মুহাম্মদ ইনআমুল হাসান
অতিথি লেখক, আওয়ার ইসলাম
পৃথিবীর মানচিত্রে ছোট্ট একটি দেশ কাতার। ব্যাপ্তিতে ছোটো হলেও কাতারের জলে-স্থলে রয়েছে বিপুল পরিমাণ সম্পদ।
কাতারের খনিজ সম্পদের নাম তো বিশ্বজোড়া, এমনকি এই খনিজ সম্পদের ওপর ভর করেই কাতার আজ বিশ্বের এক নম্বর ধনী দেশ।
খনিজ সম্পদের পাশাপাশি দেশটিতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ মৎস সম্পদ। যা এর অধিবাসীদের চাহিদা বেশ সহজেই পূরণ করতে সক্ষম হয়। উল্লেখ্য, তেল আবিস্কারের পূর্বে মৎস শিকারই ছিলো কাতারিদের আয়ের একমাত্র উৎস।
হাতেগোণা যে কয়টি সমুদ্র-সৈকত রয়েছে কাতারে তার মধ্যে আল-খূর সমুদ্র-সৈকত অন্যতম। এখানে বেড়াতে এলে দর্শনার্থীদের চোখে সহজেই যে বিষয়টি ধরা পড়ে তা হলো, তীরে ভিড়ানো বহু সংখ্যক মাছ ধরা নৌকা, ট্রলার এবং ছোটোছোটো স্পীডবোট।
হাজার হাজার জেলে প্রতিদিন এই নৌযানগুলোতে চড়ে সমুদ্রের অগভীর অংশে মৎস শিকার করে এবং 'আল-খূর ফিস মার্কেট' এসে সেগুলো বিক্রি করে।
আল-খূরের মাছ বাজার সারা কাতারে প্রসিদ্ধ। ফজরের নামাযের পরপর এখানে গেলে চমৎকার এক অভিজ্ঞতা অর্জন হয়। আমাদের দেশে, বিশেষ করে শহরের ফুটপাতগুলোতে হকাররা যেভাবে হাক ছেড়ে ছেড়ে জামা-কাপড় বিক্রি করে থাকেন এখানেও ঠিক সেভাবেই ছোটো হ্যান্ড মাইকে ডেকে ডেকে নিলামের মাধ্যমে মাছ বিক্রি করা হয়। ভারতের কেরেলা রাজ্যের এক যুবক দরাজ গলায় প্রতিদিন ভোরে নিলাম ডাকার কষ্টসাধ্য এই কাজটি করে থাকেন। ব্যাপারটা আনন্দের বেশ খোরাক যোগায় দর্শকদের; বিশেষ করে আরবিতে তার সংখ্যা বলার ধরণটা একেবারেই ভিন্ন।
নিলাম ডাকার আওয়াজটা দূর থেকে শুনলে সামরিক বাহিনীর প্যারেডের সময় করা আওয়াজের মত মনে হবে অনেকটা। কাছে না গেলে বোঝার উপায়ই নেই যে, এটা মাছ বাজারে মাছের নিলাম ডাকার আওয়াজ!
আল-খূর মাছ বাজারে প্রতিদিন অন্তত পঞ্চাশ-ষাট পদের মাছ বিক্রি হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-আমুর, সাম, জাইশ, ইছফাতি, জুবেদি, হামাম, চেরি, ছাফি ইত্যাদি। এগুলোর মধ্যে আমুর-সাম-হামাম ইত্যাদি মাছগুলো কাতারিদের পছন্দ তালিকার শীর্ষে।
অন্যান্য মাছ বাজারের তুলনায় এখানে মাছ কিছুটা সুলভ মূল্যে ও তাজা পাওয়া যায়। যার ফলে ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি সাধারণ ক্রেতারাও প্রতিদিন ভিড় করে এখানে। অধিকাংশ ক্রেতাই বক্স ভরে ভরে কিনে নিয়ে যায় সাগরের সুস্বাদু এই মাছগুলো।
সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি চলে এই কেনাবেচা। পশ্চিমের আকাশে আঁধারের পর্দা নামার সাথে সাথেই সবাই ফেরে যার যার নীড়ে। ওদিকে আল খূরের জেলেরা নেয় প্রস্তুতি- জীবন যুদ্ধ অব্যাহত রাখার নিমিত্তে। সারারাত মাছ ধরে ফের পরদিন ভোরে তারা চলে আসবে মাছ বাজারে, আর পুনরায় সরগরম হবে মাছ বাজারের স্যাঁতসেঁতে মেঝে।
মসজিদের জায়গায় নাট্যশালা করার উদ্যোগ, মুসল্লিদের ক্ষোভ
ন্যায় বিচারের অনন্য দৃষ্টান্ত; সজনপ্রীতি করে ছেলেকে চাকরি দেয়ায় সৌদি মন্ত্রী অপসারণ