উবায়দুর রহমান খান নদভী
গত কয়েক বছরের মত এবারও রমজান শুরু হল আর বাংলাদেশ জান্নাতি মেঘের ছায়ায় ঢেকে গেল। কঠিন গরম, প্রচন্ড দাবদাহ বদলে গেল ঝিরঝির বৃষ্টি, প্রবল বর্ষণ, হালকা গরম, তেজহীন রোদ, কড়া রোদ-ছায়া আর নাতিশীতোষ্ণ মিশ্র বাতাবরনের খেলায়।
এবার রমজান শুরু হয় মূর্তিসংস্কৃতি তথা শিরক পক্ষের সাথে তওহীদি মানুষের বিরোধ সঙ্গে করে। প্রধানমন্ত্রী যেন আগুনে পানি ঢেলে দিলেন। সুপ্রিম কোর্টের মূর্তিকে সদর থেকে সরিয়ে নেয়া হল অন্দর মহলে। মুসলমানরা মেনে নেয়নি। ধর্ম নিরপেক্ষতার ভুল ব্যাখাকারী শক্তি মূর্তির প্রেমে পাগলপারা হয়ে জ্ঞান হারাবার দশা। প্রধানমন্ত্রী তাদের সতর্ক করে দিয়ে বললেন, আমার মতামতের বিরুদ্ধে গিয়ে আমার যেসব মন্ত্রী বক্তব্য দিয়েছেন লজ্জা থাকলে তারা পদত্যাগ করতেন।
তিনি আরো বলেন, সেক্যুলারিজমের কথা বলেন আবার মদ গাঁজা ও শূকরের মাংস খান তাদের কথা জনগণ গ্রহণ করবেনা। দলমত নির্বিশেষে জনগণ এ ধরনের কথায় স্বস্তি লাভ করে। তারা সরকারের শিরক বিরোধী ভূমিকা দেখতে চায়। তারা চায় নাস্তিক মুরতাদ ও ভণ্ড সেক্যুলারদের পতন। তারা মদ গাঁজা ও শূকরের মাংস খাওয়া প্রগতিবাদীদের শাস্তি ও পতন চায়। কারণ বাংলাদেশ এসব কুলাঙ্গারের নয়। এরা এ দেশের ১ পার্সেন্ট মানুষেরও প্রতিনিধি নয়। এ দেশ ধার্মিক মানুষের। যে ধর্মই হোক, এ দেশবাসী ৯৯.৯ মানুষ ধর্মে বিশ্বাসী। তারা ধার্মিক। যে সত্যটি বুঝে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী রাজনীতিকদের এ দেশে রাজনীতি করতে হবে। আর ৯২ ভাগ মানুষের ধর্ম ইসলামকে এখানে থাকতে হবে তার মর্যাদা নিয়ে।
ভাবসম্পদ আহরণে বাউলরা বিচরণ করেন। ভাবুক ও চারণ কবিরা ঘুরে বেড়ান। কথা ও কবিতায় প্রকাশ করেন মনের অনুভূতি। লেখক ও দার্শনিকরা অভিব্যক্তি তুলে ধরেন যুগে যুগে বিশ্বব্যাপী। নানা ভাষায় নানা ভঙ্গিমায়। পবিত্র কোরআনে বাউল ভাবুক লেখক কবি ও দার্শনিকদের বিষয়ে মহান আল্লাহ তায়ালা সূরা শুআরার শেষভাগে যা বলেছেন, এর মর্মাথ এই, ‘আমার প্রতি ঈমানদার, নেক আমলকারী ও অধিক জিকিরকারী কবি ভাবুক ও দার্শনিক ছাড়া বাকিদের অধিকাংশই প্রতি উপত্যকা ও চরাচরে অর্থহীন ঘুরে বেড়ায় এবং তারা যা করেনা তাই বলে বেড়ায় আর বিপুল পথহারা লোকজন তাদের অনুসরণ করে, যারা নিজেরা সত্যপথ না পেয়ে উদভ্রান্তের মত পথ খুঁজছে।’ এর পাশাপাশি বিশ্বব্যাপী আরেকটি ধারার লোকজনও ঘুরছেন। যারা সুস্পষ্ট পথের দিশাপ্রাপ্ত।
যারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর উপর বিশ্বাসী। আল্লাহর নৈকট্য সান্নিধ্য ও পরিচয়ে ধন্য। যাদের ভাবনা দর্শন কথা ও কবিতায় কোন সন্ধান, সংশয়, আবছায়াভাব বা জটিলতা নেই। যারা আল্লাহর জিকির ও তার কুদরত সৃষ্টি প্রকৃতি ও গুণাবলী নিয়ে গভীর শিক্ষনীয় ভাবনায় নিমজ্জিত। যাদের স্বচ্ছ ভাবনা ও আত্মিক প্রভাবে পৃথিবীর মানুষ ব্যাপক আকারে প্রভাবিত। স্রষ্টা খালেক মালেক, পরম করুণাময় দয়ালু রহমান ও রহীমের ভালবাসার বাণী নিয়ে এরা ঘুরে বেড়ান। প্রিয়নবীর (সা:) মায়াময় সুন্নাহ বা সামগ্রিক জীবনশৈলি পূর্ণিমার চাঁদের আলোর মত, ভোরের নির্মল সমিরণের মত মানবতার হাটে অকৃপন বিলিয়ে চলেন।
এদের আধ্যাত্মিক আশিসের ফলেই ইন্দোনেশিয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মুসলমান। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সমুদ্র। দ্বীপাঞ্চল, বন জঙ্গল ও জনপদে লাখো কোটি মুসলমান। উপমহাদেশেই এখন ৮০ কোটি মুসলমান। বাংলাদেশে শতকরা ৯২ ভাগেরও বেশি মুসলমান। এসব আল্লাহপ্রেমিক ভাবুক কবি লেখক দার্শনিক আলেমদের কমন পরিচয় শাইখ।
অর্থাৎ জ্ঞানবৃদ্ধ, ধর্মীয় সাধক, সাত্তি¡ক, পথপ্রদর্শক। ফারসি ভাষায় পীর। আবরীতে শাইখ, মুরশিদ, ওস্তাদ, মুরব্বী। ওলী দরবেশ পীর আওলিয়া সূফি সাধক যাই বলি না কেন বিষয় ওই একই।
এসব মনীষীর পদধূলিতে বাংলা দেশ ধন্য। হাজার বছর ধরে তারাই নির্মাণ করেছেন এ দেশের মন মনন সমাজ সংস্কৃতি ভূগোল ও রাষ্ট্র। ৬১৭ খৃস্টাব্দে চীনে গমনকারী সাহাবীদের একটি দলের মাধ্যমে বাংলাদেশে ইসলাম প্রবেশ করে। যা প্রিয়নবী (সা:)-এর মদীনায় হিজরতেরও ৫ বছর আগের কথা। নবী করীম (সা:) মক্কা ছেড়ে মদীনায় হিজরত করেন ৬২২ খৃস্টাব্দে। এর পর থেকে ইসলামকে আর থেমে থাকতে হয়নি। শাইখ, পীর ও মুরশিদদের প্রেমময় উপস্থিতি, গমনাগমন, প্রচারণা ও মানবিকতাপূর্ণ সাধনায় বাংলাদেশ ধীরে ধীরে মহান ইসলামের দ্বিতীয় মাতৃভূমিতে পরিণত হয়।
[দেশের তৃতীয় শক্তি হতে পারে ইসলামি শক্তি: উবায়দুর রহমান খান নদভী]
বাংলাদেশের আকাশে বাতাসে, প্রাণ ও প্রকৃতিতে সে মহান বাণীবাহকদের পবিত্র নি:শ্বাস, হৃদয়ের আকুতি, জিকিরের ধ্বনি, আজান ও তিলাওয়াতের সূর, শেষ রাতের তাহাজ্জুদে সিজদায় প্রবাহিত চোখের পানির ছোঁয়া যেন এখনও অনুভব করা যায়। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়ার যে কোন জনপদে, পথে প্রান্তরে, হাওর বিল বাগান বাঁশঝাড়ে, গৃহস্থের ঘরে, শষ্যের ক্ষেতে আপনি কান পেতে শুনতে পাবেন সেই পবিত্র মদীনার বার্তা প্রচারকদের উচ্চারণের অনুরণন। যখন সুযোগ হয় ঘুরে দেখবেন। এখন আপাতত ঠাঁয় বসেই চোখ বুজে দেখুন, নৈশব্দে কান পেতে শুনুন, কী স্পষ্ট শোনা যায় সাধকদের সত্য উচ্চারণের ধ্বনি। কত সুমধুর মর্মস্পশী পূণ্য আত্মার বাণী।
