষ টাকার অধিক খরচ হয়েছে। কাজ সম্পন্ন করতে আরো প্রায় ৩ কোটি টাকার প্রয়োজন হবে। ঠিক কবে কাজ শেষ হবে তা বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে দ্রুততম সময়ে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি।’
বর্তমানে হাসপাতালগুলোতে যেখানে নানা অভিযোগ আর অনিয়ম সেখানে আল মুঈন কর্তৃপক্ষের আশা তারা সাধারণ মানুষকে অগ্রাধিকার দিয়ে একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার হাসপাতাল গড়ে তুলবেন।
জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর নতুন শিক্ষাবর্ষের দরস শুরু
-আরআর