আংকারায় রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কারলভের হত্যাকারীকে জীবিত আটক না করে কেন গুলি করে হত্যা করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তুরস্কের প্রসিকিউটররা
সোমবার আংকারার একটি আর্ট গ্যালারিতে বক্তৃতাকালে রাষ্ট্রদূত কারলভকে গুলি করে হত্যা করে তুর্কি দাঙ্গা পুলিশের সদস্য মেভলুত মের্ত আলতিনতাস। এরপর সেখানে কিছুক্ষণের মধ্যে অভিযান চালিয়ে মেভলুতকে হত্যা করে তুর্কি বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা।
তুরস্কের রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা আনাদুলু জানিয়েছে, বিশেষ বাহিনীর সদস্যরা কেন গ্যালারিতে ঝড়েরবেগে অভিযান চালিয়ে মেভলুতকে জীবিত না ধরে হত্যা করেছে তা তদন্ত করে দেখছেন প্রসিকিউটররা।
আনাদুলুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে মেভলুত পুলিশ কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে গুরি ছুড়ছিল এবং চিৎকার করছিল, 'আমাকে জীবিত ধরতে পারবে না'। তখন পুলিশ মেভলুতের পায়ে গুলি করলেও তিনি মাটিতে শুয়ে পড়ে পাল্টা গুলি ছুড়তে থাকেন।
অভিযানে থাকা পুলিশের সাফাই বক্তব্য সমর্থন করেছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেফ তাইয়িপ এরদোগান।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তাকে (মেভলুত) কেন জীবিত ধরা হয়নি তা নিয়ে কিছুটা জল্পনা শুরু হয়েছে। কিন্তু খেয়াল করে দেখুন বেসিকটাসে হামলাকারীদের জীবিত ধরার চেষ্টা করায় কী ঘটেছিল।
গত ১০ ডিসেম্বর ইস্তাম্বুলের বেসিকটাস স্টেডিয়ামে একটি গাড়ি বোমা ও একটি আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়। এতে ২৯ জন নিহত ও ১৬৬ জন আহত হয়। হামলাকারীদের জীবিত ধরতে চেষ্টা করলে সেখানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তুমুল গুলি বিনিময় হয়। রাষ্ট্রদূতের হত্যাকারীকে জীবিত না ধরার বিষয়ে বেসিকটাসের ঘটনা স্মরণ করেন এরদোগান।
রাষ্ট্রদূত হত্যার ঘটনায় নিহত মেভলুতের বাবা-মা, বোন, তিন স্বজন এবং তার রুমমেটসহ ১১ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আনাদুলু।
তবে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে।
আনাদুলু বলছে, রাষ্ট্রদূত কারলভ সম্পর্কে রুশ দূতবাসের ভেতর থেকে কেউ মেভলুতকে তথ্য সরবরাহ করেছে কিনা তাও নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে তদন্তকারীরা।
প্রেসিডেন্ট এরদোগান সাংবাদিকদের বলেছেন, তুর্কি গোয়েন্দা সংস্থা মেভলুতের সম্ভাব্য বিদেশী সম্পৃক্ততার বিষয়টি খতিয়ে দেখেছে। তারা নির্দিষ্ট ক্লু পেয়েছে যাতে বিদেশী সংযোগের ইঙ্গিত মিলেছে। তবে প্রেসিডেন্ট এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি।
এদিকে তুর্কি উপ-প্রধানমন্ত্রী নুমান কুরতুলমুস রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন টিআরটিকে বলেন, রাষ্ট্রদূতকে হামলাকারী একাই এ ঘটনা ঘটেছেন বলে তারা বিশ্বাস করেন না।
তিনি বলেন, এটি কোনো একক ব্যক্তির সাধারণ হামলা নয়। এখানে ঘটনার নেপথ্যে তার (মেভলুত) পেছনে আরও কিছু মানুষ রয়েছে, যারা তাকে দিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে এবং তারা এর থেকে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়।
কুরতুলমুস বলেন, যারা এই ঘটনার পেছনে রয়েছে তারা তুর্কি-রুশ সম্পর্ক অপূরণীয়ভাবে ক্ষতি করতে চায়, কিন্তু তারা সফল হবে না।