পবিত্র রমজান মাসে সারা বছরের রুটিন বদলে ফেলতে হয়। শর্করার নিয়ন্ত্রনহীন ওঠানামা কঠিন যন্ত্রণা হয়ে আছে বহু বছর ধরে। চিকিৎসা শাস্ত্র বলে, রোজা ছেড়ে দাও। যে কোন সময় শর্করা মাত্রাতিরিক্ত কমে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। এত আতংক দুশ্চিন্তা ও মাপজোক বাদ দিয়ে আল্লাহের নাম নিয়ে রোজা রেখে যাচ্ছি। বেশি পরিশ্রম বা নড়াচড়া না করে দিনটা কাটিয়ে দেয়া, টুকটাক লেখালেখি, তিলাওয়াত, আর অফিস বাসা করেই দিন শেষ। রাতে নামাজ তিলাওয়াত জিকির মুনাজাত। এর মধ্যে যে বিষয়টি চেপে বসে তা হল, ইফতার মাহফিলে উপস্থিতি।
রমজানের প্রথম ২/৪ দিন যেতেই শুরু হয় নানা দল সংগঠন সংস্থা প্রতিষ্ঠান ও সোসাইটির ইফতার প্রোগ্রাম, চলে ইতেকাফ তথা শবে কদরের সময়কাল আসা পর্যন্ত। মানে ৫ রমজান থেকে ২৫ রমজান এ ক’টি দিন থাকে ইফতারের দাওয়াত। যার কোনটিই ব্যক্তিগত বা পারিবাকি নয়। সাংগঠনিক ও সামাজিক। এ বছর প্রতিদিন গড়ে ৩টি করে দাওয়াত পড়েছে। কোন কোন দিন ৫টি পর্যন্ত আছে। শরীর ভাল থাকলে আর কাছাকাছি জায়গায় হলে অন্তত তিনটিতে যোগ দিতে চেষ্টা করি। দু’টিতে বক্তব্য রেখে শেষটিতে ইফতার গ্রহণ করি।
ইফতারও ইনসুলিনের ভিত্তিতে বাধকতাযুক্ত বাছাই কিছুই করা যায়। বাহারি ইফতার ও মনের মত ভোজনপর্ব এখন আর চলে না। এরই মধ্যে রমজানে ঢাকার বাইরে যাওয়া নয়, ঢাকায় থেকে কম পরিশ্রমে রোজাগুলো পালন। ছিল ইচ্ছা রুটিনের এমন পরিবর্তন। কিন্তু দীনের কাজের প্রতি মমতা আর অতীত মুরব্বীদের কঠিন সাধনা এমনকি যুদ্ধের জন্যও রমজানকে বেছে নেয়ার ঐতিহ্য দুর্বল অন্তরকেও ঝাঁকুনি দিয়ে যায়। প্রাণের চেয়েও বেশি ভালবাসেন এমন কিছু মুরব্বী, বন্ধু, শিষ্য, শাগরেদ, ভক্তনিয়ে একসাথে ইফতার আর একরাত তারাবী কিয়ামুল্লাইল জিকির দোয়ার মধ্যে শবগুজারির আহবানে সাড়া না দিয়ে পারা যায়না।
তাছাড়া দেশব্যাপী দীনি কাজে এক অসাধারণ অভিভাবক রমজানের বিভিন্ন আধ্যাত্মিক সফরের স্পন্সর হওয়ায় যাওয়া আসার সহজ সুযোগে রমজানেও চট্টগ্রাম রাজশাহী সফর করতে হয়। খুলনা সিলেট বরিশালের কথাও ভাবছি।
এতসব কথার উদ্দেশ্য একটিই। বলতে চাইছি, বাংলাদেশে পীর আওলিয়া উলামা মাশায়েখের গড়া পবিত্র পরিবেশ ও সংস্কৃতি এই রমজানে যেন পূর্ণরূপে মূর্ত হয়ে উঠেছে। চট্টগ্রাম রাজশাহী তো সবেমাত্র দেখা। চোখের সামনে আছে ময়মনসিংহ, সিলেট, যশোর, কুষ্টিয়া, কুমিল্লা, বরিশাল, বগুড়া, রংপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, খুলনাসহ গোটা বাংলাদেশ।
