আওয়ার ইসলাম: অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৭ হাজার ৮ শত ৯০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৭টি নতুন ও সংশোধিত প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
এর মধ্যে জিওবি ৩ হাজার ৮ শত ৭৬ কোটি ৩২ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ৪ হাজার ১৩ কোটি ৬৮ লাখ টাক। মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। একনেক সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং সংশ্লিষ্ট সিনিয়র সচিব ও সচিবরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল একনেক সভা শেষে সভার বিস্তারিত সাংবাদিকদের জানান । এসময় তিনি জানান, চট্টগ্রামের সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য জেলার পরিত্যক্ত সরকারি বাড়িগুলোতে আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণের একটি প্রকল্প একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, বর্তমান জেলা রেজিস্ট্রি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলো অত্যন্ত পুরাতন ও জরাজীর্ণ হয়ে যাওয়ায় এগুলোর বর্তমান নকশা ঠিক রেখে পর্যায়ক্রমে নির্মাণ করার পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, বরিশাল, খুলনা, রংপুর ও ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বিদ্যমান ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং আরও নয়টি (গোপালগঞ্জ, কক্সবাজার, বগুড়া, পাবনা, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, যশোর, নোয়াখালী) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নতুন ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার স্থাপন; চলমান ছয়টি ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেলের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং আরও সাতটি (ঠাকুরগাঁও, ভোলা, মানিকগঞ্জ, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, মৌলভীবাজার) জেলা সদর হাসপাতালে নতুন ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেল প্রতিষ্ঠা; ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি ও সাতটি বিভাগীয় মেডিক্যাল কলেজে বিদ্যমান রিজিওনাল ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরির কার্যক্রম অব্যহত রাখা এবং ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রিজিওনাল ডিএনএ স্ক্রিনিং ল্যাবরেটরি স্থাপন; মহিলা বিষয়ক অধিদফতর ভবনে বিদ্যমান ন্যাশনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টারের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা এবং নয়টি (ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, ফরিদপুর, ময়মনসিংহ) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নতুন রিজিওনাল ট্রমা কাউন্সেলিং সেন্টার স্থাপন; মহিলা বিষয়ক অধিদফতর ভবনে বিদ্যমান ন্যাশনাল হেল্পলাইন সেন্টারের কার্যক্রম শক্তিশালী করা; ন্যাশনাল সেন্টার অন ডেন্ডার বেইজড ভায়োলেন্সের কার্যক্রম পরিচালনা করা; জেন্ডার বেইজ ভায়োলেন্স বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা; জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, মনিটরিং, কস্টিং ও রিভিউ করার লক্ষ্যে নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম (চতুর্থ পর্ব ) প্রকল্পটি একনেক সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
একনেক সভায় অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো— শাহজালাল ফার্টিলাইজার প্রকল্প (এসএফপি) (দ্বিতীয় সংশোধিত)। এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ৪,৯৮৪ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি ৯৯৮ কোটি ৮৯ লাখ টাকা, প্রকল্প সাহায্য ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি ৮ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম শহরে পরিত্যক্ত বাড়িতে সরকারি আবাসিক ফ্ল্যাট ও ডরমিটরি ভবন নির্মাণ প্রকল্প। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৭৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর পুরোটাই জিওবি। দেশের বিভিন্ন জেলায় জেলায় জেলা রেজিস্ট্রি ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ভবন নির্মাণ (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ৩০৯ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, পুরোটাই জিওবি। আইসিটির মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার প্রচলন (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প। এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা, পুরোটাই জিওবি। নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রোগ্রাম (চতুর্থ পর্ব) প্রকল্প। এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১১৫ কোটি ৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি ৮৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ও প্রকল্প সাহায্য ২৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলায় হালদা নদীর উভয় তীরের ভাঙন থেকে বিভিন্ন এলাকা রক্ষাকল্পে তীর সংরক্ষণ কাজ প্রকল্প। এ প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ২১২ কোটি ৮ লাখ টাকা, পুরোটাই জিওবি। গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ (রাজশাহী জোন) প্রকল্প। এ প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪৩৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এর পুরোটাই জিওবি।
এসএস