সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ ।। ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
চিকিৎসকরা বছরে দুইবারের বেশি বিদেশ যেতে পারবেন না ঢাকা থেকে ভাঙ্গা হয়ে খুলনায় গেলো পরীক্ষামূলক ট্রেন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন প্রধান উপদেষ্টা: প্রেস উইং ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সাম্যের ভিত্তিতে সংবিধান রচনার আহ্বান নেপালে ফের কুরআন প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে সৌদি আগামীকাল সংবিধান সংস্কার কমিশনে প্রস্তাবনা পেশ করবে ইসলামী আন্দোলন ‘আল্লামা আতহার আলী রহ. জীবন, কর্ম, অবদান’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন আগামীকাল হাজী ইমদাদুল্লাহ মুহাজিরে মক্কী রহ. : কে এই মহান ব্যক্তি হাজিদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ : ধর্ম উপদেষ্টা মহানবীকে সা. নিয়ে কটূক্তি করলে সংবিধানে শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব পার্থের

‘এখন প্রয়োজন কালোত্তীর্ণ যোগ্যতার একদল আলিম যারা সমাজে বহুমুখী অবদান রাখতে পারবেন’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ আব্দুল মান্নান মিয়াজী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের প্রভাষক।পড়াশোনায় ছিলেন অদম্য মেধাবী। ফলাফলও ঈর্ষণীয়। ২০০০ সালের দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে মেধাতালিকায় ৭ম স্থান অর্জন করেন।

২০০২ সালে আলিম পরীক্ষায় বোর্ড বৃত্তি লাভ করেন। তারপর তুমুল প্রতিযোগিতার পর্ব পেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের ঠিকানা গড়ে নেন।২০১০ সালে অনার্সে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হন। এবং কলা অনুষদেও প্রথম হয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকের জন্য মনোনীত হন।

২০১১ সালে এম এ তে  তিন গ্রুপে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়ে সৈয়দ আবেদ আলী স্মারক স্বর্ণ পদক অর্জন করেন। এছাড়াও কিং সউদ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা করেন। ২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ঢাবির আরবী বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত আছেন।

অবসরে লেখালেখিও করেন। প্রকাশিত গবেষণামূলক প্রবন্ধ ৪ ও গ্রন্থ দুটি। দেশে আরবী ভাষার বিস্তারে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষদের নিয়ে গড়ে তুলেছেন মুআসসাতুল আরাবিয়্যাহ বাংলাদেশ লিল বুহুস ওয়াল মাআরিফ। ব্যক্তি জীবনেও তিনি সুখী, এক সন্তানের জনক।সরলতা আকীর্ণ এই বিদ্বান মানুষটির সাথে কথা হয় ঢাবির ক্যাম্পাসে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রোকন রাইয়ান ও আবু সাঈদ জোবায়ের

বাংলাদেশে ইসলাম এখন কোন অবস্থায় আছে?

বিষয়টি একটু ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। ব্যাক্তি পর্যায়ে দৃষ্টি দিলে দেখা যায় ভালই। কিন্তু সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইসলাম খুব ভাল নেই। এক কথায় বলা যায় ইসলাম বাংলাদেশে মাঝারি অবস্থানে আছে।

এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য কি করণীয়?

আসলে ইসলামের গোড়াপত্তন হয়েছে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি, মানুষ থেকে মানুষ, এভাবেই সাহাবীরা মহানবী (সা:) কে দেখে ইসলাম শিখেছেন এখন ঠিক এমন একজন সর্বোতভাবে অনুকরণীয় ব্যক্তির খুব অভাব একজন সংস্কারক হয়ত আমাদের এ অবস্থা থেকে উত্তরণ করতে পারেন।

এমন যোগ্য ব্যক্তি তৈরি না হওয়ার কারণ কী?