৬৪টি জেলা ৯০ হাজার গ্রাম। রাজধানীর প্রায় দুই কোটি মানুষের জীবনে রমজান যেন এক ঐশী আবহ নিয়ে এসেছে। কিছুদিন ধরে শুরু হয়েছে মহল্লার মসজিদে ইফতার আয়োজন। ছেলে বুড়ো, যুব তরুণ, পথচারী মুসাফির, মুসল্লী, মেহমান ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি মিলে মিশে ইফতার চলছে রোজার ৩০ দিন। দশজনের তহবিলে যুক্ত হচ্ছে বিভিন্ন বাসা বাড়ির পাঠানো ইফতার সামগ্রী। তালিকা করে ৩০ দিনের সুযোগ নিচ্ছেন ৩০ জন বা সম্মিলিতভাবে সবাই।
[ট্রাম্পের জয় প্রমাণ করল মার্কিনিরা অসভ্যতাকেই সমর্থন করে: উবায়দুর রহমান খান নদভী]
কী অপূর্ব সম্প্রীতি, মায়া মমতা মানবতা ও পূণ্যময় মধুর সম্মিলন। হিংসা বিদ্বেষ বৈরিতা ও বিরোধে ভরা সমাজে রমজান নিয়ে এসেছে ভ্রাতৃত্ব বন্ধুত্ব সৌহার্দ্য ও শ্রদ্ধা-ভালবাসার বহু কাংখিত এক আবহ। রমজানের এ দেশ যেন অন্য এক বাংলাদেশ। এক প্রার্থিত মায়াবী স্বদেশ।
ইফতারির এ মহতি আয়োজন বড় করে করা হয় রাজধানীর গাউসুল আজম মসজিদ কমপ্লেক্স মহাখালিতে। আরব ইসলামী স্বাপত্য শৈলির এ বিরাটায়তন মসজিদে প্রতিদিন হাজার দুয়েক রোজাদার ইফতার করেন।
মহিলা মসজিদেও থাকে আলাদা ইফতারি। সুরম্য মসজিদ, ছাদখোলা চত্বর, পাশের সাহান, সমতল ময়দান সর্বত্র পুণ্যার্থীদের ভীড়। কী সুশৃংখল আয়োজন। ২/১’ শ মেহমান নতুন চলে এলেও কোন বিরক্তি বা অনাদর নেই। কিছুদিন যাবত ইফতারির এ দৃশ্য জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমেও দেখা যাচ্ছে । শিক্ষিত অভিজাত যুবকরা, এলাকার তরুণসমাজ স্বেচ্ছাসেবী হয়ে পৌছে দিচ্ছে নবাগতের ইফতারী।
যারা নাস্তিক মুরতাদদের দলে ভিড়ে নামাজ রোজা ছেড়ে মদ গাঁজা আর বেহায়াপনা নামক সংস্কৃতি নিয়ে টাল হয়ে থাকার কথা তারা যখন রোজা রেখে অন্য রোজাদারদের গরীব মিসকিনসহ ধনী গরীব সকলের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত বরকতময় ইফতারির থালা বাসন ও তৈজষপত্রটানে তখনও কি বোঝা যায় না, বাংলাদেশ এখন কোন্ দিকে এগুচ্ছে।
বাংলাদেশ ধ্বংসকারী পরগাছা বুদ্ধিজীবীদের এতে কলজে কেটে যায়। তাদের শত চেষ্টায়ও এ দেশের ছাত্র যুব সমাজ তথাকথিত প্রগতিশীল (অর্থাৎ নাস্তিক মুরতাদ অবিশ্বাসী ও চরিত্রহীন) না হয়ে হচ্ছে দাদা দাদি নানা নানি ও মা বাবার মত নামাজি, রোজাদার হচ্ছে। শত চেষ্টায়ও। নতুন প্রজন্মকে ফ্রি সেক্স, পাশ্চাত্য অর্থে ছেলে বন্ধু, মেয়ে বন্ধু, ডেটিং, লিভটুগেদার, মাদকাসক্তি, অশ্লীলতা, বেহায়াপনাসহ সকল অপসংস্কৃতির সবক দেয়া সত্তেও পবিত্র রমজান এলে তারা ভাল মানুষ ও ভাল মুসলমান হয়ে যায়। বাবা মার কথা শোনে, বড়দের সেবা করে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে যায়, জুমার সময় পাগলপারা হয়ে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে বারান্দায়, রাস্তায় বা ফুটপাতে পর্যন্ত মহান আল্লাহর উদ্দেশ্যে সিজদারত হয়।
