সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

হায়েজা ও ইস্তিহাজা মহিলার নামায ও রোযার হুকুম কী?

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: এক মহিলার রমজান মাসে রাতের বেলা খুবই অল্প পরিমাণে হায়েজ হলো, আবার ভোররাতে সে হায়েজ এর কোন চিহ্ন দেখতে পেলনা, সে রোজা রেখে দিল। সারাদিন তার কোন হায়েজ হলোনা, আবার রাতের বেলা আগের মতই খুবই অল্প পরিমাণে হলো। আবার ভোররাতে সে রোজা রেখে দিল।

এভাবেই কয়েকদিন চলতে থাকলো। মোটকথা তার রাতের বেলা খুবই অল্প পরিমাণে হায়েজ হয় কিন্তু সারাদিন আর কোন হায়েজ এর চিহ্ন পাওয়া যায় না। এভাবে অনবরত চলতে থাকে। এখন এই মহিলার নামাজ রোজার হুকুম কি? সে যে রোজা গুলো রেখেছে সেগুলো হবে কি?  তিনদিনের কম হায়েজ হলে তার হুকুম কি?

উত্তর

بسم الله الرحمن الرحيم

যদি উক্ত মহিলার পূর্ব থেকে হায়েজের সময়সীমা নির্ধারিত থাকে, তাহলে উক্ত সময়টা হায়েজ ধরা হবে। বাকি দিনগুলো ইস্তিহাজার হুকুমে হবে।

আর যদি সময় নির্দিষ্ট না থাকে, তাহলে দশদিন পর্যন্ত হায়েজ ধরা হবে। এর পর থেকে ইস্তিহাজার হুকুম হবে।।

হায়েজ অবস্থায় নামায পড়া যায় না। রোযাও রাখা যাবে না। তবে পরবর্তীতে রোযার কাযা করতে হবে। কিন্তু নামাযের কাযা করতে হবে না।

আর ইস্তিহাজার সময়টিতে নামায ও রোযা সবই করতে হবে।

উদাহরণতঃ

যারা অনবরত উক্ত পদ্ধতিতে রক্ত আসতে থাকে, তার যদি পূর্ব নির্ধারিত সময় হয় ৫দিন। তাহলে রক্ত আসার সময় থেকে ৫দিন হায়েজ ধরা হবে। এর পর থেকে ইস্তিহাজা। পরের মাসেও ৫দিন হায়েজ। বাকি দিনগুলো ইস্তিহাজা হিসেবে গণ্য হবে।

আর যদি সময় নির্ধারিত না থাকে, তাহলে দশদিন হায়েজ। বাকি দিনগুলো ইস্তিহাজা ধরবে।

فَإِنْ لَمْ يُجَاوِزْ الْعَشَرَةَ فَالطُّهْرُ وَالدَّمُ كِلَاهُمَا حَيْضٌ سَوَاءٌ كَانَتْ مُبْتَدَأَةً أَوْ مُعْتَادَةً وَإِنْ جَاوَزَ الْعَشَرَةَ فَفِي الْمُبْتَدَأَةِ حَيْضُهَا عَشَرَةُ أَيَّامٍ وَفِي الْمُعْتَادَةِ مَعْرُوفَتُهَا فِي الْحَيْضِ حَيْضٌ وَالطُّهْرُ طُهْرٌ. هَكَذَا فِي السِّرَاجِ الْوَهَّاجِ. (الفتاوى الهندية، كتاب الطهارة، الْبَابُ السَّادِسُ فِي الدِّمَاءِ الْمُخْتَصَّةِ بِالنِّسَاءِ وَفِيهِ أَرْبَعَةُ فُصُولٍ، الْفَصْلُ الثَّالِثُ فِي الِاسْتِحَاضَةِ-1/37)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَيْسَ إِذَا حَاضَتْ لَمْ تُصَلِّ وَلَمْ تَصُمْ، فَذَلِكَ نُقْصَانُ دِينِهَا»

হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, হায়েজা মহিলা নামায পড়বে না এবং রোযা রাখবে না, এটা কি ঠিক নয়? আর এটাই তাদের দ্বীনের ত্রুটি। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-১৯৫১]

عَنْ مُعَاذَةَ، قَالَتْ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ فَقُلْتُ: مَا بَالُ الْحَائِضِ تَقْضِي الصَّوْمَ، وَلَا تَقْضِي الصَّلَاةَ. فَقَالَتْ: أَحَرُورِيَّةٌ أَنْتِ؟ قُلْتُ: لَسْتُ بِحَرُورِيَّةٍ، وَلَكِنِّي أَسْأَلُ. قَالَتْ: «كَانَ يُصِيبُنَا ذَلِكَ، فَنُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّوْمِ، وَلَا نُؤْمَرُ بِقَضَاءِ الصَّلَاةِ»

হযরত মুআজা বলেন, আমি আয়শা রাঃ কে জিজ্ঞাসা করলাম-হায়েজার হুকুম কী? সে কি রোযার কাযা করবে? নামাযের কাযা করবে না? আম্মাজান বললেন- তুমি হারুরিয়ার অধিবাসী? আমি বললাম- নাহ।আমিই প্রশ্ন করছি। তিনি বললেন- “আমাদের এমন হলে, আমাদের রোযার কাযার আদেশ দেয়া হতো, কিন্তু নামাযের কাযার নির্দেশ দেয়া হতো না। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৩৩৫]

উপরোক্ত আলোচনার আলোকে আপনার প্রশ্নের উত্তর হলঃ

আগে থেকে হায়েজের সময় নির্ধারিত থাকলে সেই নির্ধারিত সময় পর্যন্ত রোযা ও নামায হয়নি। নামায আর পরে কাযা করতে হবে না কিন্তু রোজাগুলো রমজানের পর কাযা করতে হবে।

নির্দিষ্ট সময় অতিক্রম করার পরের সময় রোযাও রাখতে হবে, নামাযও পড়তে হবে।

আর যদি সময় নির্দিষ্ট না থাকে, তাহলে লাগাতার এভাবে চলতে থাকলে দশদিন পর্যন্ত হায়েজ ধরা হবে। এ সময় রোযা ও নামায হয়নি বলে সাব্যস্ত হবে। পরবর্তীতে রোযার কাযা করতে হবে নামাযের লাগবে না।

দশ দিন অতিক্রম করার পরের রোযা ও নামায বিশুদ্ধ হবে।

তিনদিনের কম হায়েজ হয় না। হায়েজের সর্বনিম্ন সময়সীমা হল তিন দিন। হায়েজের রক্ত যদি এর আগেই বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে সেটিকে ইস্তিহাজা ধরা হবে। অর্থাৎ এর দ্বারা নামায ও রোযা মাফ হবে না।

সুত্র: http://ahlehaqmedia.com

এসএস/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