আওয়ার ইসলাম : শরীরকে চাঙ্গা রাখতে সকাল সকাল রসুন খাওয়া শুরু করেছেন? বেশ বেশ! এই অভ্য়াসটি বাস্তবিকই স্বাস্থ্য়কর। তবে সমস্যা একটা জায়গাতেই। রসুন খেলে যে সারা দিন মুখ আর গা থেকে কেমন বাজে রকমের একটা গন্ধ ছাড়ে। এই কারণেই তো অনেকে রসুন খাওয়া শুরু করেও মাঝ রাস্তায় ছেড়ে দেন। ফলে হাতের কাছে রোগ মুক্তির উপায় থাকলেও অনেকেই সামাজিকতার খাতিরে সেটিকে ব্যবহার করতে পারেন না। তবে এই সমস্যারও সমাধান আছে। আর সেই নিয়েই আলোচনা করা হবে এই প্রবন্ধে।
চিকিৎসকেরা রসুনকে "সুপার ফুড" হিসেবে গণ্য করে থাকেন। কেন জানেন? কারণ এই শতকের সবথেকে ভয়ঙ্কর দুটি রোগ, ব্লাড প্রেসার এবং হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা কমায় রসুন। সেই সঙ্গে শরীরে যাতে বাজে কোলেস্টেরল জমতে না পারে সেদিকেও খেয়াল রাখে।
এবার প্রশ্ন হল, রসুনকে কীভাবে ব্যবহার করলে তার উপকারিতাও পাওয়া যাবে, আবার গা এবং মুখ থেকে বদ গন্ধও বেরবে না? উপায়টি খুব সহজ! রসুনটা কাঁচা না খেয়ে একটু ভেজে নিন। তাহলেই দেখবেন কেল্লাফতে! তবে পেটের সমস্যা থাকলে এই পদ্ধতিতে রসুন খাওয়ার আগে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন। এবার চলুনি জেনে নেওয়া যাক ভাজা রসুন খাওযার পর পর শরীরে কেমন সব পরিবর্তন হয়, সে সম্পর্কে।
খাওয়ার ১ ঘন্টা পরে: প্রথম এক ঘন্টায় শরীর বাকি খাবারের মতোই ভাজা রসুনে হজম করার চেষ্টা চালায়। এই সময় এই মশলার অন্দরে লুকিয়ে থাকা একাধিক পুষ্টিকর উপাদান শরীরে মিশতে শুরু করে।
২-৪ ঘন্টা পর: এই সময়ে রসুনে উপস্থিত অ্যান্টি ক্যান্সার এজেন্ট শরীরে নিজের কাজ শুরু করে দেয়। সেই সঙ্গে এই মশলাটিতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্টও নিজের কাজে লেগে যায়। এই উপাদানটি শরীরে উপস্থিত একাধিক ক্ষতিকর টক্সিনকে বার করে দেয়। ফলে রোগমুক্তির পথ প্রশস্ত হয়।
৪-৬ ঘন্টার পর: আমাদের শরীরে "টি সেল" নামে একটি কোষ রয়েছে, যা নানাবিধ রোগের হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে। ভাজা রসুন খাওয়ার ৪-৬ ঘন্টা পরে মশলাটি "টি" সেলের কর্মক্ষমতাকে বাড়াতে শুরু করে। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আরও শক্তাশালী হয়ে ওঠে। প্রসঙ্গত, এই সময় রশুন আমাদের শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত মেদকে ঝরাতে শুরু করে। ফলে ওজন কমার প্রক্রিয়া আরও ত্বরান্বিত হয়।
৬-৭ ঘন্টা পর: রসুনে উপস্থিত অ্যান্টি-ব্য়াকটেরিয়াল এজেন্ট এই সময় নিজের কাজ শুরু করে। ফলে শরীরের অন্দর জীবাণুমুক্ত হয়ে ওঠে।
৬-১০ ঘন্টা পর: রসুনে উপস্থিত একাধিক পুষ্টিকর উপাদানকে এই সময় শরীর শোষণ করে নেয়। ফলে দেহে পুষ্টির অভাব দূর হয়। সেই সঙ্গে শরীর রোগমুক্তির পথে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়।
আর কী উপকারে লাগে রসুন: শরীরে জমে থাকা টক্সিনদের বের করে দেয়। সেই সঙ্গে হাড়কে মজবুত করতেও রসুন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, কোষেদের আয়ু বৃদ্ধি করে দেহের গঠনেও এই মশলাটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
প্রতিদিন রসুন খেলে আর কী উপকার পাওয়া য়ায়? এমন অভ্যাস করলে ক্লান্তি দূর হয়, শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে, হার্টের রোগ হওয়ার আশঙ্কা হ্রাস পায় এবং দৈহিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়।
-এজেড