বিশ্বজুড়ে মরণঘাতি ও ভয়ংকর ব্যধির তালিকায় ক্যান্সার, এইডস, ডায়াবেটিস-এর মতো রোগগুলোকেই চিহ্নিত করা হচ্ছে দীর্ঘ দিন। কিন্তু নিঃশব্দে একটি মরণ রোগ বাসা বেঁধে আছে আমাদের ঘরে। আর এর দিকে কেউ তেমন খেয়ালও করেন না। কী সেই রোগ? সেটা হলো মানসিক অবসাদ। হ্যাঁ শুধুমাত্র অবসাদ থেকেই প্রতি বছর বিশ্বে ৮ লাখের বেশি মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। গত এক দশক ধরে এই রোগের আক্রান্তের সংখ্যাও ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন বা WHO-র একটি সমীক্ষায় এমন মারাত্মক চিত্র ফুটে উঠেছে। ২০১৫ সালের তথ্য অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রায় ৩৩ কোটি মানুষ মানসিক অবসাদে ভুগছেন। ২০০৫-এর তুলনায় সংখ্যাটি প্রায় ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আরও ২ বছরে সংখ্যাটি নিঃসন্দেহে বেড়েছে।
এ প্রসঙ্গে WHO-র প্রধান মার্গারেট চ্যান বলেন, ‘এটা বোধহয় প্রত্যেক দেশের কাছে একটি ওয়েক-আপ কল। ভাবার সময় এসেছে কী ভাবে মানসিক অবসাদে ভোগা ব্যক্তিদের দ্রুততার সঙ্গে সুস্থ করে তোলা যায়। ’
কী ভাবে বুঝবেন আপনি মানসিক অবসাদে ভুগছেন? যদি টানা বিষন্ন বোধ করেন এবং যে সব কাজ আগে করতে আনন্দ পেতেন তা এখন আর করতে উৎসাহ না পান তা হলে লক্ষণ পরিষ্কার। সাধারণ রোজকার কাজ যদি টানা ২ সপ্তাহের বেশি করতে না পারেন তবে তা মানসিক অবসাদের লক্ষণ হিসাবে গণ্য করা হয়। এমনটা বুঝলে দেরি না করে মনোবিদের সাহায্য নিন।
সমীক্ষা আরও বলছে, অবসাদের কারণে শুধুমাত্র ব্যক্তিগত জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমনটা মোটেই নয়। এর জন্য প্রোডাক্টিভিটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং অবসাদের কারণে আরও নানা জটিল রোগ শরীরে বাসা বাধে। সারা বিশ্বে এই কারণে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১ হাজার কোটি মার্কিন ডলার।
সমীক্ষার প্রধান শেখর সাক্সেনা জানাচ্ছেন, উন্নত দেশগুলিতেও মানসিক অবসাদে ভোগা প্রায় অর্ধেক মানুষ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত। উন্নয়নশীল দেশগুলিতে চিত্রটা আরও খারাপ। সেখানে সংখ্যাটা ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ। সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, এ সব মানুষদের মূল স্রোতে নিয়ে এলে তাঁদের থেকে ৪ হাজার কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের প্রোডাক্টিভিটি পাওয়া যেতে পারে।
সূত্র: এই সময়