শাহনূর শাহীন: সেক্যুলারদের দাবির প্রেক্ষিতে শেষ পর্যন্ত প্রাথমিকের পাঠ্য বইয়ের বর্ণ পরিচয়ে ‘ও তে ওড়না’ থাকছে না। জানা গেছে আগামী শিক্ষাবর্ষে নতুন বই আসছে শিক্ষার্থীদের হাতে। আর এতে নারীদের নিত্য ব্যবহৃত বস্তু ওড়না থাকছে না।
যদিও হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো সেক্যুলারদের এমন দাবিকে সাম্প্রদায়িক বলেছিল। কারণ ওড়না নারীদের চিরকালীন পোশাক। সেটিতে কোনো ধর্মীয় ছাপও নেই। অথচ একই পাঠ্য বইয়ে হিন্দুদের রথ যাত্রা ও ঋষির ছবি দিয়ে র ও ঋ বর্ণের পরিচয় দেয়া হয়েছে। যাকে আলেমরা সাম্প্রদায়িক বলে দাবি জানিয়েছিলেন।
তবে সংশোধিত পাঠ্যবইয়ে ওড়না বাতিল হলেও বাতিল হচ্ছে না রথ ও ঋষি কোনটাই।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত সংশোধনী কমিটি হেফাজতে ইসলামসহ ইসলামি সংগঠনের দাবির প্রেক্ষিতে পাঠ্যপুস্তকে গত বছর যেসব গল্প ও কবিতা বাদ দেয়া হয়েছে সেগুলো পুনরায় সংযোজনের সুপারিশ করেছে বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে সংশোধন কমিটির সদস্য অধ্যাপক এম এম আকাশ মিডিয়াকে বলেন, ইসলামপন্থী বিশেষজ্ঞদের দাবি অনুযায়ী বাদ দেওয়া বিষয়গুলো পুনঃস্থাপনের প্রস্তাব করবে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
ওড়না পরিবর্তনের ব্যাপারে শিক্ষাবিদরা বলেন, প্রথম শ্রেণির একজন শিশু শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থার সাথে ‘ও’তে ওড়না শেখানোর বিষয়টি অসংগতিপূর্ণ। এটি শিশুর কোমল মনে বিরুপ প্রভাব ফেলবে।
চলতি বছরের শুরুতেই পাঠ্য বই বিতরণের পর থেকে শুরু হয় তুমুল বিতর্ক ও সমালোচনা। এছাড়াও একই বইয়ের ওই পাঠ্যে অ’তে অজ চেনাতে ছাগলের ছবি ব্যাবহার করা হয়। ছবিতে দেখা যায় ছাগলটি গাছে উঠছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল বিতর্ক ও হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে গত এপ্রিলে নবম-দশম শ্রেণির ১২টি বই সুখপাঠ্য করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ১২টি কমিটি গঠন করে। ওই কমিটি ভুলে ভরা বই সংশোধন করে কিছু প্রস্তবনা তুলে ধরেছেন।
সংশোধনীতে ‘ও’তে ওড়নার পরিবর্তে ওজন সংযুক্ত করা হয়েছে। ছবি হিসেবে ওজন পরিমাপক যন্ত্রের উপর একটি মেয়ে শিশুর দাঁড়িয়ে থাকা চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে এবং এছাড়া ছাগলের গাছে উঠার চিত্রের পরিবর্তে গাছের নিচে ছাগল দাঁড়িয়ে থাকার চিত্র ব্যবহার করা হয়েছে।
এছাড়াও তৃতীয় শ্রেণির ‘আমার বাংলা বই’য়ে কবি কুসুম কুমারী দাসের ‘আদর্শ ছেলে’ কবিতার ভুল সংশোধনসহ অন্যান্য ত্রুটি-বিচ্যাুতি দূর করা হয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, বইগুলো সুখপাঠ্য করার জন্য শিক্ষাবিদদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের সুপারিশ পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এসএস/