আওয়ার ইসলাম : মাছে-ভাতে বাঙালি। ভেতো বাঙালি বলেও দুর্নাম আছে আমাদের। তবুও ভাত ছাড়া জীবন কল্পনা করতে পারি না। ভাত রান্নার পদ্ধতিও সহজ। কিন্তু পদ্ধতিগত একটু ভুলের কারণেই বিপদ ডেকে আনছি আমরা। চালটা সামান্য ধুয়ে ফুটিয়ে নিলেন। পাতে পড়ল ধবধবে সাদা গরম ভাত। ভাবছেন এই না হলে ভাত! কিন্তু এই ভাতে রয়েছে বিপদ। বেলফাস্টের কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
কীটনাশক ও কলকারখানার বর্জ্যের কারণে যে কোনও শস্যের মধ্যেই কিছুটা আর্সেনিক জমা হয়। কিন্তু ধানের চাষ যেহেতু জমা জলে হয়, ফলে অন্যান্য শস্যের চেয়ে ধানে আর্সেনিকের পরিমাণ ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি।
চালে যে পরিমাণ আর্সেনিক থাকে, তা থেকে ক্যানসার, ডায়াবেটিস ও হৃদরোগের সম্ভাবনা বেশ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয়। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে বিপদের ঝুঁকি কিছুটা কম হলেও, চিন্তা বাচ্চাদের নিয়ে। কারণ, শিশুদের শরীরে আর্সেনিকের পরিমাণ বেশি হলে তা বুদ্ধিতে প্রভাব ফেলে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, বুদ্ধির বিকাশ ব্যাহত হয়। শুধু চাল বা ভাত নয়, চালের তৈরি যে কোনও শিশুখাদ্যেই রয়েছে আর্সেনিকের বিপদ।
এই বিপদ থেকে রক্ষার উপায় কী? গবেষকরা বলছেন, ভাত রান্নার পদ্ধতিটা একটু বদলে নিতে হবে। ৫ গুণ পানিতে রাতভর চাল ভিজিয়ে রাখার পর রান্না করলে রাসায়নিক, টক্সিন ও আর্সেনিকের মাত্রা প্রায় ৮০ শতাংশ কমে যায়। সকালে পানি পরিষ্কার না দেখা পর্যন্ত ওই চাল ভালভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। চাল থেকে পানি ভালভাবে নিংড়ে নিতে হবে।
ওই চালের সঙ্গে কিছুটা লবন মিশিয়ে নিতে হবে। পাত্রে চালের ৫ গুণ পানি ফুটিয়ে তার মধ্যে চাল দিতে হবে। পাত্রে ঢাকনা ছাড়া সর্বনিম্ন তাপে ১০-১৫ মিনিট রান্না করতে হবে। সেই ভাত নরম হাতা দিয়ে তুলে অন্য পাত্রে রাখতে হবে। তাহলেই আর্সেনিক থেকে মুক্তি মিলবে বলে দাবি গবেষকদের।
-এআরকে