মুফতি ফয়জুল্লাহ: কাউকে আল্লাহ্র অংশীদার সাব্যস্ত করাই হচ্ছে শিরক। কাউকেও আল্লাহর আত্মীয় স্বজন ও সমকক্ষ সাব্যস্ত করা, কারো প্রতি আল্লাহর বিশেষ গুণাবলী আরোপ করা, কাউকেও আল্লাহর ক্ষমতার অধিকারী মনে করা এবং মানুষের উপর মহান আল্লাহর যেসব অধিকার রয়েছে, সেগুলো আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেও প্রদান করা।শিরক হলো তাওহীদের পরিপন্থী।
তাওহীদ হলো আল্লাহকে এক জানা ও মানা। মহান আল্লাহ এক, তিনি একক সে বিষয়টি স্বীকার করে নেয়া। এরি বিপরীত হলো শিরক।
শিরক চার প্রকার
১. আল্লাহ্র সত্তার সাথে শিরক করা।
২. আল্লাহ্র গুণাবলীতে শিরক করা।
৩. আল্লাহ্র ক্ষমতায় শিরক করা।
৪. আল্লাহ্র অধিকারে শিরক করা।
আল্লাহ্র সত্তার সাথে শিরক করা মানে, কাউকেও আল্লাহর আত্মীয় স্বজন বা সমকক্ষ মনে করা। যেমন ইহুদীরা ওযায়েরকে আল্লাহর পুত্র মনে করে, খষ্টানরা ত্রিত্ববাদে বিশ্বাস করে, আবার কিছু লোক ফেরেশতাদেরকে আল্লাহর কন্যা সন্তান মনে করে ইত্যাদি । এভাবে আল্লাহর সত্তাকে বিভাজন করা এবং বিভাজ্য মনে করাটাই হলো আল্লাহর সত্তার সাথে শিরক করা।
আল্লাহ্র গুণাবলীতে শিরক করা মানে আল্লাহ তাঁর গুণালীর যেমনি মালিক, অন্য কাউকেও তাঁর গুণাবলীর তেমনি মালিক মনে করা। যেমন কারো সম্পর্কে এ ধারণা পোষণ করা যে, সে দৃশ্য ও অদৃশ্য সম্পর্কে একই রকম অবগত, সে সব কিছুই জানে ও শুনে, সে জীবন ও মৃত্যুর মালিক, সে জীবিকাদাতা, সে সব রকমের দোষত্রুটি ও দুর্বলতা থেকে মুক্ত, সে অলৌকিক শক্তি বলে মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে, মঙ্গল ও অমংগল সাধনে তার হাত আছে ইত্যাদি। যেমন কথিত মঙ্গল শুভ যাত্রাকে মঙ্গল ও কল্যাণকর মনে করা। মূর্তি কিংবা দেবীকে ন্যায় বিচারের প্রতীক মনে করা।
আল্লাহ্র ক্ষমতায় শিরক করা মানে আল্লাহ তা’আলা সার্বভৌম, সকল ক্ষমাতার উৎস এবং সর্বশক্তিমান হবার কারণে যেসব ক্ষমতা কেবল তাঁর সাথে সম্পৃক্ত, সেসব ক্ষমতা বা সেসব ক্ষমতার কোনোটি অন্য কারো আছে বলে স্বীকার করা। যেমন কাউকেও যা ইচ্ছে তাই করার ক্ষমতা আছে বলে মনে করা। কাউকেও বিপদ দূর করার ক্ষমতা আছে বলে মনে করা। কাউকেও সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক মনে করা। আল্লাহ ছাড়া কাউকেও আইন ও বিধান দাতা মনে করা। আল্লাহ ছাড়া আর কাউকেও কোনো কিছু হারাম করার কিংবা কোনো কিছু হালাল করার অধিকারী মনে করা।
আল্লাহর অধিকারে শিরক করা মানে, আল্লাহ মানুষের একমাত্র সৃষ্টিকর্তা, জীবনদাতা, মৃত্যুদাতা , মালিক, প্রতিপালক, পরিচালক, প্রভু, মনিব, প্রয়োজনীয সামগ্রী সরবরাহকারী, প্রতিফলদাতা, হিসাব গ্রহণকারী, ক্ষমাকারী, কঠোর শাস্তিদাতা, পুরস্কার প্রদানকারী, সাহায্যকারী, রক্ষাকারী, মোচনকারী এবং সর্ব প্রকার ভালো-মন্দের অধিকর্তা হিসেবে মানুষের উপর তাঁর যেসব বিশেষ অধিকার রয়েছে, সেসব অধিকার বা তার কোনো একটি অধিকার তাকেঁ ছাড়া অন্য কাউকেও প্রদান করা।
ওয়াল্লাহু আ'লাম।
লেখকের ফেসবুক টাইমলাইন থেকে
এসএস