তারা দলবেঁধে শরিক হয় দীর্ঘ তারাবির নামাজে। শোনে পূরো কোরআনের সাবলীল তিলাওয়াত। শবে কদরে ঈদে পঙ্গপালের মত গোটা বাংলাদেশ ভেঙে পড়ে আল্লাহর রহমত, ক্ষমা ও মুক্তির আশায় মসজিদ ও ঈদগাহে। এ দৃশ্য ভাল মানুষের মনে এনে দেয় খুশির জোয়ার। ঈমানদার মানুষের হৃদয় ও চোখ ছাপিয়ে ওঠে কৃতজ্ঞতার আনন্দাশ্রুতে। আর বেঈমান ও খারাপ লোকেরা অশ্রæপাত করে দু:খ বেদনা হতাশা ও ব্যর্থতার ভার নিয়ে। ঠিক শয়তানের মত, যেমন ইবলিস ও তার বাহিনী সম্পর্কে হাদীসে এসেছে। কোন বান্দা নেক আমল করলে তাদের গায়ে আগুন লেগে যায়। তেমনই আগুন লাগে মদ গাঁজা ও শূকরের মাংস খাওয়া সংস্কৃতিবিদ ও নেতাদের গায়ে। যাদের কথা প্রধান মন্ত্রী বলেছেন।
নারীরা ঘরে ঘরে রোজা, সাহরি, ইফতারি, তারাবি, নামাজ, বন্দেগী, জিকির, তিলাওয়াত, দান, সদকা দোয়া মুনাজাতের পাশপাশি যেমন সংসারের কাজগুলো রমজানের ছাঁচে ঠেলে নেন পুরুষেরাও তাদের সব কাজ রমজানের মত করে সাজিয়ে নেন। তরুণ যুবক ছাত্র ও পেশাজীবীরা যেন ধর্মীয় আবহে এক পুন্যময় ক্লাবিং এর সুযোগ পান এ মাসে। এক সাথে ইফতার, সাহরিতে পরস্পরে সজাগ করা, এক সাথে রেস্তোঁরায় সাহরি, দলবেধে তারাবি, নামাজ শেষে হালকা নাস্তা, চা, পান ইত্যাদিতে কাটে পুণ্যময় সময়। পবিত্র এ আড্ডায় কোন বাজে প্রসঙ্গ বা অশালীন উক্তি থাকেনা। এ সময়ের কথাবার্তা, তর্ক বিতর্ক, গল্প গুজবও হয় দীন ঈমান নামাজ রোজা সংক্রান্ত। এ যেন এক রহমত মাগফেরাত বিধৌত পুণ্যময় বাংলাদেশ। এ যেন ঐশী বারিবর্ষনে সিক্ত স্নিগ্ধ সুরভিত অনন্য বাংলাদেশ।
[ইসলাম বিদ্বেষীরা পালাবারও পথ পাবে না]
আমি দুর্বল শরীর নিয়েও এ দেশের পথ হেঁটে পাড়ি দিতে সাহসী হই। দীর্ঘ মসৃন সবুজ সুন্দর বাতাবরনে সরল আধ্যাত্মিক পথ। যে পথে দেখতে পাই ৩৬০ আওলিয়া, বার আওয়ালিয়া, হযরত শাহজালাল, হযরত শাহপরান, হযরত শাহমখদুম, শাহ সুলতান মাহি সওয়ার, খান জাহান আলী, শাহ আলী বাগদাদি, শাহ কমরুদিন রুমি (রহ.) প্রমুখ মহাত্মার প্রিয় পদরেখা।
যে পথ ধরে হাটছেন আজকের বাংলাদেশের কওমি আলিয়ার লাখো আলেম। ৫ লাখ মসজিদের অন্তত ১৫ লাখ জনশক্তি। হাজারো মাদরাসা ও অসংখ্য দরবারের কোটি কোটি ভক্ত। নীরব রাতের প্রহরে কলকাকলি ভরা সাহরি, আধার নিশিতে আলোয় আলোয় ভরা কিয়ামুল্লাইল বা তাহাজ্জুদ আমার হৃদয়ে বাজে ওহীর আলোকমালা হয়ে। চেয়ে যেমন চারপাশের দৃশ্য দেখি। চোখে বুজেও দেখতে পাই অনন্য বাংলাদেশের অপরূপ সৌন্দর্যের ফলিত বিস্তৃত রূপ।
সুত্র: ইনকিলাব।
এসএস/