মুসা আল হাফিজ
কবি, কলামিস্ট ও গবেষক
ইতোমধ্যে বহু আতশকাচ দিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে, দেশি-বিদেশি বহু যাচাই অভিযান পরিচালিত হয়েছে, তাবড় তাবড় গোয়েন্দার রাতের ঘুম হারাম হয়েছে, কিন্তু কওমি মাদরাসায় সন্ত্রাসের ছায়ামাত্র মিলেনি। বহু মিডিয়াজীবির হম্বি-তম্বিকে মিথ্যা প্রমাণ করে, বহু গবেষকের থিসিসকে অবাস্তব বানিয়ে, বহু গলাবাজের হাকডাককে ভুয়া সাব্যস্ত করে কওমি মাদরাসা দেখিয়ে দিয়েছে সন্ত্রাসের লালন তো দূরে থাক, এর উচ্ছেদ ও মোকাবেলায় তার শিক্ষা ও চেতনা সমাজ ও রাষ্ট্রের বড় হাতিয়ার।
শান্তি-সম্প্রীতির সমাজ চান? তাহলে আসুন, যেখানে জীবনকে শান্তির, সম্প্রীতির, কল্যাণের, মহত্বের ও পবিত্রতার প্রতীক বানাবার শিক্ষা দেয়া হয়, সেই মাদরাসায় আপনাকে স্বাগতম। দিনে আসুন, আল্লাহ ও তার রাসুলের (সা) মহোত্তম বাণীর আলোয় অান্দোলিত এক উদ্যানে আসবেন। শুনবেন সেই সত্যের পাঠ, যা দেড় হাজার বছর ধরে শান্তি ও সম্প্রীতির সীমান্ত পাহারায় প্রেরণা দিচ্ছে পথনির্দেশ করছে।সন্ত্রাসকে তাড়িয়ে দিচ্ছে মানুষের মন ও জীবন থেকে। দেখবেন, শান্তি ও ভালোবাসায় নিবেদিত একদল শূভ্র মানুষ, অপরাধ থেকে মানব জীবনকে মুক্ত করার সাধনায় যারা জীবনপাত করেন। এদের বেতন দেয় না সরকার। এরা আল্লাহকে ভালোবেসে ভালোবাসে তার সৃষ্টিকে। একটি পিপিলিকার কষ্টের কারণ হতে চায় না ওরা।
কল্যাণ ছাড়া একটি গাছের পাতা ছেড়াকেও ওরা মনে করে অপরাধ! এখানে আসতে পারেন গভীর রাতে। শুনবেন কান্নার সুর। গভীর, গোপন কোনো রোদনের ধ্বণি। না, এখানে কেউ কাউকে আঘাত করছে না। কিন্তু যে কাঁদছে, সে আহত হয়েই কাঁদছে। সে আহত মানবতার দুঃখে, সে রোদন করছে পাপের বিস্তার দেখে, অশান্তির সয়লাব দেখে। সে অশ্রু ঝরাচ্ছে, কারণ সন্ত্রাসে সমাজদেহ জখমি। সে এই জখম দূর করতে চায়। পাপের তীব্রতায় জীবন হচ্ছে পাশবিক। সে একে মানবিক করতে চায়। ঘৃণা ও সংঘাত চারদিকে বিষের মতো ছড়াচ্ছে। সে চায় এর বদলে প্রেম ও কল্যাণ। সমাজের জখম সারাতে, জীবনকে মানবিক বানাতে, প্রেম ও কল্যাণে চারদিক সাজাতে সে এই গভীর রাতে অশ্রু ঝরাচ্ছে।
এখানে আসতে পারেন গভীর রাতে। শুনবেন কান্নার সুর। গভীর, গোপন কোনো রোদনের ধ্বণি। না, এখানে কেউ কাউকে আঘাত করছে না। কিন্তু যে কাঁদছে, সে আহত হয়েই কাঁদছে। সে আহত মানবতার দুঃখে
আওয়াজ হচ্ছে কম। কারণ সে চায় না, তার আওয়াজ কারো নিদ্রায় ব্যাঘাত ঘটাক। সে অশ্রুকে পাঠিয়ে দিচ্ছে আকাশের দিকে। দুজাহানের অধিপতির কাছে কামনা করছে করুণা। এ করুণা নামবে মানুষের মনে। মানুষ হয়ে উঠবে মহত্বের প্রতীক। জগত পরিণত হবে শান্তির উদ্যানে।
হ্যাঁ, মাদরাসায় এসবই চলমান। দিনে মানুষকে টানে সে আল্লাহর রহমতের দিকে। আর রাতে সে আল্লাহর রহমতকে আহবান করতে থাকে মানুষের দিকে। এখানে সন্ত্রাসের চাষ হয় না, প্রিয় পুলিশ, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবি ও রাজনীতিক! এখানে চাষ হয় সেই প্রেম, নৈতিকতা ও পবিত্র বিশ্বাসের, যার চাষের যোগ্য চাষী বানাতে পারছে না অক্সফোর্ড-ক্যামব্রিজ।
আরআর
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশে দূত পাঠাচ্ছে চীন
মুসা আল হাফিজ ও বাংলা কবিতার ‘পরম সাঁতার’