যুগের অবক্ষয় এর একটি কারণ। সময়ের চাহিদার পরিবর্তনও একটি বড় কারণ। এখন প্রয়োজন কালোত্তীর্ণ যোগ্যতার একদল আলিম। যারা সমাজে বহুমুখী অবদান রাখতে পারবেন। তবে আদর্শের জায়গায় আগের মত ব্যক্তি তৈরি না হলেও, এখন বহুমুখী প্রতিভা ও কাজের কিছু মানুষ দেখা যাচ্ছে। অনেকে মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেও আবার সাধারণ শিক্ষায়ও পড়াশোনা করে যাচ্ছেন। এমনটা আগে কম হত।

ধর্মীয় কাজের বিভিন্ন শাখার মাঝে সমন্বয়হীনতার কারন কী?

আসলে আমাদের মাঝে মাঝে দ্বীনের যে শাখায় যিনি কাজ করছেন, সে শাখাকেই তিনি দ্বীনি কাজের একমাত্র মাধ্যম মনে করছেন। যিনি মাদরাসায় পড়াচ্ছেন, তিনি একেই একমাত্র মাধ্যম মনে করছেন। যিনি তাবলীগ করছেন তিনি একেই একমাত্র মাধ্যম মনে করছেন। আসলে এই একমুখী প্রান্তিক চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। আমি নিজে যাই করি অন্যের কাজের স্বীকৃতি দিতে হবে।

আমাদের জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থায় যতুটুকু ইসলাম আছে, তা কি যথেষ্ট?

ইসলাম শিক্ষার একটি বড় উদ্দেশ্য হল বাস্তব জীবনে তার প্রতিফলন। আমাদের শিক্ষার্থীরা ইসলাম শিখছে আর দশটি বিষয়ের মতই। তাই এ বিষয়ে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াই তাদের মূল লক্ষ্য।বাস্তব জীবনে তার প্রতিফলন নিয়ে তারা খুব বেশী সচেতন নয়।

শিক্ষাব্যবস্থায় এধরনের জীবনমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা কি সম্ভব?

আসলে এবিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিই হল মূল।বিভিন্ন উপায়ে শিক্ষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।নৈতিকতা তো শুধু বইয়ের বিষয় নয়,জীবনে বাস্তবায়নের বিষয়। অনেক ধর্ম শিক্ষকের ব্যক্তি জীবনও দেখা যায় প্রশ্নবিদ্ধ। তাই শিক্ষদের মাধ্যমেই প্রথম সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

আচ্ছা আপনি তো ঢাবির আরবী বিভাগের শিক্ষক। আপনার বিভাগের শিক্ষার্থীরা দেশের আরবী বিষয়ক কাজের সাথে কতুটুকু সম্পৃক্ত?

আপনারা জানেন যে, আমাদের দেশে একাডেমিক শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের মাঝে অনেক সময় সমন্বয় থাকে না। যিনি একাডেমিক পড়াশোনা করেছেন একটি বিষয়ে, দেখা যায় কর্মক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ভিন্ন কাজ তিনি করে যাচ্ছেন। তাই আরবীতে পড়েও আমাদের শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ক্ষেত্রেই বেশী কাজ করেন।

আরবী ভাষা সাধারণ মানুষের আরো কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য আপনাদের কোন পদক্ষেপ আছে কি?

হ্যাঁ, এক্ষেত্রে বেশ কিছু পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। যেমন, ঢাবির শিক্ষক ইউসুফ স্যার দীর্ঘদিন এ বিষয়ে একটি টেলিভিশন প্রোগ্রাম করেছেন।এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের নিয়ে আমরা আরবী ভাষার প্রসারে একটি সংগঠন করেছি। নাম ‘মুআসসাতুল আরাবিয়া লিল বহুস ওয়াল মাআরিফ’।

সাধারণ মানুষের মাঝে দাওয়াত সংক্রান্ত কাজের সবচেয়ে কার্যকরী পন্থা কী?

মানুষের কাছে গিয়ে দাওয়াত দেয়াই সম্ভবত সবচেয়ে কার্যকরী। ইদানিং মিডিয়াও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে প্রাইমারি লেভেলে মানুষের কাছে গিয়ে দাওয়াতি কার্যক্রম চালানোই ভাল এবং অধিক ফলপ্রসূ।

সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাদের ও ধন্যবাদ।


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