ইমদাদ ফয়েজী; সিলেট: মাদীনাতুল খাইরি আল ইসলামি এর উদ্যোগে ওসমানীনগর এর মিরারগাঁও এ মাওলানা আহমদ আলী রহ. স্মরণে গত রমজান মাসে একটি টিনশেড মসজিদ নির্মাণ করে দেয়া হয়। মাওলানা আহমদ আলি রহ. উপজেলা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস নেতা ছিলেন। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে ৬৩ শতক জায়গা মসজিদের জন্য ওয়াকফ করে দেয়া হয়।
মসজিদটির পাকাকরণ কাজ আগামী সপ্তাহে শুরু হবে। এ উপলক্ষে মাদীনাতুল খাইরির চেয়ারম্যান, ইকরা টিভি ইউকের অন্যতম আলোচক, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাজ্য সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা ফয়েজ আহমদ মসজিদস্থল পরিদর্শন করতে গেলে এলাকাবাসী তাঁকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
প্রসঙ্গত মাদীনাতুল খাইরি আল ইসলামি একটি শিক্ষা, চিকিৎসা, আর্তমানবতার সেবা ও বহুমুখী সমাজকল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠান।
২০০১ সাল থেকে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশ ও জাতির উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে যাচ্ছে। প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-
মসজিদ প্রকল্প: কুমিল্লার মুরাদপুরে একটি মনোরম, সুদৃশ্য মসজিদসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ১৫ টি মসজিদ ও মক্তব নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে। মাগুরা ও ঝিনাইদহে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রকল্প: এ প্রকল্পের মাধ্যমে সুনামগঞ্জের মিরপুরে ৩ কেদার জায়গা ক্রয় করে একটি মদীনাতুল উলূম মিরপুর মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। একই জেলার জগন্নাথপুর পৌরসভাধীন হবিবপুরে নিজস্ব জমির ওপর মদীনাতুল উলূম হবিবপুর নামে একটি হাফিজিয়া ও মাধ্যমিক মাদরাসা চালু করা রয়েছে। ঢাকা ও চট্রগামে দু'টি প্রতিষ্ঠান করার সিদ্ধান নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে চট্রগামে জায়গার ব্যবস্থা হয়ে গেছে।
কুরআন মাজীদ বিতরণ প্রকল্প: এ প্রকল্পের অধীনে নিজস্ব ছাপায় পঞ্চাশ হাজার কপি তাফসীরে ওসমানি ও তরজমায়ে শায়খুল হিন্দ বিভিন্ন দেশে বিতরণ করা হয়েছে। আগামি রমজানের আগে ইংরেজি এডিশন বিতরণ করা হবে।
পূন:র্বাসন প্রকল্প: এপ্রকল্পের মাধ্যমে আর্তপীড়িত অসহায় মানুষকে গৃহ নির্মাণ করে দেয়া হয়। নির্মম নির্যাতনে মৃত্যুবরণকারী শিশু রাজনের পরিবারকে গত বছর প্রায় ১০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে শহরতলীতে বাড়ি নির্মাণ করে দেয়া হয়।
অসহায়-অনাথ মেয়েদের বিবাহ: প্রতিবছর এ প্রকল্পের মাধ্যমে কিছুসংখ্যক অনাথ মেয়েকে শাদি দেয়া হয়। কিছুদিন আগে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ৬ জন এতিম মেয়েকে ১০ হাজার মানুষের উপস্থিতিতে (আপ্যায়নসহ) বিয়ে দেয়া হয়।
চক্ষুশিবির: প্রতিবছর দরিদ্র রোগীদেরকে বিনামূল্যে চোখের চিকিৎসা দেয়া হয়। এবছর জগন্নাথপুরের হবিবপুর ও মৌলভীবাজারের বরুণায় শতাধিক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অপারেশন করা হয়েছে ৬০ জনের।
কবরস্থান নির্মাণ: সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ৫ কেদার জায়গা ক্রয় করে ১১ ফিট উঁচু গার্ডওয়াল দিয়ে মাটি ভরাট করে কবরস্থান তৈরি করে দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য এ উপজেলাটি ভাটি এলাকা হওয়ায় বর্ষাকালে মৃতকে দাফন করা বেশ দূঃসাধ্য ছিল।
টিওবওয়েল স্থাপন: বিশুদ্ধ পানি পান নিশ্চিতকরণে প্রতিবছর দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মাঝে প্রায় ১০০ টিওবওয়েল স্থাপন করে দেয়া হয়।
শীতবস্ত্র বিতরণ: প্রতিবছর নিঃস্ব, আর্তপীড়িতদের মাঝে প্রায় ৮-১০ হাজার কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়।
কুরবানি: এপ্রকল্পের মাধ্যমে গত ঈদুল আযহায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ১১৯ টি গরু ও শতাধিক ছাগল কুরবানি দেয়া হয়।
খতনা ক্যাম্প: এ প্রকল্পের অধীনে প্রতিবছর দরিদ্র শিশুদের খতনা সেবা প্রদান করা হয়।
অসহায় নারীদের কর্মসংস্থান: অসহায় নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় একটি গার্মেন্টস নির্মাণ করা হচ্ছে।
নির্মাণ কাজ শেষ হলে এলাকার অসহায় মহিলাদের কাজের সুযোগ দেয়া হবে।
এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি জন্মলগ্ন থেকে আর্থিক অনুদান প্রদানসহ সময়ে সময়ে বিভিন্ন সমাজ ও জনকল্যাণমূলক কাজ করে যাচ্ছে।
আরআর