আওয়ার ইসলাম: বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে আগামী ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটকে বিশ্বব্যাংকের এক পর্যালোচনায় উচ্চাভিলাসী ও রাজস্ব আদায়কে কষ্টসাধ্য বলে উল্লেখ করা হয়।
আগারগাঁওস্থ সংস্থার নিজস্ব কার্যালয়ে বাজেট আলোচনায় আজ মঙ্গলবার বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে এই পর্যালোচনা দেওয়া হয়। পর্যালোচনা তুলে ধরেন সংস্থার ঢাকা অফিসের প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন। বক্তব্য রাখেন কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান, রাজশ্রী পারালকার, মেহরিন এ মাহবুব।
পর্যালাচনায় বলা হয়, এই বাজেটে আশা দীর্ঘ, কিন্তু আশ্বাস সংক্ষিপ্ত। বাজেটে খরচের তেমন কোনো চমক নেই।সংস্কারের স্বীকৃতি আছে, উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেই।
পর্যালোচনায় ড. জাহিদ বলেন, রাজস্ব আদায় নির্ভর করছে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের ওপর। তারপর আয়করের ওপর। আয়কর খাতে সংস্কার নেই। ফলে আদায়ের প্রত্যাশা কম। আমদানি শুল্কের ক্ষেত্রে সরলীকরণ করা হয়নি। রাজস্ব আদায়টি মিশ্র ঝুড়ি বলা যায়।
তিনি বলেন, ব্যয়ের ৮০ ভাগ বরাদ্দ যাবে সুদ, বেতন, ভর্তুকি ও ট্রান্সফার খাতে। আবার সুদ খাতে যা ব্যয় হবে তার ৪৭.৫ শতাংশ যাবে সঞ্চয়পত্রের সুদ খাতে।
তিনি জানান, চালের দাম বৃদ্ধির কারণে খাদ্যে ভর্তুকি বাড়বে। কিন্তু অন্যান্য খাতে বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানে যে ভর্তুকি দিচ্ছি তা কতদিন চলবে? পিডিবির লোকসান রয়েই গেছে। বিদ্যুত খাতের অব্যবস্থাপনা ও অদক্ষতার উন্নয়ন না হলে এই ভর্তুকি কমানো যাবে না। তিনি বলেন, এডিপি বাস্তবায়নে কোনো অগ্রগতি দেখছি না। বছর বছর প্রকল্প সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু প্রকল্প সমাপ্ত হচ্ছে। টেন্ডারিং এ প্রতিযোগিতার অভাবের কারণে প্রকল্প ব্যয় বাড়ছে।
বিশ্বব্যাংক বলছে, বাজেটে কাঠামোগত সংস্কারের আলোচনা কম। বিশেষ করে আর্থিক খাতের সংস্কারের আলোচনা আসেনি। ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার কমিয়ে আনার কোনো কথা বলা হয়নি। চিমিয়াও ফান বলেন, বাজেট খুবই উচ্চাভিলাসী। এমনকি সামষ্টিক অর্থনীতির লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাসী। ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে কষ্টভোগ করতে হবে সরকারকে। ৩১.৮ শতাংশ রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা কঠিন হবে। সরকারকে কাঠামোগত সংস্কার ও বিনিয়োগের পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
এসএস/