শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬


মুসলমানদের প্রথম কিবলায় অব্যাহত ইসরাইলি হঠকারিতা ও ফিলিস্তিনিদের প্রতিক্রিয়া

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুসলমানদের প্রথম কিবলা তথা আলআকসা মসজিদে ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের নামাজ পড়তে দিচ্ছে না ইহুদিবাদী ইসরাইল।

ফিলিস্তিন স্বশাসন কর্তৃপক্ষ এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ইসরাইলের এই পদক্ষেপ সব ধরনের আন্তর্জাতিক আইন ও ইশতেহারের লঙ্ঘন এবং তা সব মানবীয় মূল্যবোধ ও নৈতিকতারও পরিপন্থী।

এর আগে ফিলিস্তিনি সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরাইলি পুলিশ কোনো মুসল্লিকেই আল-আকসা মসজিদে নামাজ পড়তে দিচ্ছে না।

ফিলিস্তিনি বিশেষজ্ঞ মুহাম্মাদ জাদাল্লাহ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ইসরাইল এ পদক্ষেপের মাধ্যমে এটাই বোঝাতে চায় যে আল-আকসা মসজিদের ওপর এখন আর মুসলমান ও ফিলিস্তিনিদের কর্তৃত্ব নেই, বরং তা এখন পুরোপুরি ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ফিলিস্তিনিরা আজ নিজ ভূমিতেই পরবাসী। সেখানে মুসলমানদের স্থাপনা এবং পবিত্র স্থানগুলোও আজ ইসরাইলি দখলদারিত্বের নাগপাশে থাকায় প্রায়ই নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা ও অমর্যাদার শিকার হচ্ছে। যেমন, মুসলমানদের পবিত্র স্থানগুলোতে ইহুদিবাদীরাও যখন তখন প্রবেশ করে কথিত ইহুদি ধর্মীয় উৎসব ও উপাসনা পালন করছে। তারা এইসব স্থানে আজান দেয়া নিষিদ্ধ করেছে।

অথচ প্রায় এক বছর আগে জাতিসংঘের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো বলেছিল, আল-আকসা মসজিদসহ বায়তুল মুকাদ্দাস শহরের ইসলামী স্থাপনাগুলোর সঙ্গে ইহুদিদের কোনো ধরনের ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইসরাইল আল-আকসা মসজিদসহ আলকুদসের ইসলামী স্থাপনাগুলোয় ইহুদিবাদীদের কর্তৃত্ব ও সেগুলোর ইহুদিকরণের তৎপরতা দিনকে দিন জোরদার করেই চলেছে। নানা ধরনের ইহুদি উৎসবের অজুহাতে আল-আকসা মসজিদ এবং তার আশপাশে বছরের প্রায় ২০০ দিনই মুসলমানদের যাতায়াত নিষিদ্ধ করে রেখেছে ইসরাইল।

মুসলমানদের প্রথম কিবলার নানা অংশকে ইহুদিদের সম্পত্তি বলে দাবি করছে ইসরাইল। ইসরাইল এইসব অংশকে আল-আকসা থেকে বিচ্ছিন্ন করতে চায়। এ ছাড়াও আশপাশে ইহুদি স্থাপনার সংস্কার বা উন্নয়ন তৎপরতার অজুহাত দেখিয়ে সুড়ঙ্গ খোঁড়াসহ নানা ধরনের খনন-কাজ চালিয়ে ইসরাইল আল-আকসা মসজিদের অস্তিত্ব বিপন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

ইসরাইল ১৯৯৪ সালে জর্দানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত এক চুক্তি অনুযায়ী এ অঙ্গীকার করেছিল যে ইহুদিবাদীরা কখনও আলআকসা মসজিদের সীমানায় প্রবেশ করবে না।

লক্ষণীয় বিষয় হল ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার পর থেকে তারই ইশারায় ইসরাইল বায়তুল মোকাদ্দাস শহরসহ ফিলিস্তিনি অঞ্চলগুলোতে ইসরাইলের নানা হঠকারিতা ও ষড়যন্ত্র বিপজ্জনক পর্যায়ে জোরদার হয়েছে। মনে হচ্ছে ট্রাম্পের সহযোগিতা নিয়ে বর্ণবাদী ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এ অঞ্চলে ফিলিস্তিনি মুসলমানসহ অ-ইহুদিদেরকে সব ধর্মীয় অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে চায়।

‘হাফেজ্জি হুজুর আব্বাজানকে বললেন, তুমি বিকল্প প্রাইমারির ব্যবস্থা করো’

অবশ্য সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে বিশেষ করে বিশ্ব কুদস দিবস পালন ও একই দিনে আল-আকসা মসজিদে বিপুল সংখ্যক ফিলিস্তিনির জুমা নামাজ আদায়ের পর থেকে ইসরাইলি ষড়যন্ত্রগুলো অতীতের চেয়েও অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে এবং কুদস-কেন্দ্রীক গণজাগরণও জোরদার হয়েছে। ইসরাইল বহু বছর থেকেই আল-আকসার ওপর ইহুদিবাদী কর্তৃত্বকে পাকাপোক্ত করার চেষ্টা চালিয়ে আসলেও ফিলিস্তিনি জাগরণ জোরদার হওয়ায় ও কুদস-দিবসের ব্যাপক সমাবেশের কারণে তা করতে ব্যর্থ হয়েছে।

২০১৫ সালে শুরু-হওয়া কুদস-কেন্দ্রীক ইন্তিফাদা বা গণজাগরণ ক্রমেই তীব্র হতে থাকায় এটা স্পষ্ট, ফিলিস্তিনি জনগণ বায়তুল মুকাদ্দাসকে রাজধানী করে যে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গড়তে চায় তা থেকে তারা এক বিন্দুও পিছু হটবে না।

সূত্র: পার্সটুডে


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