দিদার শফিক : ৩১ ডিসেম্বর রাতে শুরু হয় বর্ষবিদায় ও বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’। উল্লাসে মেতে ওঠে তরুণ-তরুণী। শুরু হয় গানবাদ্য। সম্প্রতিকালে ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ বিদেশি কালচার হয়েও দেশজ কালচারের স্থান করে নিয়েছে। যেখানে অবাধে চলে অশৃঙ্খলতা, মদ ও জুয়ারি পার্টি। পটকা ও আতশবাজিসহ নানা রকম বস্তুর আওয়াজে ভারি হয় শহর। সরকারিভাবে নিষিদ্ধ হলেও অবাধেই চলে ্এসব কর্ম। অতীতে থার্টি ফ্রাস্ট নাইটের অনুষ্ঠানের নারী ধর্ষণসহ অসংখ্য যৌন হয়রানির ঘটনা পত্রিকায় আলোড়ন তুলেছেন।
থার্টি ফাস্ট নাইট সম্পর্কে ইসলাম কী বলে? এই সংস্কৃতি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কতটা উপযুক্ত এসব বিষয়ে কথা হয় বিশিষ্ট আলেমে দীন, জামেয়া ইসলামিয়া ইসলামবাগের সিনিয়র মুহাদ্দিস ও প্রধান মুফতি, মুফতি বশিরুল হাসানের সঙ্গে।
মুফতি বশিরুল হাসান বলেন, থার্টি ফাস্ট নাইট ইসলামে নিষিদ্ধ। এর মাধ্যমে যুব সমাজে অশ্লীলতার সয়লাব ঘটে। নারীর শ্লীলতাহানীর মতো দু:খজনক ঘটনাগুলোর বিস্তার লাভ করে। নৈতিক পতন, অনৈসলামিক কার্যকলাপ ও আর্থিক অপচয় এর সাথে জড়িত। তাই এটা মুসলমানের সংস্কৃতি হতে পারে না। ইসলামে এর কোন ভিত্তি নেই। বছর শেষে ফূর্তি-মাস্তিতে মত্ত থেকে থার্টি ফাস্ট নাইট উদযাপন নয়, বরং জীবনের হালখাতা মেলে ধরে নীরবে-নিভৃতে নিজের কাছে নিজের কৃতকর্মের হিসাব পেশ করা জরুরি।
জীবন থেকে হারিয়ে ফেলা একটি বছরের শেষ মুহূতে একজন মানুষের করণীয় সম্পর্কে তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের হালখাতা আছে, মিডিয়ার সালতামামি আছে। তেমনি একজন আল্লাহর বান্দারও সালতামামি-হালখাতা আছে। আছে হিসাব-নিকাশ। দীর্ঘ এক বছরের অতীত জীবন ফিরে দেখা বর্ষ শেষে একজন মানুষের দায়িত্ব এবং এটাই তার অনুভূতি হওয়া চাই। ফেলে আসা একটি বছরে চোখ ফিরিয়ে সফলতার অধ্যায়গুলোর জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। আর মানবিক ভুলগুলোর জন্য ইস্তিগফার করা। নাচ-গান, ডিজে পার্টি, পটকা, আতশবাজির উৎসবের মধ্যদিয়ে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় সংস্কৃতি পরিত্যাজ্য। এ সংস্কৃতি অনেক পাপের পথ উন্মোচন করে।
ফেলে আসা একটি বছরে চোখ ফিরিয়ে সফলতার অধ্যায়গুলোর জন্য আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা। আর মানবিক ভুলগুলোর জন্য ইস্তিগফার করা। নাচ-গান, ডিজে পার্টি, পটকা, আতশবাজির উৎসবের মধ্যদিয়ে বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায় সংস্কৃতি পরিত্যাজ্য। এ সংস্কৃতি অনেক পাপের পথ উন্মোচন করে।
থার্টি ফাস্ট নাইট বা নানান দিবস পালন সমাজে কী প্রভাব ফেলে জানতে চাইলে মুফতি বশিরুল হাসান বলেন, ইতিবাচক প্রভাববিস্তারের জন্য দিবস পালনের ইতিহাস ইসলামে আছে। মদিনায় হিজরতের পর নবি সা. ইহুদিদের দিবস পালন করতে দেখে মুসলমানদের জন্য ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের উৎসব এর প্রবর্তন করেন। আর এর উদ্দেশ্য বান্দাকে আল্লাহমুখী করা। বর্তমানের থার্টি ফাস্ট নাইট বা অন্য কোন দিবস পালন কি উৎসব পালনকারীদের আল্লাহমুখী করে, না আল্লাহবিমুখ করে? সমাজের হালচিত্র বিচার-বিশ্লেষণে দেখা যায়, দিবস পালন বান্দাকে আল্লাহবিমুখই করছে। এমন দিবস পালনের অনুমোদন নেই ইসলামে।
আরআর